প্রিয় নবির প্রিয় গল্প
বই : প্রিয় নবির প্রিয় গল্পলেখক : ড. আবদুর রউফঅনুবাদ : মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান প্রকাশনায় : দারুত তিবইয়ান| হিজরতের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ |প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম লুকিয়ে লুকিয়ে আবু বকর রাদিয়াল্লাহ তাআলা আনহুর ঘরে গিয়ে পৌঁছলেন। সে সময় আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকেও হিজরতের আদেশ এসেছিল। যখন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আবু বকর রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহুকে নিজের সঙ্গে যাওয়ার অনুমতি দেন, তখন আনন্দে আৰু বকর রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহুর চক্ষু অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়ে। এমনকি উভয়ে মকা থেকে মদিনায় হিজরতের সকল আসবাবপত্র প্রস্তুত করে নেন। সিদ্ধান্ত হলো যে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রথমে মক্কার বাহিরে গারে সাওরে কিছুদিন অবস্থান করবেন। তার পর সেখান থেকে বের হয়ে উপকূলীয় পথ দিয়ে মদিনায় রওনা করবেন।.হজরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু আগে থেকেই দুটি উট ক্রয় করে নিরাপদ একটি স্থানে সংরক্ষণ করে রেখেছিলেন। এদিকে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আলি রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহুকে মানুষের পক্ষ থেকে জমাকৃত আমানতের মাল ফেরত দিয়েই মক্কা থেকে রওনার আদেশ দিয়েছিলেন। দুই বন্ধু চুপিসারে মক্কা থেকে রওনা করে গারে সাওরে গিয়ে পৌঁছলেন। মক্কাভূমি ত্যাগের পূর্বে হজরত আবু বকর কিছু কর্মসূচি সম্পন্ন করে নেন। আর তা হলো:১. তিনি নিজ সন্তান আবদুল্লাহকে দায়িত্ব দেন যে, সে যেন মক্কার অলিগলিতেঘুরেফিরে মানুষের কথাবার্তা শুনে এবং গারে সাওরে তাঁর নিকট পৌঁছিয়ে দেয়। ২. নিজের আজাদকৃত গোলাম আমের বিন ফুহাইরার প্রতি নির্দেশনা ছিল যে, তার বকরিকে পূর্বের ন্যায় মক্কার চারণভূমিতে চরাতে থাকবে এবং গারে সাওরে থাকাকালেদুধ এবং গোস্ত প্রস্তুত করবে।৩. নিজের কন্যা আসমার ওপর নির্দেশনা ছিল যে, তিনি রাতের অন্ধকারে 'গারে সাওরে' খাবার নিয়ে যাবেন।.এই সব কর্মসূচির উদ্দেশ্য হলো, কাফেরদের কার্যক্রম সম্পর্কে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম গারে সাওরে থেকে অবগত হওয়া এবং খাবার-দাবারেও কোনো ধরনের কষ্ট না পাওয়া।| গারে সাওরে তিনদিন |৬২১ ঈসায়ি ১৩ সেপ্টম্বর, যখন দুইবন্ধু গারে সাওরের চূড়ায় পৌঁছলেন,” তখন প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পায়ে জুতা ছিল না; গারে সাওরের আশেপাশে পড়ে থাকা পাথরের দ্বারা পায়ের তালু কেটে ছিঁড়ে যাচ্ছিল, তখন আৰু বকর রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে কাঁধে তুলে নিলেন। এবং গুহায় পৌঁছে নামিয়ে দিলেন। শুধু তাই নয়, বরং গুহার ভেতরে কোনো প্রকার শাপ অথবা বন্যপ্রাণী থাকে কিনা সেই সন্দেহে প্রথমে নিজেই গুহায় ঢুকে দেখে নিলেন। অতঃপর দুজনই তিনদিন গুহায় অবস্থান করলেন।.এ সময় দুশমনরা ভালোভাবে টের পেয়েছিল যে, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের হাতের নাগাল থেকে বেরিয়ে গেছেন। তাই অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে অনুসন্ধান শুরু করে দিলো। কিছু লোক তো প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রবেশের পর গুহার মুখে পৌঁছে গিয়েছিল, তখন আবু বকর রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু খুব ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন। .প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজের বন্ধুকে সাহস জোগানোর জন্য বললেন, 'ভয় পেয়ো না বন্ধু। আল্লাহ তাআলা আমাদের সঙ্গে আছেন।' বাস্তবতা এটাই যে আল্লাহ তাআলার কুদরত তাদেরকে রক্ষা করছিল।.একটি মাকড়সা এসে গুহার মুখে জাল বোনে। এমনকি একটি বন্য ঘুঘু এসে সেখানে নীড় তৈরি করে ডিম পেড়ে দিলো। ফলে পরবর্তীসময়ে যে-ই এখানে এসেছিল, সেই নিশ্চিত ধারণা করে নেয় যে, এমন অনাবাদি গভীর স্থানে কারো পক্ষে লুকিয়ে থাকা সম্ভব নয়। এ কথা ভেবে সে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সন্ধানে অন্য কোনো পথ বেছে নিত।.
An Najahah Shop
Category List
All products

বই : প্রিয় নবির প্রিয় গল্প
লেখক : ড. আবদুর রউফ
অনুবাদ : মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান
প্রকাশনায় : দারুত তিবইয়ান
| হিজরতের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ |
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম লুকিয়ে লুকিয়ে আবু বকর রাদিয়াল্লাহ তাআলা আনহুর ঘরে গিয়ে পৌঁছলেন। সে সময় আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকেও হিজরতের আদেশ এসেছিল। যখন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আবু বকর রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহুকে নিজের সঙ্গে যাওয়ার অনুমতি দেন, তখন আনন্দে আৰু বকর রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহুর চক্ষু অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়ে। এমনকি উভয়ে মকা থেকে মদিনায় হিজরতের সকল আসবাবপত্র প্রস্তুত করে নেন। সিদ্ধান্ত হলো যে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রথমে মক্কার বাহিরে গারে সাওরে কিছুদিন অবস্থান করবেন। তার পর সেখান থেকে বের হয়ে উপকূলীয় পথ দিয়ে মদিনায় রওনা করবেন।
.
হজরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু আগে থেকেই দুটি উট ক্রয় করে নিরাপদ একটি স্থানে সংরক্ষণ করে রেখেছিলেন। এদিকে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আলি রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহুকে মানুষের পক্ষ থেকে জমাকৃত আমানতের মাল ফেরত দিয়েই মক্কা থেকে রওনার আদেশ দিয়েছিলেন। দুই বন্ধু চুপিসারে মক্কা থেকে রওনা করে গারে সাওরে গিয়ে পৌঁছলেন। মক্কাভূমি ত্যাগের পূর্বে হজরত আবু বকর কিছু কর্মসূচি সম্পন্ন করে নেন। আর তা হলো:
১. তিনি নিজ সন্তান আবদুল্লাহকে দায়িত্ব দেন যে, সে যেন মক্কার অলিগলিতে
ঘুরেফিরে মানুষের কথাবার্তা শুনে এবং গারে সাওরে তাঁর নিকট পৌঁছিয়ে দেয়।
২. নিজের আজাদকৃত গোলাম আমের বিন ফুহাইরার প্রতি নির্দেশনা ছিল যে, তার বকরিকে পূর্বের ন্যায় মক্কার চারণভূমিতে চরাতে থাকবে এবং গারে সাওরে থাকাকালেদুধ এবং গোস্ত প্রস্তুত করবে।
৩. নিজের কন্যা আসমার ওপর নির্দেশনা ছিল যে, তিনি রাতের অন্ধকারে 'গারে সাওরে' খাবার নিয়ে যাবেন।
.
এই সব কর্মসূচির উদ্দেশ্য হলো, কাফেরদের কার্যক্রম সম্পর্কে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম গারে সাওরে থেকে অবগত হওয়া এবং খাবার-দাবারেও কোনো ধরনের কষ্ট না পাওয়া।
| গারে সাওরে তিনদিন |
৬২১ ঈসায়ি ১৩ সেপ্টম্বর, যখন দুইবন্ধু গারে সাওরের চূড়ায় পৌঁছলেন,” তখন প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পায়ে জুতা ছিল না; গারে সাওরের আশেপাশে পড়ে থাকা পাথরের দ্বারা পায়ের তালু কেটে ছিঁড়ে যাচ্ছিল, তখন আৰু বকর রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে কাঁধে তুলে নিলেন। এবং গুহায় পৌঁছে নামিয়ে দিলেন। শুধু তাই নয়, বরং গুহার ভেতরে কোনো প্রকার শাপ অথবা বন্যপ্রাণী থাকে কিনা সেই সন্দেহে প্রথমে নিজেই গুহায় ঢুকে দেখে নিলেন। অতঃপর দুজনই তিনদিন গুহায় অবস্থান করলেন।
.
এ সময় দুশমনরা ভালোভাবে টের পেয়েছিল যে, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের হাতের নাগাল থেকে বেরিয়ে গেছেন। তাই অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে অনুসন্ধান শুরু করে দিলো। কিছু লোক তো প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রবেশের পর গুহার মুখে পৌঁছে গিয়েছিল, তখন আবু বকর রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু খুব ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন।
.
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজের বন্ধুকে সাহস জোগানোর জন্য বললেন, 'ভয় পেয়ো না বন্ধু। আল্লাহ তাআলা আমাদের সঙ্গে আছেন।' বাস্তবতা এটাই যে আল্লাহ তাআলার কুদরত তাদেরকে রক্ষা করছিল।
.
একটি মাকড়সা এসে গুহার মুখে জাল বোনে। এমনকি একটি বন্য ঘুঘু এসে সেখানে নীড় তৈরি করে ডিম পেড়ে দিলো। ফলে পরবর্তীসময়ে যে-ই এখানে এসেছিল, সেই নিশ্চিত ধারণা করে নেয় যে, এমন অনাবাদি গভীর স্থানে কারো পক্ষে লুকিয়ে থাকা সম্ভব নয়। এ কথা ভেবে সে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সন্ধানে অন্য কোনো পথ বেছে নিত।
.
লেখক : ড. আবদুর রউফ
অনুবাদ : মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান
প্রকাশনায় : দারুত তিবইয়ান
| হিজরতের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ |
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম লুকিয়ে লুকিয়ে আবু বকর রাদিয়াল্লাহ তাআলা আনহুর ঘরে গিয়ে পৌঁছলেন। সে সময় আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকেও হিজরতের আদেশ এসেছিল। যখন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আবু বকর রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহুকে নিজের সঙ্গে যাওয়ার অনুমতি দেন, তখন আনন্দে আৰু বকর রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহুর চক্ষু অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়ে। এমনকি উভয়ে মকা থেকে মদিনায় হিজরতের সকল আসবাবপত্র প্রস্তুত করে নেন। সিদ্ধান্ত হলো যে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রথমে মক্কার বাহিরে গারে সাওরে কিছুদিন অবস্থান করবেন। তার পর সেখান থেকে বের হয়ে উপকূলীয় পথ দিয়ে মদিনায় রওনা করবেন।
.
হজরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু আগে থেকেই দুটি উট ক্রয় করে নিরাপদ একটি স্থানে সংরক্ষণ করে রেখেছিলেন। এদিকে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আলি রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহুকে মানুষের পক্ষ থেকে জমাকৃত আমানতের মাল ফেরত দিয়েই মক্কা থেকে রওনার আদেশ দিয়েছিলেন। দুই বন্ধু চুপিসারে মক্কা থেকে রওনা করে গারে সাওরে গিয়ে পৌঁছলেন। মক্কাভূমি ত্যাগের পূর্বে হজরত আবু বকর কিছু কর্মসূচি সম্পন্ন করে নেন। আর তা হলো:
১. তিনি নিজ সন্তান আবদুল্লাহকে দায়িত্ব দেন যে, সে যেন মক্কার অলিগলিতে
ঘুরেফিরে মানুষের কথাবার্তা শুনে এবং গারে সাওরে তাঁর নিকট পৌঁছিয়ে দেয়।
২. নিজের আজাদকৃত গোলাম আমের বিন ফুহাইরার প্রতি নির্দেশনা ছিল যে, তার বকরিকে পূর্বের ন্যায় মক্কার চারণভূমিতে চরাতে থাকবে এবং গারে সাওরে থাকাকালেদুধ এবং গোস্ত প্রস্তুত করবে।
৩. নিজের কন্যা আসমার ওপর নির্দেশনা ছিল যে, তিনি রাতের অন্ধকারে 'গারে সাওরে' খাবার নিয়ে যাবেন।
.
এই সব কর্মসূচির উদ্দেশ্য হলো, কাফেরদের কার্যক্রম সম্পর্কে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম গারে সাওরে থেকে অবগত হওয়া এবং খাবার-দাবারেও কোনো ধরনের কষ্ট না পাওয়া।
| গারে সাওরে তিনদিন |
৬২১ ঈসায়ি ১৩ সেপ্টম্বর, যখন দুইবন্ধু গারে সাওরের চূড়ায় পৌঁছলেন,” তখন প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পায়ে জুতা ছিল না; গারে সাওরের আশেপাশে পড়ে থাকা পাথরের দ্বারা পায়ের তালু কেটে ছিঁড়ে যাচ্ছিল, তখন আৰু বকর রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে কাঁধে তুলে নিলেন। এবং গুহায় পৌঁছে নামিয়ে দিলেন। শুধু তাই নয়, বরং গুহার ভেতরে কোনো প্রকার শাপ অথবা বন্যপ্রাণী থাকে কিনা সেই সন্দেহে প্রথমে নিজেই গুহায় ঢুকে দেখে নিলেন। অতঃপর দুজনই তিনদিন গুহায় অবস্থান করলেন।
.
এ সময় দুশমনরা ভালোভাবে টের পেয়েছিল যে, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের হাতের নাগাল থেকে বেরিয়ে গেছেন। তাই অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে অনুসন্ধান শুরু করে দিলো। কিছু লোক তো প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রবেশের পর গুহার মুখে পৌঁছে গিয়েছিল, তখন আবু বকর রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু খুব ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন।
.
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজের বন্ধুকে সাহস জোগানোর জন্য বললেন, 'ভয় পেয়ো না বন্ধু। আল্লাহ তাআলা আমাদের সঙ্গে আছেন।' বাস্তবতা এটাই যে আল্লাহ তাআলার কুদরত তাদেরকে রক্ষা করছিল।
.
একটি মাকড়সা এসে গুহার মুখে জাল বোনে। এমনকি একটি বন্য ঘুঘু এসে সেখানে নীড় তৈরি করে ডিম পেড়ে দিলো। ফলে পরবর্তীসময়ে যে-ই এখানে এসেছিল, সেই নিশ্চিত ধারণা করে নেয় যে, এমন অনাবাদি গভীর স্থানে কারো পক্ষে লুকিয়ে থাকা সম্ভব নয়। এ কথা ভেবে সে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সন্ধানে অন্য কোনো পথ বেছে নিত।
.
প্রিয় নবির প্রিয় গল্প
135 BDT250 BDTSave 115 BDT
1
বই : প্রিয় নবির প্রিয় গল্প
লেখক : ড. আবদুর রউফ
অনুবাদ : মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান
প্রকাশনায় : দারুত তিবইয়ান
| হিজরতের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ |
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম লুকিয়ে লুকিয়ে আবু বকর রাদিয়াল্লাহ তাআলা আনহুর ঘরে গিয়ে পৌঁছলেন। সে সময় আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকেও হিজরতের আদেশ এসেছিল। যখন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আবু বকর রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহুকে নিজের সঙ্গে যাওয়ার অনুমতি দেন, তখন আনন্দে আৰু বকর রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহুর চক্ষু অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়ে। এমনকি উভয়ে মকা থেকে মদিনায় হিজরতের সকল আসবাবপত্র প্রস্তুত করে নেন। সিদ্ধান্ত হলো যে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রথমে মক্কার বাহিরে গারে সাওরে কিছুদিন অবস্থান করবেন। তার পর সেখান থেকে বের হয়ে উপকূলীয় পথ দিয়ে মদিনায় রওনা করবেন।
.
হজরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু আগে থেকেই দুটি উট ক্রয় করে নিরাপদ একটি স্থানে সংরক্ষণ করে রেখেছিলেন। এদিকে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আলি রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহুকে মানুষের পক্ষ থেকে জমাকৃত আমানতের মাল ফেরত দিয়েই মক্কা থেকে রওনার আদেশ দিয়েছিলেন। দুই বন্ধু চুপিসারে মক্কা থেকে রওনা করে গারে সাওরে গিয়ে পৌঁছলেন। মক্কাভূমি ত্যাগের পূর্বে হজরত আবু বকর কিছু কর্মসূচি সম্পন্ন করে নেন। আর তা হলো:
১. তিনি নিজ সন্তান আবদুল্লাহকে দায়িত্ব দেন যে, সে যেন মক্কার অলিগলিতে
ঘুরেফিরে মানুষের কথাবার্তা শুনে এবং গারে সাওরে তাঁর নিকট পৌঁছিয়ে দেয়।
২. নিজের আজাদকৃত গোলাম আমের বিন ফুহাইরার প্রতি নির্দেশনা ছিল যে, তার বকরিকে পূর্বের ন্যায় মক্কার চারণভূমিতে চরাতে থাকবে এবং গারে সাওরে থাকাকালেদুধ এবং গোস্ত প্রস্তুত করবে।
৩. নিজের কন্যা আসমার ওপর নির্দেশনা ছিল যে, তিনি রাতের অন্ধকারে 'গারে সাওরে' খাবার নিয়ে যাবেন।
.
এই সব কর্মসূচির উদ্দেশ্য হলো, কাফেরদের কার্যক্রম সম্পর্কে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম গারে সাওরে থেকে অবগত হওয়া এবং খাবার-দাবারেও কোনো ধরনের কষ্ট না পাওয়া।
| গারে সাওরে তিনদিন |
৬২১ ঈসায়ি ১৩ সেপ্টম্বর, যখন দুইবন্ধু গারে সাওরের চূড়ায় পৌঁছলেন,” তখন প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পায়ে জুতা ছিল না; গারে সাওরের আশেপাশে পড়ে থাকা পাথরের দ্বারা পায়ের তালু কেটে ছিঁড়ে যাচ্ছিল, তখন আৰু বকর রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে কাঁধে তুলে নিলেন। এবং গুহায় পৌঁছে নামিয়ে দিলেন। শুধু তাই নয়, বরং গুহার ভেতরে কোনো প্রকার শাপ অথবা বন্যপ্রাণী থাকে কিনা সেই সন্দেহে প্রথমে নিজেই গুহায় ঢুকে দেখে নিলেন। অতঃপর দুজনই তিনদিন গুহায় অবস্থান করলেন।
.
এ সময় দুশমনরা ভালোভাবে টের পেয়েছিল যে, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের হাতের নাগাল থেকে বেরিয়ে গেছেন। তাই অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে অনুসন্ধান শুরু করে দিলো। কিছু লোক তো প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রবেশের পর গুহার মুখে পৌঁছে গিয়েছিল, তখন আবু বকর রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু খুব ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন।
.
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজের বন্ধুকে সাহস জোগানোর জন্য বললেন, 'ভয় পেয়ো না বন্ধু। আল্লাহ তাআলা আমাদের সঙ্গে আছেন।' বাস্তবতা এটাই যে আল্লাহ তাআলার কুদরত তাদেরকে রক্ষা করছিল।
.
একটি মাকড়সা এসে গুহার মুখে জাল বোনে। এমনকি একটি বন্য ঘুঘু এসে সেখানে নীড় তৈরি করে ডিম পেড়ে দিলো। ফলে পরবর্তীসময়ে যে-ই এখানে এসেছিল, সেই নিশ্চিত ধারণা করে নেয় যে, এমন অনাবাদি গভীর স্থানে কারো পক্ষে লুকিয়ে থাকা সম্ভব নয়। এ কথা ভেবে সে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সন্ধানে অন্য কোনো পথ বেছে নিত।
.
লেখক : ড. আবদুর রউফ
অনুবাদ : মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান
প্রকাশনায় : দারুত তিবইয়ান
| হিজরতের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ |
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম লুকিয়ে লুকিয়ে আবু বকর রাদিয়াল্লাহ তাআলা আনহুর ঘরে গিয়ে পৌঁছলেন। সে সময় আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকেও হিজরতের আদেশ এসেছিল। যখন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আবু বকর রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহুকে নিজের সঙ্গে যাওয়ার অনুমতি দেন, তখন আনন্দে আৰু বকর রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহুর চক্ষু অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়ে। এমনকি উভয়ে মকা থেকে মদিনায় হিজরতের সকল আসবাবপত্র প্রস্তুত করে নেন। সিদ্ধান্ত হলো যে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রথমে মক্কার বাহিরে গারে সাওরে কিছুদিন অবস্থান করবেন। তার পর সেখান থেকে বের হয়ে উপকূলীয় পথ দিয়ে মদিনায় রওনা করবেন।
.
হজরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু আগে থেকেই দুটি উট ক্রয় করে নিরাপদ একটি স্থানে সংরক্ষণ করে রেখেছিলেন। এদিকে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আলি রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহুকে মানুষের পক্ষ থেকে জমাকৃত আমানতের মাল ফেরত দিয়েই মক্কা থেকে রওনার আদেশ দিয়েছিলেন। দুই বন্ধু চুপিসারে মক্কা থেকে রওনা করে গারে সাওরে গিয়ে পৌঁছলেন। মক্কাভূমি ত্যাগের পূর্বে হজরত আবু বকর কিছু কর্মসূচি সম্পন্ন করে নেন। আর তা হলো:
১. তিনি নিজ সন্তান আবদুল্লাহকে দায়িত্ব দেন যে, সে যেন মক্কার অলিগলিতে
ঘুরেফিরে মানুষের কথাবার্তা শুনে এবং গারে সাওরে তাঁর নিকট পৌঁছিয়ে দেয়।
২. নিজের আজাদকৃত গোলাম আমের বিন ফুহাইরার প্রতি নির্দেশনা ছিল যে, তার বকরিকে পূর্বের ন্যায় মক্কার চারণভূমিতে চরাতে থাকবে এবং গারে সাওরে থাকাকালেদুধ এবং গোস্ত প্রস্তুত করবে।
৩. নিজের কন্যা আসমার ওপর নির্দেশনা ছিল যে, তিনি রাতের অন্ধকারে 'গারে সাওরে' খাবার নিয়ে যাবেন।
.
এই সব কর্মসূচির উদ্দেশ্য হলো, কাফেরদের কার্যক্রম সম্পর্কে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম গারে সাওরে থেকে অবগত হওয়া এবং খাবার-দাবারেও কোনো ধরনের কষ্ট না পাওয়া।
| গারে সাওরে তিনদিন |
৬২১ ঈসায়ি ১৩ সেপ্টম্বর, যখন দুইবন্ধু গারে সাওরের চূড়ায় পৌঁছলেন,” তখন প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পায়ে জুতা ছিল না; গারে সাওরের আশেপাশে পড়ে থাকা পাথরের দ্বারা পায়ের তালু কেটে ছিঁড়ে যাচ্ছিল, তখন আৰু বকর রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে কাঁধে তুলে নিলেন। এবং গুহায় পৌঁছে নামিয়ে দিলেন। শুধু তাই নয়, বরং গুহার ভেতরে কোনো প্রকার শাপ অথবা বন্যপ্রাণী থাকে কিনা সেই সন্দেহে প্রথমে নিজেই গুহায় ঢুকে দেখে নিলেন। অতঃপর দুজনই তিনদিন গুহায় অবস্থান করলেন।
.
এ সময় দুশমনরা ভালোভাবে টের পেয়েছিল যে, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের হাতের নাগাল থেকে বেরিয়ে গেছেন। তাই অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে অনুসন্ধান শুরু করে দিলো। কিছু লোক তো প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রবেশের পর গুহার মুখে পৌঁছে গিয়েছিল, তখন আবু বকর রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু খুব ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন।
.
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজের বন্ধুকে সাহস জোগানোর জন্য বললেন, 'ভয় পেয়ো না বন্ধু। আল্লাহ তাআলা আমাদের সঙ্গে আছেন।' বাস্তবতা এটাই যে আল্লাহ তাআলার কুদরত তাদেরকে রক্ষা করছিল।
.
একটি মাকড়সা এসে গুহার মুখে জাল বোনে। এমনকি একটি বন্য ঘুঘু এসে সেখানে নীড় তৈরি করে ডিম পেড়ে দিলো। ফলে পরবর্তীসময়ে যে-ই এখানে এসেছিল, সেই নিশ্চিত ধারণা করে নেয় যে, এমন অনাবাদি গভীর স্থানে কারো পক্ষে লুকিয়ে থাকা সম্ভব নয়। এ কথা ভেবে সে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সন্ধানে অন্য কোনো পথ বেছে নিত।
.