An Najahah Shop
EN

সাইকোলজি—ইসলামি দৃষ্টিকোণ

An Najahah Shop

সাইকোলজি—ইসলামি দৃষ্টিকোণ
  • সাইকোলজি—ইসলামি দৃষ্টিকোণ_img_0

সাইকোলজি—ইসলামি দৃষ্টিকোণ

245 BDT350 BDTSave 105 BDT
1

যুক্তরাষ্ট্রের মতো একটি দেশের সেক্যুলার বিশ্ববিদ্যালয়ে সাইকোলজি বিভাগে আন্ডারগ্রাজুয়েট ও পরবর্তীতে ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিতে উচ্চতর ডিগ্রি নিয়েও আমি কোনো সন্তোষজনক সাইকোলজিক্যাল থিওরি খুঁজে পাইনি যা বিস্তারিত ও নিখুঁতভাবে মানব মনের প্রকৃতি ব্যাখা করতে পেরেছে। যদিও বিভিন্ন সেক্যুলার সাইকোলজিস্টদের প্রায় ২৫০ এর অধিক তত্ত্ব আমি অধ্যয়ন করেছি, এর একটিও আমাকে মানব মনের সঠিক ব্যাখা প্রদান করতে পারেনি। কিছু থিওরিকে অন্য থিওরির থেকে অধিক আকর্ষণীয় মনে হলেও, সব সময় মনে হতো কী যেন নেই, কী যেন নেই। খণ্ড খণ্ড টুকরোগুলো মিলে একত্রে যেন কোনো ছবি তৈরি করতে পারেনি।

ডক্টরেট ডিগ্রী অর্জনের পর আমি আলোচ্য বিষয়ে ইসলামের বক্তব্য খুঁজতে শুরু করলাম। (যদিও পিএইচডি অর্জনের বহু আগেই আমি ইসলাম গ্রহণ করেছি)। শুরুতে এই অনুসন্ধান কিছুটা কঠিন ছিল। কেননা, বিভিন্ন ভ্রান্ত সুফিবাদী মতামত ও দার্শনিক চিন্তাধারা থেকে বিশুদ্ধ ইসলামি সাইকোলজিকে পৃথক করতে হয়েছে। অবশেষে আমি আল্লাহর অনুগ্রহে ইংরেজি ভাষাতে উপস্থাপিত বিভিন্ন বিশুদ্ধ উৎসের সন্ধান পাই। আমি সেগুলো পড়তে শুরু করি এবং যতই পড়েছি ততই উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর আলোয় উদ্ভাসিত হয়েছে সত্যটা। আমি অবাক হয়ে দেখেছি ইসলামি পদ্ধতি কত জটিলতামুক্ত! সবশেষে আমি তৃপ্ত হয়েছি। আমি যে তত্ত্ব অনুসন্ধান করছিলাম তা মিলেছে ইসলামের মধ্যেই । ইসলাম সুস্পষ্ট ও পরিপূর্ণ চিত্রের মাধ্যমে মানুষের জীবনের সোজাসাপ্টা ব্যাখা প্রদান করে। আমাদের জীবনের উদ্দেশ্য, মানুষের আধ্যাত্বিক সত্তার অন্তর্নিহিত প্রকৃতি, আল্লাহর সাথে আমাদের সম্পর্কের গুরুত্ব কিংবা জীবনে কোন বিষয়গুলো প্রাধান্য দেওয়া উচিত ইত্যাদি সবকিছু ইসলামে বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

কিভাবে আমরা আমাদের আত্মাকে পরিশুদ্ধ করতে পারি, কিভাবে শয়তান থেকে সুরক্ষিত রাখতে পারি এবং দুনিয়া ও আখিরাতের সর্বোচ্চ সফলতা অর্জন করতে পারি ইত্যাদি ধাপগুলোর আলোচনা ইসলামে রয়েছে। প্রত্যেক মানুষের পক্ষেই এই লক্ষ্যগুলো অর্জন করা সম্ভব। এই পথে দৃঢ়পদ থাকা সহজ না হতে পারে, তবে লক্ষ্যগুলো অর্জন করা সম্ভব নিশ্চিতভাবেই ।

যখন আমি জানলাম যে আমরা সবকিছুতে নিছক আমাদের জেনেটিক গঠনের ভিকটিম নই কিংবা আমাদের অতীত অভিজ্ঞতা বা বর্তমান পরিবেশ দ্বারা সামগ্রিকভাবে নিয়ন্ত্রিত নই, তখন আমার মনে শান্তির সুবাতাস বয়ে গেল। কিছু ব্যতিক্রম বাদে অন্যান্য ক্ষেত্রে এই বিষয়গুলোর নিয়ন্ত্রণ নেই। আমরা আমাদের জীবনের উদ্দেশ্য পূরণ করতে স্বাধীন সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম। সেই স্বাধীন সিদ্ধান্তের অর্থ আমাদের সৃষ্টিকর্তা এবং রব আল্লাহর কাছে আন্তরিকভাবে আত্মসমর্পণ করা। এবং এই আত্মসমর্পণ হতে হবে তাঁরই দেখানো পথনির্দেশ মোতাবেক। এই পথই হলো একমাত্র পথ, যা দুনিয়া ও আখিরাতে সত্যিকারের সুখ-শান্তি দিতে পারে। আল্লাহর প্রতি আনুগত্যের মাধ্যমে আমরা যেন এক নিরাপদ অভয়ারণ্যে প্রবেশ করি। যা আমাদের নিরাপত্তা দেয় জীবনের নানাবিধ চড়াই-উতরাই, পরীক্ষা, বাধা-বিপত্তি, মানসিক চাপ এবং প্রবৃত্তির হীন কামনাবাসনা থেকে।

আমি মূলতঃ আগ্রহ পেয়েছি এতদিন নানান সেক্যুলার তত্ত্ব প্রচারকারী পশ্চিমা প্রতিষ্ঠানগুলোর গবেষণা থেকে। তাদের করা রিসার্চগুলোই এখন মানবজীবনে আধ্যাত্মিকতা ও ধর্মের প্রয়োজনীয়তার দিকে ইঙ্গিত করছে। ধার্মিক ব্যক্তির মানসিক ও শারীরিক সুস্বাস্থ্যের উপর ধর্মের যে গভীর প্রভাব রয়েছে, আধুনিক গবেষণার ইশারা এখন সেদিকেই। এই ব্যাপারে বিজ্ঞানীরা যতই আগ্রহী হচ্ছেন, ততই আরো বেশি প্রমাণ মিলছে । বিভিন্ন আবেগিক, মানসিক ও শারীরিক অসুস্থতা নিরাময় ও প্রতিরোধে ধার্মিকতা বা আধ্যাত্মিকতা অত্যন্ত উপকারী হিসেবে সাব্যস্ত হচ্ছে। এসকল গবেষণা বাস্তবিকই নির্দেশ করছে ইসলামের সত্যতা। আল্লাহ তাআলা বলেছেন,

“এখন আমি তাদেরকে আমার নিদর্শনাবলী প্রদর্শন করাব পৃথিবীর দিগন্তে এবং তাদের নিজেদের মধ্যে; ফলে তাদের কাছে ফুটে উঠবে যে, এ (কুরআন) সত্য। আপনার পালনকর্তা সর্ববিষয়ে সাক্ষ্যদাতা, এটা কি যথেষ্ট নয়?” (সূরা ফুসসিলাত ৪১ : ৫৩)
---
বই : সাইকোলজি—ইসলামি দৃষ্টিকোণ
মূল : ড.আইশা হামদান
অনুবাদ : সিফাত-ঈ-মুহাম্মদ
সম্পাদনা : ডা. শামসুল আরেফীন
পৃষ্ঠা সংখ্যা : ২৭২ পৃষ্ঠা