কুরআনি ভাবনা
|| গোছালো জীবন ||মানুষের জীবন খুব একটা গোছালো থাকে না। জীবনকে খুব সুন্দর করে গুছিয়ে নিতে হয়। অগোছালো জীবন কখনো উন্নতির সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠতে পারে না। ফলে অগোছালো জীবন উন্নতির ছোঁয়া কখনোই পেতে পারে না। কখনো-বা মনে বল নিয়ে বুকে হিম্মত রেখে উন্নতির সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠতে গেলে পিচ্ছিল খেয়ে মুখ থুবড়ে পড়তে হয় মাটিতে, হারিয়ে ফেলতে হয় অবশিষ্ট জিইয়ে রাখা হিম্মতটুকু।.তালাক শব্দটি শুনতেই গা কেমন ছমছম করে ওঠে। তিন অক্ষরের ছোট্ট এই শব্দটি মানুষের বহুদিনের গোছালো সংসারকে নিমিষেই অগোছালো করে দেয়। পবিত্র কুরআনে তালাকের আলোচনা অনেক স্থানেই স্থান পেয়েছে। তালাক নিয়ে তো স্বতন্ত্র একটি সূরাও আছে। যাহোক সূরা বাকারায় অন্যান্য বিধি-বিধানের সাথে ২২৮ নম্বর আয়াত থেকে ২৪১ নম্বর আয়াত পর্যন্ত মোট ১৪ টি আয়াতে তালাকের বিধি-বিধান সম্পর্কে আলোচনা হয়েছে।.অবাক করা বিষয় হলো, ১৪ টি আয়াতে তালাকের আলোচনা করতে করতে মাঝখানে এসে ২৩৮ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তাআলা নামায নিয়ে আলোচনা করেছেন। নামাযের প্রতি যত্নবান হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন—حفِظُوا عَلَى الصَّلَوتِ والصلوة الوسطى وقوموا الله فبين.তোমরা সালাতের প্রতি যত্নবান হও, বিশেষ করে মধ্যবর্তী সলাতের প্রতি এবং আল্লাহর সামনে বিনীতভাবে দণ্ডায়মান হও। [সূরা বাকারা, আয়াত : 238].নামাযের প্রতি যত্নবান হওয়ার নির্দেশ দেওয়ার পর পুনরায় তালাকের অবশিষ্ট আলোচনার ইতি টানেন।.প্রশ্ন থেকে যায়, তালাকের আয়াতগুলোর মধ্যখানে নামাযের প্রতি যত্নবান হওয়ার নির্দেশ দেওয়ার রহস্য কী হতে পারে! এমন উত্থিত প্রশ্নের উত্তরে বলা যেতে পারে যে, স্বামী-স্ত্রীর মাঝে তালাক হলে যেমন তাদের বহুদিনের গোছালো সংসার নিমিষেই অগোছালো হয়ে যায়। নিষ্পাপ সন্তানগুলোর জীবন জীবনের ঊষালগ্নেই তছনছ হয়ে যায়; তেমনই মানুষের মাঝে নামাযের গুরুত্ব না থাকলে, নামাযের প্রতি যত্নবান না হলে, গোছালো জীবন অগোছালো হয়ে যায়। আর যদি তা হয় অগোছালো তাহলে আরও অগোছালো হয়ে যায়। তাই জীবনকে গুছিয়ে নিতে নামাযের প্রতি যত্নবান হওয়ার কোনো বিকল্প নেই।.প্রিয় পাঠক, আপনি জেনে আরও অবাক হবেন যে, যখন পৃথিবীতে সূর্যগ্রহণ, চন্দ্রগ্রহণ ও অনাবৃষ্টি হয়, তখন গোছালো পৃথিবী নিমিষেই অগোছালো হয়ে পড়ে; সেই অগোছালো পৃথিবীকে গুছিয়ে নিতে ইসলাম আমাদের নামায পড়ার আদেশ করে। ফলে নামায অগোছালো পৃথিবীকে সুন্দর করে গুছিয়ে দেয়। যখন নামায পৃথিবীর জটিল থেকে জটিল বিষয়াবলি গুছিয়ে দিতে পারে, তাহলে কি নামায় পারে না— মনুষ্য জীবনকে গুছিয়ে দিতে? অবশ্যই পারে। তবে আজ থেকে আর নামায কাযা কেন?বইঃ কুরআনি ভাবনালেখকঃ মাওলানা মাহদী হাসানপ্রকাশনায়ঃ দারুত তিবইয়ান
An Najahah Shop
Category List
All products

|| গোছালো জীবন ||
মানুষের জীবন খুব একটা গোছালো থাকে না। জীবনকে খুব সুন্দর করে গুছিয়ে নিতে হয়। অগোছালো জীবন কখনো উন্নতির সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠতে পারে না। ফলে অগোছালো জীবন উন্নতির ছোঁয়া কখনোই পেতে পারে না। কখনো-বা মনে বল নিয়ে বুকে হিম্মত রেখে উন্নতির সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠতে গেলে পিচ্ছিল খেয়ে মুখ থুবড়ে পড়তে হয় মাটিতে, হারিয়ে ফেলতে হয় অবশিষ্ট জিইয়ে রাখা হিম্মতটুকু।
.
তালাক শব্দটি শুনতেই গা কেমন ছমছম করে ওঠে। তিন অক্ষরের ছোট্ট এই শব্দটি মানুষের বহুদিনের গোছালো সংসারকে নিমিষেই অগোছালো করে দেয়। পবিত্র কুরআনে তালাকের আলোচনা অনেক স্থানেই স্থান পেয়েছে। তালাক নিয়ে তো স্বতন্ত্র একটি সূরাও আছে। যাহোক সূরা বাকারায় অন্যান্য বিধি-বিধানের সাথে ২২৮ নম্বর আয়াত থেকে ২৪১ নম্বর আয়াত পর্যন্ত মোট ১৪ টি আয়াতে তালাকের বিধি-বিধান সম্পর্কে আলোচনা হয়েছে।
.
অবাক করা বিষয় হলো, ১৪ টি আয়াতে তালাকের আলোচনা করতে করতে মাঝখানে এসে ২৩৮ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তাআলা নামায নিয়ে আলোচনা করেছেন। নামাযের প্রতি যত্নবান হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন—
حفِظُوا عَلَى الصَّلَوتِ والصلوة الوسطى وقوموا الله فبين.
তোমরা সালাতের প্রতি যত্নবান হও, বিশেষ করে মধ্যবর্তী সলাতের প্রতি এবং আল্লাহর সামনে বিনীতভাবে দণ্ডায়মান হও। [সূরা বাকারা, আয়াত : 238]
.
নামাযের প্রতি যত্নবান হওয়ার নির্দেশ দেওয়ার পর পুনরায় তালাকের অবশিষ্ট আলোচনার ইতি টানেন।
.
প্রশ্ন থেকে যায়, তালাকের আয়াতগুলোর মধ্যখানে নামাযের প্রতি যত্নবান হওয়ার নির্দেশ দেওয়ার রহস্য কী হতে পারে! এমন উত্থিত প্রশ্নের উত্তরে বলা যেতে পারে যে, স্বামী-স্ত্রীর মাঝে তালাক হলে যেমন তাদের বহুদিনের গোছালো সংসার নিমিষেই অগোছালো হয়ে যায়। নিষ্পাপ সন্তানগুলোর জীবন জীবনের ঊষালগ্নেই তছনছ হয়ে যায়; তেমনই মানুষের মাঝে নামাযের গুরুত্ব না থাকলে, নামাযের প্রতি যত্নবান না হলে, গোছালো জীবন অগোছালো হয়ে যায়। আর যদি তা হয় অগোছালো তাহলে আরও অগোছালো হয়ে যায়। তাই জীবনকে গুছিয়ে নিতে নামাযের প্রতি যত্নবান হওয়ার কোনো বিকল্প নেই।
.
প্রিয় পাঠক, আপনি জেনে আরও অবাক হবেন যে, যখন পৃথিবীতে সূর্যগ্রহণ, চন্দ্রগ্রহণ ও অনাবৃষ্টি হয়, তখন গোছালো পৃথিবী নিমিষেই অগোছালো হয়ে পড়ে; সেই অগোছালো পৃথিবীকে গুছিয়ে নিতে ইসলাম আমাদের নামায পড়ার আদেশ করে। ফলে নামায অগোছালো পৃথিবীকে সুন্দর করে গুছিয়ে দেয়। যখন নামায পৃথিবীর জটিল থেকে জটিল বিষয়াবলি গুছিয়ে দিতে পারে, তাহলে কি নামায় পারে না— মনুষ্য জীবনকে গুছিয়ে দিতে? অবশ্যই পারে। তবে আজ থেকে আর নামায কাযা কেন?
বইঃ কুরআনি ভাবনা
লেখকঃ মাওলানা মাহদী হাসান
প্রকাশনায়ঃ দারুত তিবইয়ান
মানুষের জীবন খুব একটা গোছালো থাকে না। জীবনকে খুব সুন্দর করে গুছিয়ে নিতে হয়। অগোছালো জীবন কখনো উন্নতির সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠতে পারে না। ফলে অগোছালো জীবন উন্নতির ছোঁয়া কখনোই পেতে পারে না। কখনো-বা মনে বল নিয়ে বুকে হিম্মত রেখে উন্নতির সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠতে গেলে পিচ্ছিল খেয়ে মুখ থুবড়ে পড়তে হয় মাটিতে, হারিয়ে ফেলতে হয় অবশিষ্ট জিইয়ে রাখা হিম্মতটুকু।
.
তালাক শব্দটি শুনতেই গা কেমন ছমছম করে ওঠে। তিন অক্ষরের ছোট্ট এই শব্দটি মানুষের বহুদিনের গোছালো সংসারকে নিমিষেই অগোছালো করে দেয়। পবিত্র কুরআনে তালাকের আলোচনা অনেক স্থানেই স্থান পেয়েছে। তালাক নিয়ে তো স্বতন্ত্র একটি সূরাও আছে। যাহোক সূরা বাকারায় অন্যান্য বিধি-বিধানের সাথে ২২৮ নম্বর আয়াত থেকে ২৪১ নম্বর আয়াত পর্যন্ত মোট ১৪ টি আয়াতে তালাকের বিধি-বিধান সম্পর্কে আলোচনা হয়েছে।
.
অবাক করা বিষয় হলো, ১৪ টি আয়াতে তালাকের আলোচনা করতে করতে মাঝখানে এসে ২৩৮ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তাআলা নামায নিয়ে আলোচনা করেছেন। নামাযের প্রতি যত্নবান হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন—
حفِظُوا عَلَى الصَّلَوتِ والصلوة الوسطى وقوموا الله فبين.
তোমরা সালাতের প্রতি যত্নবান হও, বিশেষ করে মধ্যবর্তী সলাতের প্রতি এবং আল্লাহর সামনে বিনীতভাবে দণ্ডায়মান হও। [সূরা বাকারা, আয়াত : 238]
.
নামাযের প্রতি যত্নবান হওয়ার নির্দেশ দেওয়ার পর পুনরায় তালাকের অবশিষ্ট আলোচনার ইতি টানেন।
.
প্রশ্ন থেকে যায়, তালাকের আয়াতগুলোর মধ্যখানে নামাযের প্রতি যত্নবান হওয়ার নির্দেশ দেওয়ার রহস্য কী হতে পারে! এমন উত্থিত প্রশ্নের উত্তরে বলা যেতে পারে যে, স্বামী-স্ত্রীর মাঝে তালাক হলে যেমন তাদের বহুদিনের গোছালো সংসার নিমিষেই অগোছালো হয়ে যায়। নিষ্পাপ সন্তানগুলোর জীবন জীবনের ঊষালগ্নেই তছনছ হয়ে যায়; তেমনই মানুষের মাঝে নামাযের গুরুত্ব না থাকলে, নামাযের প্রতি যত্নবান না হলে, গোছালো জীবন অগোছালো হয়ে যায়। আর যদি তা হয় অগোছালো তাহলে আরও অগোছালো হয়ে যায়। তাই জীবনকে গুছিয়ে নিতে নামাযের প্রতি যত্নবান হওয়ার কোনো বিকল্প নেই।
.
প্রিয় পাঠক, আপনি জেনে আরও অবাক হবেন যে, যখন পৃথিবীতে সূর্যগ্রহণ, চন্দ্রগ্রহণ ও অনাবৃষ্টি হয়, তখন গোছালো পৃথিবী নিমিষেই অগোছালো হয়ে পড়ে; সেই অগোছালো পৃথিবীকে গুছিয়ে নিতে ইসলাম আমাদের নামায পড়ার আদেশ করে। ফলে নামায অগোছালো পৃথিবীকে সুন্দর করে গুছিয়ে দেয়। যখন নামায পৃথিবীর জটিল থেকে জটিল বিষয়াবলি গুছিয়ে দিতে পারে, তাহলে কি নামায় পারে না— মনুষ্য জীবনকে গুছিয়ে দিতে? অবশ্যই পারে। তবে আজ থেকে আর নামায কাযা কেন?
বইঃ কুরআনি ভাবনা
লেখকঃ মাওলানা মাহদী হাসান
প্রকাশনায়ঃ দারুত তিবইয়ান
কুরআনি ভাবনা
140 BDT240 BDTSave 100 BDT
|| গোছালো জীবন ||
মানুষের জীবন খুব একটা গোছালো থাকে না। জীবনকে খুব সুন্দর করে গুছিয়ে নিতে হয়। অগোছালো জীবন কখনো উন্নতির সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠতে পারে না। ফলে অগোছালো জীবন উন্নতির ছোঁয়া কখনোই পেতে পারে না। কখনো-বা মনে বল নিয়ে বুকে হিম্মত রেখে উন্নতির সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠতে গেলে পিচ্ছিল খেয়ে মুখ থুবড়ে পড়তে হয় মাটিতে, হারিয়ে ফেলতে হয় অবশিষ্ট জিইয়ে রাখা হিম্মতটুকু।
.
তালাক শব্দটি শুনতেই গা কেমন ছমছম করে ওঠে। তিন অক্ষরের ছোট্ট এই শব্দটি মানুষের বহুদিনের গোছালো সংসারকে নিমিষেই অগোছালো করে দেয়। পবিত্র কুরআনে তালাকের আলোচনা অনেক স্থানেই স্থান পেয়েছে। তালাক নিয়ে তো স্বতন্ত্র একটি সূরাও আছে। যাহোক সূরা বাকারায় অন্যান্য বিধি-বিধানের সাথে ২২৮ নম্বর আয়াত থেকে ২৪১ নম্বর আয়াত পর্যন্ত মোট ১৪ টি আয়াতে তালাকের বিধি-বিধান সম্পর্কে আলোচনা হয়েছে।
.
অবাক করা বিষয় হলো, ১৪ টি আয়াতে তালাকের আলোচনা করতে করতে মাঝখানে এসে ২৩৮ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তাআলা নামায নিয়ে আলোচনা করেছেন। নামাযের প্রতি যত্নবান হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন—
حفِظُوا عَلَى الصَّلَوتِ والصلوة الوسطى وقوموا الله فبين.
তোমরা সালাতের প্রতি যত্নবান হও, বিশেষ করে মধ্যবর্তী সলাতের প্রতি এবং আল্লাহর সামনে বিনীতভাবে দণ্ডায়মান হও। [সূরা বাকারা, আয়াত : 238]
.
নামাযের প্রতি যত্নবান হওয়ার নির্দেশ দেওয়ার পর পুনরায় তালাকের অবশিষ্ট আলোচনার ইতি টানেন।
.
প্রশ্ন থেকে যায়, তালাকের আয়াতগুলোর মধ্যখানে নামাযের প্রতি যত্নবান হওয়ার নির্দেশ দেওয়ার রহস্য কী হতে পারে! এমন উত্থিত প্রশ্নের উত্তরে বলা যেতে পারে যে, স্বামী-স্ত্রীর মাঝে তালাক হলে যেমন তাদের বহুদিনের গোছালো সংসার নিমিষেই অগোছালো হয়ে যায়। নিষ্পাপ সন্তানগুলোর জীবন জীবনের ঊষালগ্নেই তছনছ হয়ে যায়; তেমনই মানুষের মাঝে নামাযের গুরুত্ব না থাকলে, নামাযের প্রতি যত্নবান না হলে, গোছালো জীবন অগোছালো হয়ে যায়। আর যদি তা হয় অগোছালো তাহলে আরও অগোছালো হয়ে যায়। তাই জীবনকে গুছিয়ে নিতে নামাযের প্রতি যত্নবান হওয়ার কোনো বিকল্প নেই।
.
প্রিয় পাঠক, আপনি জেনে আরও অবাক হবেন যে, যখন পৃথিবীতে সূর্যগ্রহণ, চন্দ্রগ্রহণ ও অনাবৃষ্টি হয়, তখন গোছালো পৃথিবী নিমিষেই অগোছালো হয়ে পড়ে; সেই অগোছালো পৃথিবীকে গুছিয়ে নিতে ইসলাম আমাদের নামায পড়ার আদেশ করে। ফলে নামায অগোছালো পৃথিবীকে সুন্দর করে গুছিয়ে দেয়। যখন নামায পৃথিবীর জটিল থেকে জটিল বিষয়াবলি গুছিয়ে দিতে পারে, তাহলে কি নামায় পারে না— মনুষ্য জীবনকে গুছিয়ে দিতে? অবশ্যই পারে। তবে আজ থেকে আর নামায কাযা কেন?
বইঃ কুরআনি ভাবনা
লেখকঃ মাওলানা মাহদী হাসান
প্রকাশনায়ঃ দারুত তিবইয়ান
মানুষের জীবন খুব একটা গোছালো থাকে না। জীবনকে খুব সুন্দর করে গুছিয়ে নিতে হয়। অগোছালো জীবন কখনো উন্নতির সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠতে পারে না। ফলে অগোছালো জীবন উন্নতির ছোঁয়া কখনোই পেতে পারে না। কখনো-বা মনে বল নিয়ে বুকে হিম্মত রেখে উন্নতির সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠতে গেলে পিচ্ছিল খেয়ে মুখ থুবড়ে পড়তে হয় মাটিতে, হারিয়ে ফেলতে হয় অবশিষ্ট জিইয়ে রাখা হিম্মতটুকু।
.
তালাক শব্দটি শুনতেই গা কেমন ছমছম করে ওঠে। তিন অক্ষরের ছোট্ট এই শব্দটি মানুষের বহুদিনের গোছালো সংসারকে নিমিষেই অগোছালো করে দেয়। পবিত্র কুরআনে তালাকের আলোচনা অনেক স্থানেই স্থান পেয়েছে। তালাক নিয়ে তো স্বতন্ত্র একটি সূরাও আছে। যাহোক সূরা বাকারায় অন্যান্য বিধি-বিধানের সাথে ২২৮ নম্বর আয়াত থেকে ২৪১ নম্বর আয়াত পর্যন্ত মোট ১৪ টি আয়াতে তালাকের বিধি-বিধান সম্পর্কে আলোচনা হয়েছে।
.
অবাক করা বিষয় হলো, ১৪ টি আয়াতে তালাকের আলোচনা করতে করতে মাঝখানে এসে ২৩৮ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তাআলা নামায নিয়ে আলোচনা করেছেন। নামাযের প্রতি যত্নবান হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন—
حفِظُوا عَلَى الصَّلَوتِ والصلوة الوسطى وقوموا الله فبين.
তোমরা সালাতের প্রতি যত্নবান হও, বিশেষ করে মধ্যবর্তী সলাতের প্রতি এবং আল্লাহর সামনে বিনীতভাবে দণ্ডায়মান হও। [সূরা বাকারা, আয়াত : 238]
.
নামাযের প্রতি যত্নবান হওয়ার নির্দেশ দেওয়ার পর পুনরায় তালাকের অবশিষ্ট আলোচনার ইতি টানেন।
.
প্রশ্ন থেকে যায়, তালাকের আয়াতগুলোর মধ্যখানে নামাযের প্রতি যত্নবান হওয়ার নির্দেশ দেওয়ার রহস্য কী হতে পারে! এমন উত্থিত প্রশ্নের উত্তরে বলা যেতে পারে যে, স্বামী-স্ত্রীর মাঝে তালাক হলে যেমন তাদের বহুদিনের গোছালো সংসার নিমিষেই অগোছালো হয়ে যায়। নিষ্পাপ সন্তানগুলোর জীবন জীবনের ঊষালগ্নেই তছনছ হয়ে যায়; তেমনই মানুষের মাঝে নামাযের গুরুত্ব না থাকলে, নামাযের প্রতি যত্নবান না হলে, গোছালো জীবন অগোছালো হয়ে যায়। আর যদি তা হয় অগোছালো তাহলে আরও অগোছালো হয়ে যায়। তাই জীবনকে গুছিয়ে নিতে নামাযের প্রতি যত্নবান হওয়ার কোনো বিকল্প নেই।
.
প্রিয় পাঠক, আপনি জেনে আরও অবাক হবেন যে, যখন পৃথিবীতে সূর্যগ্রহণ, চন্দ্রগ্রহণ ও অনাবৃষ্টি হয়, তখন গোছালো পৃথিবী নিমিষেই অগোছালো হয়ে পড়ে; সেই অগোছালো পৃথিবীকে গুছিয়ে নিতে ইসলাম আমাদের নামায পড়ার আদেশ করে। ফলে নামায অগোছালো পৃথিবীকে সুন্দর করে গুছিয়ে দেয়। যখন নামায পৃথিবীর জটিল থেকে জটিল বিষয়াবলি গুছিয়ে দিতে পারে, তাহলে কি নামায় পারে না— মনুষ্য জীবনকে গুছিয়ে দিতে? অবশ্যই পারে। তবে আজ থেকে আর নামায কাযা কেন?
বইঃ কুরআনি ভাবনা
লেখকঃ মাওলানা মাহদী হাসান
প্রকাশনায়ঃ দারুত তিবইয়ান

