উম্মাহর ঐক্য পথ ও পন্থা
বই- বই- উম্মাহর ঐক্য পথ ও পন্থালেখক-মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক হাফিযাহুল্লাহপ্রকাশক- মারকাযুদ দাওয়াহ আল-ইসলামিয়া।পূর্বকথা:-মুসলিম উম্মাহর এই দুর্যোগে একটি মারাত্মক ব্যাধি হচ্ছে ফিকহী মাসালা নিয়ে ঝগড়া-বিবাদ। বর্তমানে মুসলিমরা যখন কাফের আগ্রাসী বাহিনী দ্বারা আক্রান্ত; মুসলিম রাষ্ট্রগুলো সর্বগ্রাসী ষড়যন্ত্রের শিকার; তখন অনেককে দেখা যায় বিভিন্ন মুস্তাহাব আমল যেমন রফয়ে ইয়াদা'য়ন, দোয়ায়ে কুনুত, আমিন জোরে বলা ইত্যাদি বিষয়ে সাধারণের সামনে বিতর্ক-বাহাস নিয়ে ব্যস্ত।অপরদিকে কিছু মুসলিম ভাই নিজেদের জানা সীমিত কিছু হাদিস অনুযায়ী অন্য কাউকে আমল না করতে দেখলে তাদের নামাজকে ভুল এবং অনর্থক, এমনকি তাদেরকে হাদিস অস্বীকারকারী সাব্যস্ত করে কাফের প্রমাণ করায় ব্যস্ত! (আল্লাহ সঠিক দ্বীনি কাজে সকলকে ফিরিয়ে দিন, আমীন) এমন অবস্থায় এই ফিকহী মাসআলায় কড়াকড়ি-বাড়াবাড়ি ব্যতীত সম্প্রীতি রক্ষা ও সঠিক সুন্নাহের প্রতি আহবানের যে সকল কিতাব রয়েছে "উম্মাহর ঐক্য পথ ও পন্থা" কিতাবটি এর মাঝে অন্যতম।মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুল মালেক হাফিজাহুল্লাহ সুন্দর ও ভারসাম্যপূর্ণ ভাবে এই মতভেদপূর্ণ বিষয় সঠিক পন্থা নিয়ে দালিলিক আলোচনা করেছেন। কিতাবটিতে যা রয়েছে:-২০৬ পৃষ্ঠার কিতাবটিতে মোট ছয়টি পরিচ্ছেদ রয়েছে। পরিচ্ছেদ শুরু করার পূর্বে ঐক্য ও সংহতি এবং সম্প্রীতির গুরুত্ব নিয়ে ভূমিকা লিখেন। ভূমিকায় কোরআন ও হাদিসের মাধ্যমে ঐক্য রক্ষার গুরুত্ব আলোচনা করার পর আয়াত থেকে মূল শিক্ষা কি সেটাও বর্ণনা করেছেন। বিচ্ছিন্নতার ব্যাপারে কোরআন ও হাদিসের কঠোর হুঁশিয়ারি উল্লেখের পর এটাও স্পষ্ট করেছেন যে, আহলুস সুন্নাহ ওয়াল-জামাআতের ইমামগণের মাঝে শাখাগত বিষয়ে দলিলের ভিত্তিতে মতপার্থক্য আয়াতের হুঁশিয়ারির আওতাভুক্ত নয়। এ কারণেই হাজারও মতপার্থক্যের পরও তারা একতাবদ্ধ ছিলেন।প্রথম পরিচ্ছেদ:- (৩৯-৫৮) এই পরিচ্ছেদে দুটি শিরোনাম নিয়ে আলোচনা। যাতে আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাআর পরিচয় ও বৈশিষ্ট্যের ক্ষেত্রে বুনিয়াদি কিছু হাদিস এবং এই বিষয়ে মনীষীদের উপদেশ রয়েছে। এরপর জানা যাবে মতভেদ কখন বিভেদে পরিণত পরিণত হয়। সেইসাথে ঐক্যের পরিপন্থী মনে করা কিছু বিষয়কে ৫৮ নং পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেছেন। যা মূলত ঐক্যের প্রতীক।দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ:- (৬১-১১০) এই পরিচ্ছেদ মূলত একটি শিরোনাম নিয়ে সাজানো। এখানে সুন্নাহ এর ভিন্নতা এবং মতভেদ এর কারণ বিষয়ে কিছু কিতাবের নাম দেয়া হয়েছে। লেখক বলেন, "যদি কেউ এর মধ্যে যে কোনো একটি কিতাব বুঝে পড়ে, তাহলে সে বলতে বাধ্য হবে যে ইমামগণের মাঝে যেসব বিষয়ে মতপার্থক্য হয়েছে, সেখানে বাস্তবে মতপার্থক্য হওয়া অনিবার্য ছিল।" এই পরিচ্ছেদে বর্তমান সময়ে যারা আহলে হাদিস বা সালাফি নামে পরিচিত হাদিস অনুসারী ভাইদের পারষ্পরিক মাসালাগত কিছু মতপার্থক্য উদাহরণসহ উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও শাখাগত মাসালা বিষয়ক কিছু কিতাবের সারসংক্ষেপ এনেছেন। পরিচ্ছেদের শেষে বর্তমান সময়ের কিছু আকাবির ও মাশায়েখদের কর্মপন্থা ও পরামর্শ কি সেই আলোচনা হয়েছে। যাদের বক্তব্য উল্লেখ করা হয়েছে:-১/ মুফতি মোহাম্মদ শফি রহিমাহুল্লাহ। ২/ শায়েখ হাসান আলবান্না রহিমাহুল্লাহ। ৩/ শায়েখ আল-উসাইমীন রহিমাহুল্লাহ। ৪/ ড. নাসির ইবনে আব্দুল কারীম। ৫/ শাইখ আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ বিন সালেহ আল মু'তায ৬/ মাওলানা মুহাম্মাদ তাকী উসমানী হাফিযাহুল্লাহ প্রমুখ।তৃতীয় পরিচ্ছেদ:- (১১৪-১৪৬) এই পরিচ্ছেদে মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের একটি প্রতীক নামাজ বিষয়ে আলোচনা করেছেন। নামাজ আদায়ের ভিন্ন ভিন্ন সুন্নাহ এর ব্যাপারে করণীয়। আলেম ও মসজিদের ইমামদের সাধারণ মানুষের সাথে মতভেদ পূর্ণ বিষয়ে আচরণ কি হবে? সে বিষয়ে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। আরো রয়েছে প্রসিদ্ধ কিছু হাদিস ও ফিকাহ গ্রন্থ ও গ্রন্থকারের নাম।চতুর্থ পরিচ্ছেদ:- (১৪৯-১৭৭)এই পরিচ্ছেদে শাখাগত বিষয়ে কড়াকড়ি- বাড়াবাড়ির কারণ কিছুটা বিস্তারিত আকারে আলোচনা করেছেন। তিনি এখানে এই বিষয়ে অনেক কারণের মাঝে "দশটি কারণ" উল্লেখ করেছেন।পঞ্চম পরিচ্ছেদ:- (১৮১-১৮৬) এখানে রুচি ও কর্মের পার্থক্যের বিষয়ে উল্লেখের পর আলেমদের মাঝে মতভেদ হলে সাধারণ মানুষের করণীয় বিষয়ক আলোচনা রয়েছে।ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ:-(১৯০-১৯৯) এই পরিচ্ছেদে মূলত তিনটি প্রশ্নের উত্তর নিয়ে আলোচনা। হক চেনার উপায়, সুন্নাহ পালনের ক্ষেত্রে হাঙ্গামার ক্ষতি ও اذا صح الحديث فهو مذهبي ( ইজা সাহহাল হাদিসু ফাহুয়া মাযহাবী) শীর্ষক উক্তিটির মর্ম বিষয়ক ছিল তিনটি প্রশ্ন। মোটকথা, বইটি অধ্যায়নে জানা যাবে যে, শুধুমাত্র আহলে হাদীস ভাইদের বিরোধিতার জন্য খেলাফে সুন্নাত আমল কে আঁকড়ে ধরা যেমন নিন্দনীয়, তেমনি হাদিস পালনের নাম দিয়ে প্রমাণিত ও সুন্নাহ সম্মত আমল কে বাতিল বলাও দূষণীয়। অনুরূপভাবে "হাদিসের কিতাব সাধারণের জন্য পড়া জায়েজ নয়" এ জাতীয় কথা পরিহার করে তাদের জন্য উপযোগী কিতাবসমূহ পড়ার সঠিক নিয়ম ও পন্থা বলে দেওয়া যেমন উচিত, তেমনি হাদিস অনুসরণের নাম বলে সাহাবীদের থেকে স্বীকৃত নয় এমন বিষয় আমলে চলে আসছে কিনা সেই বিষয়েও লক্ষ্য রাখা উচিত। যে কোনো ভিন্ন আমলের দাওয়াত গ্রহণের পূর্বে সমাজ এবং আমি যে আমলের উপর এতদিন ছিলাম সেটা কোন প্রমাণিত সুন্নাহসম্মত আমল কি না, এটা যাচাইয়ের পর দাওয়াত গ্রহণ করা উচিত। সর্বপ্রকার আসাবিয়্যাত (দলীয়প্রীতি) থেকে মুক্ত হয়ে বুঝে কিতাবটি অধ্যায়ন করলে ইখতেলাফী বিষয়ে স্বচ্ছ ভাবনা এবং ইফতিরাকের (বিচ্ছিন্নতা) মানদণ্ড সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান কিছুটা জানা যাবে ইনশাআল্লাহ।মনে রাখতে হবে, সাহাবীদের মাঝে যে বিষয়ে মতভেদ হয়েছে আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও যাকে দূষণীয় বলেননি, সেই মতভেদ অতীতেও ছিল, বর্তমানেও আছে এবং কেয়ামত পর্যন্ত থাকবে। সুতরাং সেটাকে বাতিল বলে তা পরিহারে বাধ্য করা এবং এটাকে কেন্দ্র করে ঝগড়া-বিবাদ, ভিন্ন মসজিদ নির্মাণ ও মসজিদ ভাঙ্গা নিন্দনীয় ও অবশ্য পরিহারযোগ্য । ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ মূলনীতি এই যে, 'মুয়ালাত' বা বন্ধুত্বের মানদন্ড হচ্ছে ঈমান ও ইসলাম। আর 'মুয়াদাত' বা শত্রুতার মানদন্ড হচ্ছে শিরিক ও কুফর। যে কেউ শরীয়তের দৃষ্টিতে মুসলিম উম্মাহর অন্তর্ভুক্ত সে অন্য কোন বৈশিষ্ট্য ছাড়া শুধু মুমিন ও মুসলিম হওয়ার কারণেই মুয়ালাত ও বন্ধুত্বের এবং সকল ইসলামী অধিকার পাওয়ার হক রাখে। আর যে এই মানদণ্ডে উত্তীর্ণ নয়, অর্থাৎ যে শিরিক বা কুফরে লিপ্ত তার সাথে 'মুয়ালাত' বা বন্ধুত্ব হারাম; বরং তা কুফরের আলামত। ( পৃ: ১৭)
An Najahah Shop
Category List
All products

বই- বই- উম্মাহর ঐক্য পথ ও পন্থা
লেখক-মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক হাফিযাহুল্লাহ
প্রকাশক- মারকাযুদ দাওয়াহ আল-ইসলামিয়া।
পূর্বকথা:-
মুসলিম উম্মাহর এই দুর্যোগে একটি মারাত্মক ব্যাধি হচ্ছে ফিকহী মাসালা নিয়ে ঝগড়া-বিবাদ। বর্তমানে মুসলিমরা যখন কাফের আগ্রাসী বাহিনী দ্বারা আক্রান্ত; মুসলিম রাষ্ট্রগুলো সর্বগ্রাসী ষড়যন্ত্রের শিকার; তখন অনেককে দেখা যায় বিভিন্ন মুস্তাহাব আমল যেমন রফয়ে ইয়াদা'য়ন, দোয়ায়ে কুনুত, আমিন জোরে বলা ইত্যাদি বিষয়ে সাধারণের সামনে বিতর্ক-বাহাস নিয়ে ব্যস্ত।
অপরদিকে কিছু মুসলিম ভাই নিজেদের জানা সীমিত কিছু হাদিস অনুযায়ী অন্য কাউকে আমল না করতে দেখলে তাদের নামাজকে ভুল এবং অনর্থক, এমনকি তাদেরকে হাদিস অস্বীকারকারী সাব্যস্ত করে কাফের প্রমাণ করায় ব্যস্ত! (আল্লাহ সঠিক দ্বীনি কাজে সকলকে ফিরিয়ে দিন, আমীন)
এমন অবস্থায় এই ফিকহী মাসআলায় কড়াকড়ি-বাড়াবাড়ি ব্যতীত সম্প্রীতি রক্ষা ও সঠিক সুন্নাহের প্রতি আহবানের যে সকল কিতাব রয়েছে "উম্মাহর ঐক্য পথ ও পন্থা" কিতাবটি এর মাঝে অন্যতম।
মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুল মালেক হাফিজাহুল্লাহ সুন্দর ও ভারসাম্যপূর্ণ ভাবে এই মতভেদপূর্ণ বিষয় সঠিক পন্থা নিয়ে দালিলিক আলোচনা করেছেন।
কিতাবটিতে যা রয়েছে:-
২০৬ পৃষ্ঠার কিতাবটিতে মোট ছয়টি পরিচ্ছেদ রয়েছে। পরিচ্ছেদ শুরু করার পূর্বে ঐক্য ও সংহতি এবং সম্প্রীতির গুরুত্ব নিয়ে ভূমিকা লিখেন। ভূমিকায় কোরআন ও হাদিসের মাধ্যমে ঐক্য রক্ষার গুরুত্ব আলোচনা করার পর আয়াত থেকে মূল শিক্ষা কি সেটাও বর্ণনা করেছেন। বিচ্ছিন্নতার ব্যাপারে কোরআন ও হাদিসের কঠোর হুঁশিয়ারি উল্লেখের পর এটাও স্পষ্ট করেছেন যে, আহলুস সুন্নাহ ওয়াল-জামাআতের ইমামগণের মাঝে শাখাগত বিষয়ে দলিলের ভিত্তিতে মতপার্থক্য আয়াতের হুঁশিয়ারির আওতাভুক্ত নয়। এ কারণেই হাজারও মতপার্থক্যের পরও তারা একতাবদ্ধ ছিলেন।
প্রথম পরিচ্ছেদ:- (৩৯-৫৮) এই পরিচ্ছেদে দুটি শিরোনাম নিয়ে আলোচনা। যাতে আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাআর পরিচয় ও বৈশিষ্ট্যের ক্ষেত্রে বুনিয়াদি কিছু হাদিস এবং এই বিষয়ে মনীষীদের উপদেশ রয়েছে। এরপর জানা যাবে মতভেদ কখন বিভেদে পরিণত পরিণত হয়। সেইসাথে ঐক্যের পরিপন্থী মনে করা কিছু বিষয়কে ৫৮ নং পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেছেন। যা মূলত ঐক্যের প্রতীক।
দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ:- (৬১-১১০) এই পরিচ্ছেদ মূলত একটি শিরোনাম নিয়ে সাজানো। এখানে সুন্নাহ এর ভিন্নতা এবং মতভেদ এর কারণ বিষয়ে কিছু কিতাবের নাম দেয়া হয়েছে। লেখক বলেন, "যদি কেউ এর মধ্যে যে কোনো একটি কিতাব বুঝে পড়ে, তাহলে সে বলতে বাধ্য হবে যে ইমামগণের মাঝে যেসব বিষয়ে মতপার্থক্য হয়েছে, সেখানে বাস্তবে মতপার্থক্য হওয়া অনিবার্য ছিল।"
এই পরিচ্ছেদে বর্তমান সময়ে যারা আহলে হাদিস বা সালাফি নামে পরিচিত হাদিস অনুসারী ভাইদের পারষ্পরিক মাসালাগত কিছু মতপার্থক্য উদাহরণসহ উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও শাখাগত মাসালা বিষয়ক কিছু কিতাবের সারসংক্ষেপ এনেছেন। পরিচ্ছেদের শেষে বর্তমান সময়ের কিছু আকাবির ও মাশায়েখদের কর্মপন্থা ও পরামর্শ কি সেই আলোচনা হয়েছে।
যাদের বক্তব্য উল্লেখ করা হয়েছে:-
১/ মুফতি মোহাম্মদ শফি রহিমাহুল্লাহ।
২/ শায়েখ হাসান আলবান্না রহিমাহুল্লাহ।
৩/ শায়েখ আল-উসাইমীন রহিমাহুল্লাহ।
৪/ ড. নাসির ইবনে আব্দুল কারীম।
৫/ শাইখ আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ বিন সালেহ আল মু'তায
৬/ মাওলানা মুহাম্মাদ তাকী উসমানী হাফিযাহুল্লাহ প্রমুখ।
তৃতীয় পরিচ্ছেদ:- (১১৪-১৪৬) এই পরিচ্ছেদে মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের একটি প্রতীক নামাজ বিষয়ে আলোচনা করেছেন। নামাজ আদায়ের ভিন্ন ভিন্ন সুন্নাহ এর ব্যাপারে করণীয়। আলেম ও মসজিদের ইমামদের সাধারণ মানুষের সাথে মতভেদ পূর্ণ বিষয়ে আচরণ কি হবে? সে বিষয়ে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। আরো রয়েছে প্রসিদ্ধ কিছু হাদিস ও ফিকাহ গ্রন্থ ও গ্রন্থকারের নাম।
চতুর্থ পরিচ্ছেদ:- (১৪৯-১৭৭)এই পরিচ্ছেদে শাখাগত বিষয়ে কড়াকড়ি- বাড়াবাড়ির কারণ কিছুটা বিস্তারিত আকারে আলোচনা করেছেন। তিনি এখানে এই বিষয়ে অনেক কারণের মাঝে "দশটি কারণ" উল্লেখ করেছেন।
পঞ্চম পরিচ্ছেদ:- (১৮১-১৮৬) এখানে রুচি ও কর্মের পার্থক্যের বিষয়ে উল্লেখের পর আলেমদের মাঝে মতভেদ হলে সাধারণ মানুষের করণীয় বিষয়ক আলোচনা রয়েছে।
ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ:-(১৯০-১৯৯) এই পরিচ্ছেদে মূলত তিনটি প্রশ্নের উত্তর নিয়ে আলোচনা। হক চেনার উপায়, সুন্নাহ পালনের ক্ষেত্রে হাঙ্গামার ক্ষতি ও اذا صح الحديث فهو مذهبي ( ইজা সাহহাল হাদিসু ফাহুয়া মাযহাবী) শীর্ষক উক্তিটির মর্ম বিষয়ক ছিল তিনটি প্রশ্ন।
মোটকথা, বইটি অধ্যায়নে জানা যাবে যে, শুধুমাত্র আহলে হাদীস ভাইদের বিরোধিতার জন্য খেলাফে সুন্নাত আমল কে আঁকড়ে ধরা যেমন নিন্দনীয়, তেমনি হাদিস পালনের নাম দিয়ে প্রমাণিত ও সুন্নাহ সম্মত আমল কে বাতিল বলাও দূষণীয়। অনুরূপভাবে "হাদিসের কিতাব সাধারণের জন্য পড়া জায়েজ নয়" এ জাতীয় কথা পরিহার করে তাদের জন্য উপযোগী কিতাবসমূহ পড়ার সঠিক নিয়ম ও পন্থা বলে দেওয়া যেমন উচিত, তেমনি হাদিস অনুসরণের নাম বলে সাহাবীদের থেকে স্বীকৃত নয় এমন বিষয় আমলে চলে আসছে কিনা সেই বিষয়েও লক্ষ্য রাখা উচিত।
যে কোনো ভিন্ন আমলের দাওয়াত গ্রহণের পূর্বে সমাজ এবং আমি যে আমলের উপর এতদিন ছিলাম সেটা কোন প্রমাণিত সুন্নাহসম্মত আমল কি না, এটা যাচাইয়ের পর দাওয়াত গ্রহণ করা উচিত। সর্বপ্রকার আসাবিয়্যাত (দলীয়প্রীতি) থেকে মুক্ত হয়ে বুঝে কিতাবটি অধ্যায়ন করলে ইখতেলাফী বিষয়ে স্বচ্ছ ভাবনা এবং ইফতিরাকের (বিচ্ছিন্নতা) মানদণ্ড সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান কিছুটা জানা যাবে ইনশাআল্লাহ।
মনে রাখতে হবে, সাহাবীদের মাঝে যে বিষয়ে মতভেদ হয়েছে আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও যাকে দূষণীয় বলেননি, সেই মতভেদ অতীতেও ছিল, বর্তমানেও আছে এবং কেয়ামত পর্যন্ত থাকবে। সুতরাং সেটাকে বাতিল বলে তা পরিহারে বাধ্য করা এবং এটাকে কেন্দ্র করে ঝগড়া-বিবাদ, ভিন্ন মসজিদ নির্মাণ ও মসজিদ ভাঙ্গা নিন্দনীয় ও অবশ্য পরিহারযোগ্য ।
ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ মূলনীতি এই যে, 'মুয়ালাত' বা বন্ধুত্বের মানদন্ড হচ্ছে ঈমান ও ইসলাম। আর 'মুয়াদাত' বা শত্রুতার মানদন্ড হচ্ছে শিরিক ও কুফর। যে কেউ শরীয়তের দৃষ্টিতে মুসলিম উম্মাহর অন্তর্ভুক্ত সে অন্য কোন বৈশিষ্ট্য ছাড়া শুধু মুমিন ও মুসলিম হওয়ার কারণেই মুয়ালাত ও বন্ধুত্বের এবং সকল ইসলামী অধিকার পাওয়ার হক রাখে। আর যে এই মানদণ্ডে উত্তীর্ণ নয়, অর্থাৎ যে শিরিক বা কুফরে লিপ্ত তার সাথে 'মুয়ালাত' বা বন্ধুত্ব হারাম; বরং তা কুফরের আলামত। ( পৃ: ১৭)
লেখক-মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক হাফিযাহুল্লাহ
প্রকাশক- মারকাযুদ দাওয়াহ আল-ইসলামিয়া।
পূর্বকথা:-
মুসলিম উম্মাহর এই দুর্যোগে একটি মারাত্মক ব্যাধি হচ্ছে ফিকহী মাসালা নিয়ে ঝগড়া-বিবাদ। বর্তমানে মুসলিমরা যখন কাফের আগ্রাসী বাহিনী দ্বারা আক্রান্ত; মুসলিম রাষ্ট্রগুলো সর্বগ্রাসী ষড়যন্ত্রের শিকার; তখন অনেককে দেখা যায় বিভিন্ন মুস্তাহাব আমল যেমন রফয়ে ইয়াদা'য়ন, দোয়ায়ে কুনুত, আমিন জোরে বলা ইত্যাদি বিষয়ে সাধারণের সামনে বিতর্ক-বাহাস নিয়ে ব্যস্ত।
অপরদিকে কিছু মুসলিম ভাই নিজেদের জানা সীমিত কিছু হাদিস অনুযায়ী অন্য কাউকে আমল না করতে দেখলে তাদের নামাজকে ভুল এবং অনর্থক, এমনকি তাদেরকে হাদিস অস্বীকারকারী সাব্যস্ত করে কাফের প্রমাণ করায় ব্যস্ত! (আল্লাহ সঠিক দ্বীনি কাজে সকলকে ফিরিয়ে দিন, আমীন)
এমন অবস্থায় এই ফিকহী মাসআলায় কড়াকড়ি-বাড়াবাড়ি ব্যতীত সম্প্রীতি রক্ষা ও সঠিক সুন্নাহের প্রতি আহবানের যে সকল কিতাব রয়েছে "উম্মাহর ঐক্য পথ ও পন্থা" কিতাবটি এর মাঝে অন্যতম।
মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুল মালেক হাফিজাহুল্লাহ সুন্দর ও ভারসাম্যপূর্ণ ভাবে এই মতভেদপূর্ণ বিষয় সঠিক পন্থা নিয়ে দালিলিক আলোচনা করেছেন।
কিতাবটিতে যা রয়েছে:-
২০৬ পৃষ্ঠার কিতাবটিতে মোট ছয়টি পরিচ্ছেদ রয়েছে। পরিচ্ছেদ শুরু করার পূর্বে ঐক্য ও সংহতি এবং সম্প্রীতির গুরুত্ব নিয়ে ভূমিকা লিখেন। ভূমিকায় কোরআন ও হাদিসের মাধ্যমে ঐক্য রক্ষার গুরুত্ব আলোচনা করার পর আয়াত থেকে মূল শিক্ষা কি সেটাও বর্ণনা করেছেন। বিচ্ছিন্নতার ব্যাপারে কোরআন ও হাদিসের কঠোর হুঁশিয়ারি উল্লেখের পর এটাও স্পষ্ট করেছেন যে, আহলুস সুন্নাহ ওয়াল-জামাআতের ইমামগণের মাঝে শাখাগত বিষয়ে দলিলের ভিত্তিতে মতপার্থক্য আয়াতের হুঁশিয়ারির আওতাভুক্ত নয়। এ কারণেই হাজারও মতপার্থক্যের পরও তারা একতাবদ্ধ ছিলেন।
প্রথম পরিচ্ছেদ:- (৩৯-৫৮) এই পরিচ্ছেদে দুটি শিরোনাম নিয়ে আলোচনা। যাতে আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাআর পরিচয় ও বৈশিষ্ট্যের ক্ষেত্রে বুনিয়াদি কিছু হাদিস এবং এই বিষয়ে মনীষীদের উপদেশ রয়েছে। এরপর জানা যাবে মতভেদ কখন বিভেদে পরিণত পরিণত হয়। সেইসাথে ঐক্যের পরিপন্থী মনে করা কিছু বিষয়কে ৫৮ নং পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেছেন। যা মূলত ঐক্যের প্রতীক।
দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ:- (৬১-১১০) এই পরিচ্ছেদ মূলত একটি শিরোনাম নিয়ে সাজানো। এখানে সুন্নাহ এর ভিন্নতা এবং মতভেদ এর কারণ বিষয়ে কিছু কিতাবের নাম দেয়া হয়েছে। লেখক বলেন, "যদি কেউ এর মধ্যে যে কোনো একটি কিতাব বুঝে পড়ে, তাহলে সে বলতে বাধ্য হবে যে ইমামগণের মাঝে যেসব বিষয়ে মতপার্থক্য হয়েছে, সেখানে বাস্তবে মতপার্থক্য হওয়া অনিবার্য ছিল।"
এই পরিচ্ছেদে বর্তমান সময়ে যারা আহলে হাদিস বা সালাফি নামে পরিচিত হাদিস অনুসারী ভাইদের পারষ্পরিক মাসালাগত কিছু মতপার্থক্য উদাহরণসহ উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও শাখাগত মাসালা বিষয়ক কিছু কিতাবের সারসংক্ষেপ এনেছেন। পরিচ্ছেদের শেষে বর্তমান সময়ের কিছু আকাবির ও মাশায়েখদের কর্মপন্থা ও পরামর্শ কি সেই আলোচনা হয়েছে।
যাদের বক্তব্য উল্লেখ করা হয়েছে:-
১/ মুফতি মোহাম্মদ শফি রহিমাহুল্লাহ।
২/ শায়েখ হাসান আলবান্না রহিমাহুল্লাহ।
৩/ শায়েখ আল-উসাইমীন রহিমাহুল্লাহ।
৪/ ড. নাসির ইবনে আব্দুল কারীম।
৫/ শাইখ আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ বিন সালেহ আল মু'তায
৬/ মাওলানা মুহাম্মাদ তাকী উসমানী হাফিযাহুল্লাহ প্রমুখ।
তৃতীয় পরিচ্ছেদ:- (১১৪-১৪৬) এই পরিচ্ছেদে মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের একটি প্রতীক নামাজ বিষয়ে আলোচনা করেছেন। নামাজ আদায়ের ভিন্ন ভিন্ন সুন্নাহ এর ব্যাপারে করণীয়। আলেম ও মসজিদের ইমামদের সাধারণ মানুষের সাথে মতভেদ পূর্ণ বিষয়ে আচরণ কি হবে? সে বিষয়ে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। আরো রয়েছে প্রসিদ্ধ কিছু হাদিস ও ফিকাহ গ্রন্থ ও গ্রন্থকারের নাম।
চতুর্থ পরিচ্ছেদ:- (১৪৯-১৭৭)এই পরিচ্ছেদে শাখাগত বিষয়ে কড়াকড়ি- বাড়াবাড়ির কারণ কিছুটা বিস্তারিত আকারে আলোচনা করেছেন। তিনি এখানে এই বিষয়ে অনেক কারণের মাঝে "দশটি কারণ" উল্লেখ করেছেন।
পঞ্চম পরিচ্ছেদ:- (১৮১-১৮৬) এখানে রুচি ও কর্মের পার্থক্যের বিষয়ে উল্লেখের পর আলেমদের মাঝে মতভেদ হলে সাধারণ মানুষের করণীয় বিষয়ক আলোচনা রয়েছে।
ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ:-(১৯০-১৯৯) এই পরিচ্ছেদে মূলত তিনটি প্রশ্নের উত্তর নিয়ে আলোচনা। হক চেনার উপায়, সুন্নাহ পালনের ক্ষেত্রে হাঙ্গামার ক্ষতি ও اذا صح الحديث فهو مذهبي ( ইজা সাহহাল হাদিসু ফাহুয়া মাযহাবী) শীর্ষক উক্তিটির মর্ম বিষয়ক ছিল তিনটি প্রশ্ন।
মোটকথা, বইটি অধ্যায়নে জানা যাবে যে, শুধুমাত্র আহলে হাদীস ভাইদের বিরোধিতার জন্য খেলাফে সুন্নাত আমল কে আঁকড়ে ধরা যেমন নিন্দনীয়, তেমনি হাদিস পালনের নাম দিয়ে প্রমাণিত ও সুন্নাহ সম্মত আমল কে বাতিল বলাও দূষণীয়। অনুরূপভাবে "হাদিসের কিতাব সাধারণের জন্য পড়া জায়েজ নয়" এ জাতীয় কথা পরিহার করে তাদের জন্য উপযোগী কিতাবসমূহ পড়ার সঠিক নিয়ম ও পন্থা বলে দেওয়া যেমন উচিত, তেমনি হাদিস অনুসরণের নাম বলে সাহাবীদের থেকে স্বীকৃত নয় এমন বিষয় আমলে চলে আসছে কিনা সেই বিষয়েও লক্ষ্য রাখা উচিত।
যে কোনো ভিন্ন আমলের দাওয়াত গ্রহণের পূর্বে সমাজ এবং আমি যে আমলের উপর এতদিন ছিলাম সেটা কোন প্রমাণিত সুন্নাহসম্মত আমল কি না, এটা যাচাইয়ের পর দাওয়াত গ্রহণ করা উচিত। সর্বপ্রকার আসাবিয়্যাত (দলীয়প্রীতি) থেকে মুক্ত হয়ে বুঝে কিতাবটি অধ্যায়ন করলে ইখতেলাফী বিষয়ে স্বচ্ছ ভাবনা এবং ইফতিরাকের (বিচ্ছিন্নতা) মানদণ্ড সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান কিছুটা জানা যাবে ইনশাআল্লাহ।
মনে রাখতে হবে, সাহাবীদের মাঝে যে বিষয়ে মতভেদ হয়েছে আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও যাকে দূষণীয় বলেননি, সেই মতভেদ অতীতেও ছিল, বর্তমানেও আছে এবং কেয়ামত পর্যন্ত থাকবে। সুতরাং সেটাকে বাতিল বলে তা পরিহারে বাধ্য করা এবং এটাকে কেন্দ্র করে ঝগড়া-বিবাদ, ভিন্ন মসজিদ নির্মাণ ও মসজিদ ভাঙ্গা নিন্দনীয় ও অবশ্য পরিহারযোগ্য ।
ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ মূলনীতি এই যে, 'মুয়ালাত' বা বন্ধুত্বের মানদন্ড হচ্ছে ঈমান ও ইসলাম। আর 'মুয়াদাত' বা শত্রুতার মানদন্ড হচ্ছে শিরিক ও কুফর। যে কেউ শরীয়তের দৃষ্টিতে মুসলিম উম্মাহর অন্তর্ভুক্ত সে অন্য কোন বৈশিষ্ট্য ছাড়া শুধু মুমিন ও মুসলিম হওয়ার কারণেই মুয়ালাত ও বন্ধুত্বের এবং সকল ইসলামী অধিকার পাওয়ার হক রাখে। আর যে এই মানদণ্ডে উত্তীর্ণ নয়, অর্থাৎ যে শিরিক বা কুফরে লিপ্ত তার সাথে 'মুয়ালাত' বা বন্ধুত্ব হারাম; বরং তা কুফরের আলামত। ( পৃ: ১৭)
উম্মাহর ঐক্য পথ ও পন্থা
160 BDT
1
বই- বই- উম্মাহর ঐক্য পথ ও পন্থা
লেখক-মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক হাফিযাহুল্লাহ
প্রকাশক- মারকাযুদ দাওয়াহ আল-ইসলামিয়া।
পূর্বকথা:-
মুসলিম উম্মাহর এই দুর্যোগে একটি মারাত্মক ব্যাধি হচ্ছে ফিকহী মাসালা নিয়ে ঝগড়া-বিবাদ। বর্তমানে মুসলিমরা যখন কাফের আগ্রাসী বাহিনী দ্বারা আক্রান্ত; মুসলিম রাষ্ট্রগুলো সর্বগ্রাসী ষড়যন্ত্রের শিকার; তখন অনেককে দেখা যায় বিভিন্ন মুস্তাহাব আমল যেমন রফয়ে ইয়াদা'য়ন, দোয়ায়ে কুনুত, আমিন জোরে বলা ইত্যাদি বিষয়ে সাধারণের সামনে বিতর্ক-বাহাস নিয়ে ব্যস্ত।
অপরদিকে কিছু মুসলিম ভাই নিজেদের জানা সীমিত কিছু হাদিস অনুযায়ী অন্য কাউকে আমল না করতে দেখলে তাদের নামাজকে ভুল এবং অনর্থক, এমনকি তাদেরকে হাদিস অস্বীকারকারী সাব্যস্ত করে কাফের প্রমাণ করায় ব্যস্ত! (আল্লাহ সঠিক দ্বীনি কাজে সকলকে ফিরিয়ে দিন, আমীন)
এমন অবস্থায় এই ফিকহী মাসআলায় কড়াকড়ি-বাড়াবাড়ি ব্যতীত সম্প্রীতি রক্ষা ও সঠিক সুন্নাহের প্রতি আহবানের যে সকল কিতাব রয়েছে "উম্মাহর ঐক্য পথ ও পন্থা" কিতাবটি এর মাঝে অন্যতম।
মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুল মালেক হাফিজাহুল্লাহ সুন্দর ও ভারসাম্যপূর্ণ ভাবে এই মতভেদপূর্ণ বিষয় সঠিক পন্থা নিয়ে দালিলিক আলোচনা করেছেন।
কিতাবটিতে যা রয়েছে:-
২০৬ পৃষ্ঠার কিতাবটিতে মোট ছয়টি পরিচ্ছেদ রয়েছে। পরিচ্ছেদ শুরু করার পূর্বে ঐক্য ও সংহতি এবং সম্প্রীতির গুরুত্ব নিয়ে ভূমিকা লিখেন। ভূমিকায় কোরআন ও হাদিসের মাধ্যমে ঐক্য রক্ষার গুরুত্ব আলোচনা করার পর আয়াত থেকে মূল শিক্ষা কি সেটাও বর্ণনা করেছেন। বিচ্ছিন্নতার ব্যাপারে কোরআন ও হাদিসের কঠোর হুঁশিয়ারি উল্লেখের পর এটাও স্পষ্ট করেছেন যে, আহলুস সুন্নাহ ওয়াল-জামাআতের ইমামগণের মাঝে শাখাগত বিষয়ে দলিলের ভিত্তিতে মতপার্থক্য আয়াতের হুঁশিয়ারির আওতাভুক্ত নয়। এ কারণেই হাজারও মতপার্থক্যের পরও তারা একতাবদ্ধ ছিলেন।
প্রথম পরিচ্ছেদ:- (৩৯-৫৮) এই পরিচ্ছেদে দুটি শিরোনাম নিয়ে আলোচনা। যাতে আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাআর পরিচয় ও বৈশিষ্ট্যের ক্ষেত্রে বুনিয়াদি কিছু হাদিস এবং এই বিষয়ে মনীষীদের উপদেশ রয়েছে। এরপর জানা যাবে মতভেদ কখন বিভেদে পরিণত পরিণত হয়। সেইসাথে ঐক্যের পরিপন্থী মনে করা কিছু বিষয়কে ৫৮ নং পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেছেন। যা মূলত ঐক্যের প্রতীক।
দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ:- (৬১-১১০) এই পরিচ্ছেদ মূলত একটি শিরোনাম নিয়ে সাজানো। এখানে সুন্নাহ এর ভিন্নতা এবং মতভেদ এর কারণ বিষয়ে কিছু কিতাবের নাম দেয়া হয়েছে। লেখক বলেন, "যদি কেউ এর মধ্যে যে কোনো একটি কিতাব বুঝে পড়ে, তাহলে সে বলতে বাধ্য হবে যে ইমামগণের মাঝে যেসব বিষয়ে মতপার্থক্য হয়েছে, সেখানে বাস্তবে মতপার্থক্য হওয়া অনিবার্য ছিল।"
এই পরিচ্ছেদে বর্তমান সময়ে যারা আহলে হাদিস বা সালাফি নামে পরিচিত হাদিস অনুসারী ভাইদের পারষ্পরিক মাসালাগত কিছু মতপার্থক্য উদাহরণসহ উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও শাখাগত মাসালা বিষয়ক কিছু কিতাবের সারসংক্ষেপ এনেছেন। পরিচ্ছেদের শেষে বর্তমান সময়ের কিছু আকাবির ও মাশায়েখদের কর্মপন্থা ও পরামর্শ কি সেই আলোচনা হয়েছে।
যাদের বক্তব্য উল্লেখ করা হয়েছে:-
১/ মুফতি মোহাম্মদ শফি রহিমাহুল্লাহ।
২/ শায়েখ হাসান আলবান্না রহিমাহুল্লাহ।
৩/ শায়েখ আল-উসাইমীন রহিমাহুল্লাহ।
৪/ ড. নাসির ইবনে আব্দুল কারীম।
৫/ শাইখ আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ বিন সালেহ আল মু'তায
৬/ মাওলানা মুহাম্মাদ তাকী উসমানী হাফিযাহুল্লাহ প্রমুখ।
তৃতীয় পরিচ্ছেদ:- (১১৪-১৪৬) এই পরিচ্ছেদে মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের একটি প্রতীক নামাজ বিষয়ে আলোচনা করেছেন। নামাজ আদায়ের ভিন্ন ভিন্ন সুন্নাহ এর ব্যাপারে করণীয়। আলেম ও মসজিদের ইমামদের সাধারণ মানুষের সাথে মতভেদ পূর্ণ বিষয়ে আচরণ কি হবে? সে বিষয়ে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। আরো রয়েছে প্রসিদ্ধ কিছু হাদিস ও ফিকাহ গ্রন্থ ও গ্রন্থকারের নাম।
চতুর্থ পরিচ্ছেদ:- (১৪৯-১৭৭)এই পরিচ্ছেদে শাখাগত বিষয়ে কড়াকড়ি- বাড়াবাড়ির কারণ কিছুটা বিস্তারিত আকারে আলোচনা করেছেন। তিনি এখানে এই বিষয়ে অনেক কারণের মাঝে "দশটি কারণ" উল্লেখ করেছেন।
পঞ্চম পরিচ্ছেদ:- (১৮১-১৮৬) এখানে রুচি ও কর্মের পার্থক্যের বিষয়ে উল্লেখের পর আলেমদের মাঝে মতভেদ হলে সাধারণ মানুষের করণীয় বিষয়ক আলোচনা রয়েছে।
ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ:-(১৯০-১৯৯) এই পরিচ্ছেদে মূলত তিনটি প্রশ্নের উত্তর নিয়ে আলোচনা। হক চেনার উপায়, সুন্নাহ পালনের ক্ষেত্রে হাঙ্গামার ক্ষতি ও اذا صح الحديث فهو مذهبي ( ইজা সাহহাল হাদিসু ফাহুয়া মাযহাবী) শীর্ষক উক্তিটির মর্ম বিষয়ক ছিল তিনটি প্রশ্ন।
মোটকথা, বইটি অধ্যায়নে জানা যাবে যে, শুধুমাত্র আহলে হাদীস ভাইদের বিরোধিতার জন্য খেলাফে সুন্নাত আমল কে আঁকড়ে ধরা যেমন নিন্দনীয়, তেমনি হাদিস পালনের নাম দিয়ে প্রমাণিত ও সুন্নাহ সম্মত আমল কে বাতিল বলাও দূষণীয়। অনুরূপভাবে "হাদিসের কিতাব সাধারণের জন্য পড়া জায়েজ নয়" এ জাতীয় কথা পরিহার করে তাদের জন্য উপযোগী কিতাবসমূহ পড়ার সঠিক নিয়ম ও পন্থা বলে দেওয়া যেমন উচিত, তেমনি হাদিস অনুসরণের নাম বলে সাহাবীদের থেকে স্বীকৃত নয় এমন বিষয় আমলে চলে আসছে কিনা সেই বিষয়েও লক্ষ্য রাখা উচিত।
যে কোনো ভিন্ন আমলের দাওয়াত গ্রহণের পূর্বে সমাজ এবং আমি যে আমলের উপর এতদিন ছিলাম সেটা কোন প্রমাণিত সুন্নাহসম্মত আমল কি না, এটা যাচাইয়ের পর দাওয়াত গ্রহণ করা উচিত। সর্বপ্রকার আসাবিয়্যাত (দলীয়প্রীতি) থেকে মুক্ত হয়ে বুঝে কিতাবটি অধ্যায়ন করলে ইখতেলাফী বিষয়ে স্বচ্ছ ভাবনা এবং ইফতিরাকের (বিচ্ছিন্নতা) মানদণ্ড সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান কিছুটা জানা যাবে ইনশাআল্লাহ।
মনে রাখতে হবে, সাহাবীদের মাঝে যে বিষয়ে মতভেদ হয়েছে আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও যাকে দূষণীয় বলেননি, সেই মতভেদ অতীতেও ছিল, বর্তমানেও আছে এবং কেয়ামত পর্যন্ত থাকবে। সুতরাং সেটাকে বাতিল বলে তা পরিহারে বাধ্য করা এবং এটাকে কেন্দ্র করে ঝগড়া-বিবাদ, ভিন্ন মসজিদ নির্মাণ ও মসজিদ ভাঙ্গা নিন্দনীয় ও অবশ্য পরিহারযোগ্য ।
ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ মূলনীতি এই যে, 'মুয়ালাত' বা বন্ধুত্বের মানদন্ড হচ্ছে ঈমান ও ইসলাম। আর 'মুয়াদাত' বা শত্রুতার মানদন্ড হচ্ছে শিরিক ও কুফর। যে কেউ শরীয়তের দৃষ্টিতে মুসলিম উম্মাহর অন্তর্ভুক্ত সে অন্য কোন বৈশিষ্ট্য ছাড়া শুধু মুমিন ও মুসলিম হওয়ার কারণেই মুয়ালাত ও বন্ধুত্বের এবং সকল ইসলামী অধিকার পাওয়ার হক রাখে। আর যে এই মানদণ্ডে উত্তীর্ণ নয়, অর্থাৎ যে শিরিক বা কুফরে লিপ্ত তার সাথে 'মুয়ালাত' বা বন্ধুত্ব হারাম; বরং তা কুফরের আলামত। ( পৃ: ১৭)
লেখক-মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক হাফিযাহুল্লাহ
প্রকাশক- মারকাযুদ দাওয়াহ আল-ইসলামিয়া।
পূর্বকথা:-
মুসলিম উম্মাহর এই দুর্যোগে একটি মারাত্মক ব্যাধি হচ্ছে ফিকহী মাসালা নিয়ে ঝগড়া-বিবাদ। বর্তমানে মুসলিমরা যখন কাফের আগ্রাসী বাহিনী দ্বারা আক্রান্ত; মুসলিম রাষ্ট্রগুলো সর্বগ্রাসী ষড়যন্ত্রের শিকার; তখন অনেককে দেখা যায় বিভিন্ন মুস্তাহাব আমল যেমন রফয়ে ইয়াদা'য়ন, দোয়ায়ে কুনুত, আমিন জোরে বলা ইত্যাদি বিষয়ে সাধারণের সামনে বিতর্ক-বাহাস নিয়ে ব্যস্ত।
অপরদিকে কিছু মুসলিম ভাই নিজেদের জানা সীমিত কিছু হাদিস অনুযায়ী অন্য কাউকে আমল না করতে দেখলে তাদের নামাজকে ভুল এবং অনর্থক, এমনকি তাদেরকে হাদিস অস্বীকারকারী সাব্যস্ত করে কাফের প্রমাণ করায় ব্যস্ত! (আল্লাহ সঠিক দ্বীনি কাজে সকলকে ফিরিয়ে দিন, আমীন)
এমন অবস্থায় এই ফিকহী মাসআলায় কড়াকড়ি-বাড়াবাড়ি ব্যতীত সম্প্রীতি রক্ষা ও সঠিক সুন্নাহের প্রতি আহবানের যে সকল কিতাব রয়েছে "উম্মাহর ঐক্য পথ ও পন্থা" কিতাবটি এর মাঝে অন্যতম।
মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুল মালেক হাফিজাহুল্লাহ সুন্দর ও ভারসাম্যপূর্ণ ভাবে এই মতভেদপূর্ণ বিষয় সঠিক পন্থা নিয়ে দালিলিক আলোচনা করেছেন।
কিতাবটিতে যা রয়েছে:-
২০৬ পৃষ্ঠার কিতাবটিতে মোট ছয়টি পরিচ্ছেদ রয়েছে। পরিচ্ছেদ শুরু করার পূর্বে ঐক্য ও সংহতি এবং সম্প্রীতির গুরুত্ব নিয়ে ভূমিকা লিখেন। ভূমিকায় কোরআন ও হাদিসের মাধ্যমে ঐক্য রক্ষার গুরুত্ব আলোচনা করার পর আয়াত থেকে মূল শিক্ষা কি সেটাও বর্ণনা করেছেন। বিচ্ছিন্নতার ব্যাপারে কোরআন ও হাদিসের কঠোর হুঁশিয়ারি উল্লেখের পর এটাও স্পষ্ট করেছেন যে, আহলুস সুন্নাহ ওয়াল-জামাআতের ইমামগণের মাঝে শাখাগত বিষয়ে দলিলের ভিত্তিতে মতপার্থক্য আয়াতের হুঁশিয়ারির আওতাভুক্ত নয়। এ কারণেই হাজারও মতপার্থক্যের পরও তারা একতাবদ্ধ ছিলেন।
প্রথম পরিচ্ছেদ:- (৩৯-৫৮) এই পরিচ্ছেদে দুটি শিরোনাম নিয়ে আলোচনা। যাতে আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাআর পরিচয় ও বৈশিষ্ট্যের ক্ষেত্রে বুনিয়াদি কিছু হাদিস এবং এই বিষয়ে মনীষীদের উপদেশ রয়েছে। এরপর জানা যাবে মতভেদ কখন বিভেদে পরিণত পরিণত হয়। সেইসাথে ঐক্যের পরিপন্থী মনে করা কিছু বিষয়কে ৫৮ নং পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেছেন। যা মূলত ঐক্যের প্রতীক।
দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ:- (৬১-১১০) এই পরিচ্ছেদ মূলত একটি শিরোনাম নিয়ে সাজানো। এখানে সুন্নাহ এর ভিন্নতা এবং মতভেদ এর কারণ বিষয়ে কিছু কিতাবের নাম দেয়া হয়েছে। লেখক বলেন, "যদি কেউ এর মধ্যে যে কোনো একটি কিতাব বুঝে পড়ে, তাহলে সে বলতে বাধ্য হবে যে ইমামগণের মাঝে যেসব বিষয়ে মতপার্থক্য হয়েছে, সেখানে বাস্তবে মতপার্থক্য হওয়া অনিবার্য ছিল।"
এই পরিচ্ছেদে বর্তমান সময়ে যারা আহলে হাদিস বা সালাফি নামে পরিচিত হাদিস অনুসারী ভাইদের পারষ্পরিক মাসালাগত কিছু মতপার্থক্য উদাহরণসহ উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও শাখাগত মাসালা বিষয়ক কিছু কিতাবের সারসংক্ষেপ এনেছেন। পরিচ্ছেদের শেষে বর্তমান সময়ের কিছু আকাবির ও মাশায়েখদের কর্মপন্থা ও পরামর্শ কি সেই আলোচনা হয়েছে।
যাদের বক্তব্য উল্লেখ করা হয়েছে:-
১/ মুফতি মোহাম্মদ শফি রহিমাহুল্লাহ।
২/ শায়েখ হাসান আলবান্না রহিমাহুল্লাহ।
৩/ শায়েখ আল-উসাইমীন রহিমাহুল্লাহ।
৪/ ড. নাসির ইবনে আব্দুল কারীম।
৫/ শাইখ আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ বিন সালেহ আল মু'তায
৬/ মাওলানা মুহাম্মাদ তাকী উসমানী হাফিযাহুল্লাহ প্রমুখ।
তৃতীয় পরিচ্ছেদ:- (১১৪-১৪৬) এই পরিচ্ছেদে মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের একটি প্রতীক নামাজ বিষয়ে আলোচনা করেছেন। নামাজ আদায়ের ভিন্ন ভিন্ন সুন্নাহ এর ব্যাপারে করণীয়। আলেম ও মসজিদের ইমামদের সাধারণ মানুষের সাথে মতভেদ পূর্ণ বিষয়ে আচরণ কি হবে? সে বিষয়ে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। আরো রয়েছে প্রসিদ্ধ কিছু হাদিস ও ফিকাহ গ্রন্থ ও গ্রন্থকারের নাম।
চতুর্থ পরিচ্ছেদ:- (১৪৯-১৭৭)এই পরিচ্ছেদে শাখাগত বিষয়ে কড়াকড়ি- বাড়াবাড়ির কারণ কিছুটা বিস্তারিত আকারে আলোচনা করেছেন। তিনি এখানে এই বিষয়ে অনেক কারণের মাঝে "দশটি কারণ" উল্লেখ করেছেন।
পঞ্চম পরিচ্ছেদ:- (১৮১-১৮৬) এখানে রুচি ও কর্মের পার্থক্যের বিষয়ে উল্লেখের পর আলেমদের মাঝে মতভেদ হলে সাধারণ মানুষের করণীয় বিষয়ক আলোচনা রয়েছে।
ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ:-(১৯০-১৯৯) এই পরিচ্ছেদে মূলত তিনটি প্রশ্নের উত্তর নিয়ে আলোচনা। হক চেনার উপায়, সুন্নাহ পালনের ক্ষেত্রে হাঙ্গামার ক্ষতি ও اذا صح الحديث فهو مذهبي ( ইজা সাহহাল হাদিসু ফাহুয়া মাযহাবী) শীর্ষক উক্তিটির মর্ম বিষয়ক ছিল তিনটি প্রশ্ন।
মোটকথা, বইটি অধ্যায়নে জানা যাবে যে, শুধুমাত্র আহলে হাদীস ভাইদের বিরোধিতার জন্য খেলাফে সুন্নাত আমল কে আঁকড়ে ধরা যেমন নিন্দনীয়, তেমনি হাদিস পালনের নাম দিয়ে প্রমাণিত ও সুন্নাহ সম্মত আমল কে বাতিল বলাও দূষণীয়। অনুরূপভাবে "হাদিসের কিতাব সাধারণের জন্য পড়া জায়েজ নয়" এ জাতীয় কথা পরিহার করে তাদের জন্য উপযোগী কিতাবসমূহ পড়ার সঠিক নিয়ম ও পন্থা বলে দেওয়া যেমন উচিত, তেমনি হাদিস অনুসরণের নাম বলে সাহাবীদের থেকে স্বীকৃত নয় এমন বিষয় আমলে চলে আসছে কিনা সেই বিষয়েও লক্ষ্য রাখা উচিত।
যে কোনো ভিন্ন আমলের দাওয়াত গ্রহণের পূর্বে সমাজ এবং আমি যে আমলের উপর এতদিন ছিলাম সেটা কোন প্রমাণিত সুন্নাহসম্মত আমল কি না, এটা যাচাইয়ের পর দাওয়াত গ্রহণ করা উচিত। সর্বপ্রকার আসাবিয়্যাত (দলীয়প্রীতি) থেকে মুক্ত হয়ে বুঝে কিতাবটি অধ্যায়ন করলে ইখতেলাফী বিষয়ে স্বচ্ছ ভাবনা এবং ইফতিরাকের (বিচ্ছিন্নতা) মানদণ্ড সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান কিছুটা জানা যাবে ইনশাআল্লাহ।
মনে রাখতে হবে, সাহাবীদের মাঝে যে বিষয়ে মতভেদ হয়েছে আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও যাকে দূষণীয় বলেননি, সেই মতভেদ অতীতেও ছিল, বর্তমানেও আছে এবং কেয়ামত পর্যন্ত থাকবে। সুতরাং সেটাকে বাতিল বলে তা পরিহারে বাধ্য করা এবং এটাকে কেন্দ্র করে ঝগড়া-বিবাদ, ভিন্ন মসজিদ নির্মাণ ও মসজিদ ভাঙ্গা নিন্দনীয় ও অবশ্য পরিহারযোগ্য ।
ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ মূলনীতি এই যে, 'মুয়ালাত' বা বন্ধুত্বের মানদন্ড হচ্ছে ঈমান ও ইসলাম। আর 'মুয়াদাত' বা শত্রুতার মানদন্ড হচ্ছে শিরিক ও কুফর। যে কেউ শরীয়তের দৃষ্টিতে মুসলিম উম্মাহর অন্তর্ভুক্ত সে অন্য কোন বৈশিষ্ট্য ছাড়া শুধু মুমিন ও মুসলিম হওয়ার কারণেই মুয়ালাত ও বন্ধুত্বের এবং সকল ইসলামী অধিকার পাওয়ার হক রাখে। আর যে এই মানদণ্ডে উত্তীর্ণ নয়, অর্থাৎ যে শিরিক বা কুফরে লিপ্ত তার সাথে 'মুয়ালাত' বা বন্ধুত্ব হারাম; বরং তা কুফরের আলামত। ( পৃ: ১৭)