An Najahah Shop

An Najahah Shop

EN

মুসলিম নারী

An Najahah Shop

মুসলিম নারী
  • মুসলিম নারী_img_0

মুসলিম নারী

50 BDT70 BDTSave 20 BDT

বই : মুসলিম নারী
লেখক : ইমাম হাসান আল বান্না
অনুবাদ : আমজাদ ইউনুস

একজন প্রাজ্ঞ লেখক আমার কাছে চিঠি পাঠিয়ে অনুরোধ করেছেন-নারীর মর্যাদা, নারী-পুরুষের পারস্পরিক দ্বীনি ও নৈতিক দায়দায়িত্বসহ প্রাসঙ্গিক বিষয়ে আমি যেন কলম ধরি। তাঁর একান্ত প্রত্যাশা হলো-আমার লেখার মাধ্যমে যেন মুসলিম নারীরা দ্বীনের পথে চলার প্রেরণা পায়।

উম্মতের মধ্যে নারীদের অবস্থান সুদৃঢ়করণের গুরুত্ব সম্পর্কে আমি অনবহিত নই। তাদের ব্যাপারে লেখালিখির প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কেও আমি ওয়াকিবহাল। নারীদের দ্বীনদারির চর্চা ও দ্বীনের কাজে নারীদের সম্পৃক্ততার বিষয়টিকে আমি বেশ গুরুত্বের সাথেই দেখি। কারণ, নারীরা এই উম্মাহর অর্ধেক অংশ। একটি জাতি গঠনে নারীদের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি প্রভাবক।তাদের প্রাথমিক পাঠগুলোই একটি জাতির আত্মগঠনের মাইলফলক। একটি শিশু যেভাবে তার মাকে দেখে বেড়ে ওঠে, একটি জাতিও ঠিক তাদের মায়েদের দেওয়া শিক্ষার পথ ধরেই আপন গন্তব্যের দিকে এগিয়ে যায়।এভাবে একজন মা তার সন্তানদের জীবনে, একজন বোন তার ভাইদের জীবনে এবং একজন স্ত্রী তার স্বামীর জীবনে বিরাট প্রভাবক হিসেবে ভূমিকা রাখেন। তাই বলা যায়Ñএকজন নারী জাতির শিশু, কিশোর, তরুণ ও অন্যান্য সবার জীবনে প্রধানতম ভূমিকা পালন করেন।

নারীদের বিষয়ে দ্বীন ইসলামের পর্যাপ্ত নির্দেশনা ও বক্তব্য রয়েছে। নারীর মর্যাদা, অধিকার ও দায়িত্বের প্রসঙ্গকে ইসলাম মোটেও অবহেলা করেনি।ইসলাম মানবজীবনের প্রতিটি প্রসঙ্গ-অনুষঙ্গে সুস্পষ্ট ও সুচারু দিকনির্দেশনা দিয়েছে; কোনো বিষয়েই দিকনির্দেশহীন ধু-ধু প্রান্তরে ভবঘুরের মতো ছেড়ে দেয়নি। আর ইসলাম তো আল্লাহ প্রদত্ত নূর-যা আমাদের জীবনের যাবতীয় অন্ধকার দূর করে দেয়।

ইসলাম নারী-পুরুষের মধ্যকার যে বিধানাবলি দিয়েছে, সেগুলো নিয়ে আলোচনা করাটা আমাদের এ লেখার উদ্দেশ্য নয়। কেননা, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় গ্রন্থাবলি মজুদ রয়েছে এবং সচেতন মানুষমাত্রই সেসব বিধানাবলি সম্পর্কে কমবেশি অবগত আছেন। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ হলো-আমরা কি উক্ত বিধানগুলো নিজেদের জীবনে প্রয়োগ করতে প্রস্তুত? আমাদের উচিত, এ বিষয়ে নিজেদেরকে প্রশ্নের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো।

বাস্তবতা হলোÑআমাদের দেশ ও অন্যান্য মুসলিম দেশসমূহ পশ্চিমা সংস্কৃতির অন্ধ অনুকরণের নেশায় পড়ে নারীদের প্রসঙ্গে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়টিকে একেবারে ধোঁয়াশা ও অস্বচ্ছ করে ফেলেছে। কিছু মানুষ তো কেবল পশ্চিমাপ্রীতিতেই আটকে থাকেনি; বরং তারা পশ্চিমাদের মানসিক দাসত্ব বরণ করে নিয়েছে। এমনকি তারা ইসলামের বিধিবিধানকে পশ্চিমা রীতিনীতির আদলে পরিবর্তন-পরিমার্জন করে নিতে কোশেশ শুরু করেছে। তাদের এই দৃষ্টিভঙ্গি আত্মপ্রবঞ্চনা ছাড়া আর কিছুই নয়। তাদের মনমানসে ইসলামি বিধিবিধানের এমন বিকৃতি সাধিত হয়, তা আর স্বরূপে থাকে না। তারা ইসলামের বিধিবিধান থেকে সেসব উপাদানকে ছেঁটে ফেলতে চায়, যেসব উপাদান তাদের কুপ্রবৃত্তির সাথে সাংঘর্ষিক ।

তাদের এই অবস্থান মুসলিম সমাজের জন্য অত্যন্ত ভয়ানক। কেননা, তাদের তৎপরতা ইসলামের বিরোধিতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি; বরং সীমা ডিঙিয়ে তারা ইসলাম-বিরোধিতার আইনি সমাধানও অন্বেষণ করে এবং তাকে বৈধতার পর্যায়ে নিয়ে যেতে চায়।

এ রকম একটি প্রেক্ষাপটে আমাদের মন ও মননকে ইসলামের বিধিবিধান মেনে নেওয়ার প্রতি বিশেষভাবে সুদৃঢ় করতে হবে। নিজেদের ওপর আবশ্যক করে নিতে হবে যে, আমরা ইসলামি বিধিবিধানগুলোকে নিজেদের কুপ্রবৃত্তির দৃষ্টিতে দেখব না। আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে নেওয়ার জন্য নিজেদের সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত করব। বিশেষ করে বর্তমান সময়ে ইসলামের যে বিধিবিধানসমূহ আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ও অপরিহার্য, সেসব বিষয়গুলোর প্রতি আমরা পূর্ণ মনোযোগ দেবো।