উমর ইবনুল খাত্তাব রা. (১ম ও ২য় খণ্ড)
ইসলামের ইতিহাসে যেন গোটা এক রোমাঞ্চকর অধ্যায়। আদর্শ শাসনের অনবদ্য দৃষ্টান্তে সমগ্র পৃথিবীর নিকট আজও তিনি এক আইডল। ঠিক যেদিন উন্মুক্ত তরবারি হাতে নবীজির গর্দানচ্ছেদের উন্মত্ততায় নেমেছিলেন, সেদিনই ইসলামের অমৃতসুধা পান করে হয়ে গিয়েছিলেন ইসলামের বীরবাহু সৈনিক। নবীজির সোহবতে জন্ম নিয়েছিল যে ইসলামি রাষ্ট্রব্যবস্থা, আবু বাকরের হাত ধরে যে রাষ্ট্র পার করেছে শৈশবের কাঁচামিঠে দিনগুলো, উমারের সময়ে সেই রাষ্ট্রের যেন ছিল ষোড়শীর টালমাটাল তারুণ্য। তাঁর খেলাফত কালেই এই উম্মাহ পেয়েছিল অর্ধ-পৃথিবীর শাসনভার। সুশৃঙ্খল সমাজব্যবস্থা, সামরিক ইতিহাসের গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়ের আলোচনায় আজও 'উমার' নামটি উঠে আসে সবার আগে। নজরুলের ভাষ্যে- "অর্ধ পৃথিবী করেছ শাসন ধুলার তখতে বসি খেজুরপাতার প্রাসাদ তোমার বারে বারে গেছে খসি সাইমুম ঝড়ে পড়েছে কুটির, তুমি পড়নি ক’ নুয়ে। ঊর্ধ্বে যারা- পড়ছে তাহারা, তুমি ছিলে খাড়া ভূঁয়ে।" . ▪️প্রেক্ষাপটঃ উমর (রা.) হলেন ইতিহাসের এক স্বর্ণ-খোদিত নাম। ব্যক্তিত্বের মূর্ছনা আর লিডারশীপের বিচক্ষণতায় তিনি ইসলামী রাষ্ট্রের সীমানা ছড়িয়ে দিয়েছেন দিগ্বিদিক। তাঁর হাতেই প্রতিষ্ঠা পেয়েছে রাষ্ট্রীয় বহু অবকাঠামো। তাঁর তাক্বওয়া, নেতৃত্বের মুনশিয়ানা, জ্ঞানের দূরদর্শিতা মুসলিম উম্মাহর জন্য সৃষ্টি করেছে অনবদ্য ইতিহাস, বর্ণালী ঐতিহ্য। মহান এই ব্যক্তিত্বের জীবনের জানা-অজানা বিভিন্ন তথ্য ও তত্ত্ব, ঘটনাপ্রবাহ ও বৈশিষ্ট্য ইত্যাদির সমন্বয়ে রচিত বইয়ের বাঙলায়ন হচ্ছে আমাদের আলোচ্য দুটি খন্ডের বই। কীভাবে আঁধারের অতলান্তে ডুবে থাকা মানুষটা পেলেন আলোর পরশমণি? মদের বোতলে বুঁদ হয়ে থাকা যুবক কি করে হয়ে উঠলেন আমিরুল মু'মিনীন? কেমন ছিল তাঁর শাসন-ব্যবস্থা, ন্যায়বিচারের ইতিবৃত্ত, যার নিমিত্তে তিনি পেয়েছিলেন আল-ফারুক উপাধি? জানতে হলে আমাদের পাড়ি দিতে হবে এই মহাবীরের জীবন সায়রের অন্তরীপে। সুবিন্যস্ত আর তথ্যবহুল আলোচনায়। . ▪️পাঠ-পর্যালোচনা : ঈষৎ বাদামীরঙা ঝিরিঝিরির সাথে একটুকরো সবুজাভ অংশে বিজয়ের খোলা তরবারী। যার জীবনালেখ্য তাঁর সাথে কি গভীর অর্থবোধক মিল এই প্রচ্ছদের! এই মহাবীরের জীবনসমুদ্র সেঁচে এক পেয়ালা মুক্তো কুড়িয়ে শব্দবন্দী করা অনুবাদ পাঠকের সামনে তুলে ধরেছে 'কালান্তর প্রকাশনী '। বইটি রচনা করেছেন সমকালীন বিখ্যাত ইতিহাসবিদ ও গবেষক ড. আলী মুহাম্মদ সাল্লাবী। স্ব-গুণেই তিনি আজ জগদ্বিখ্যাত এক ব্যক্তিত্ব। দুটি খন্ডে বিভক্ত বইটিতে মোটামুটি উমার (রা.) এর জীবনের উল্লেখ-অনুল্লেখযোগ্য অনেক ঘটনাবলী স্থান পেয়েছে। উভয়খন্ড মিলে মোট ৮টি অধ্যায় রয়েছে। • প্রথম খন্ডে মোট ৩টি-অধ্যায়। মক্কায় উমার(রা.), হিজরত থেকে খেলাফত এবং সামাজিক জীবন ও সমাজ সংস্কার এই তিনটি শিরোনামের অধীনে ছোট ছোট অনেক উপঅধ্যায় রয়েছে। প্রথম অধ্যায়ে তাঁর জন্ম, শারীরিক বৈশিষ্ট্য, ইসলামগ্রহণ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দ্বিতীয় অধ্যায়ে আলোচিত হয়েছে হিজরতকালীন ঘটনাবলী, আহলে বাইতদের প্রতি তাঁর হৃদ্যতা ইত্যাদি। শেষ অধ্যায়ের উপজীব্য তাঁর খিলাফাত কাল। সমাজ সংস্কার, নাগরিকদের খোঁজখবর নেওয়া, ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। • ২য় খন্ডে রয়েছে মোট পাঁচটা অধ্যায়। এই খন্ডে পুরোদমে তাঁর খিলাফাতের আলোচনাই হয়েছে। তাঁর বিচারকার্য, নেতৃত্ব, বিভিন্ন অভিযান, বিজয় ও তাঁর জীবনের শেষ দিনগুলোর ঘটন-অঘটনে সজ্জিত একেকটা অধ্যায়। . ▪️বইটির বিশেষত্ব : বইটির মূল ফোকাস কেবল গাদাগাদা তথ্য আর ঘটনা প্রবাহের বহমানতায় নয়, বরং এখানে উমার (রা.) এর জীবনের একেকটা গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বর্ণনার পর এর বিশ্লেষণেপূর্বক সাবলীল ব্যাখ্যা প্রদান করা হয়েছে। গতানুগতিকতার বাইরে গিয়ে অনেকটা সম্মুখ আলোচনার মতো বায়োগ্রাফি পর্যালোচনা করা। শুধু গৎবাঁধা ইতিহাসের সমষ্টিতে অবসান নয়, বরং আলোচনা হয়েছে সুবিন্যস্তভাবে তবে মাধুর্যতার সাথে। ঘটনাগুলোকে বর্ণনার পর একটা কম্পেয়ার করা হয়েছে বর্তমান অবস্থার সাথে। যা পাঠকদের দাঁড় করাবে অর্জন-বর্জনের কাঠগড়ায়। জুগিয়ে দিবে উপলব্ধির খোরাক। আর এটাই বইটির প্রধান বিশেষত্ব। ড. সাল্লাবী রচিত বলে বিশুদ্ধতার মান নিয়ে হেডেক নেই। বরং অনুবাদকের পাঁকা হাতে সহজবোধ্য শব্দয়ন আর সাবলীল বর্ণনা সবশ্রেণীর পাঠকের জন্য বইটিকে করেছে সুখপাঠ্য। কেবল জীবনাচরণের একঘেয়ে বর্ণনাই হয়নি এই বইটিতে, বরং তাঁর জীবন ও কর্ম, আচার-আচরণের সাথে তুলনা করা হয়েছে বর্তমান যুগের। দেওয়া হয়েছে যুগোপযোগী নাসীহাহ। সাধারণত কোনো বাস্তব সত্য ঘটনার বর্ণনাপূর্বক নাসীহাহ প্রদান করলে, অডিয়েন্স অর্থাৎ পাঠককূলের মনে দাগ কাটতে বা আগ্রহ ধরে রাখতে অধিক কার্যকর হয়। প্রচলিত নিয়মের অন্তে এই জায়গাটাতেই বইটি অনন্য। সেই সাথে বইয়ের পৃষ্ঠা কিংবা বাইন্ডিং কোয়ালিটি বরাবরের মতোই উন্নত। . ▪️কেন পড়বেন? যখন কারো ঈমানে দুর্বলতা চলে আসে, গুনাহপ্রবণতা বেড়ে যায়, ইবাদতে আগ্রহ মিলেনা, তখন বিজ্ঞজনেরাও সাজেস্ট করেন নববী, সাহাবী, সালাফদের জীবনী অধ্যয়নের জন্য। গাফিলতির এই সময়টায় তাই আমাদের উমার রাযি. এর মতো সবার জীবনী পড়াই উচিত। মুসলিমদের সহজাত হীনম্মন্যতা আর পরাজিত মানসিকতা কাঁটিয়ে লিডারশীপের প্রেষণা নেওয়ার জন্য আমাদের যুবকদের উমার ইবনুল খাত্তাবকে (রাযি.) পড়াতো ভীষণরকমের প্রয়োজন। তবে, প্রশ্ন হতে পারে, এই বইটিই কেনো বেছে নিবো? উত্তরে হবে এই বইটির সুবিন্যস্ততা আর সহজপাঠ্যতা। তথ্যবহুল প্রত্যেকটা আলোচনা। আমিরুল মু'মিনীনকে সবিস্তারে জানতে এই বইটির তুলনা চলেনা। কেনো অনুসরণ করবেন, কি অনুসরণ করবেন তার সিক্যুয়েল আর রেফারেন্স মেইনটেইন করে বইটি পাঠকের তৃপ্তির পারদ ঊর্ধ্বে বৈ নিম্নগামী হওয়ার করবেনা, ইনশাআল্লাহ্। .
An Najahah Shop
Category List
All products

ইসলামের ইতিহাসে যেন গোটা এক রোমাঞ্চকর অধ্যায়। আদর্শ শাসনের অনবদ্য দৃষ্টান্তে সমগ্র পৃথিবীর নিকট আজও তিনি এক আইডল। ঠিক যেদিন উন্মুক্ত তরবারি হাতে নবীজির গর্দানচ্ছেদের উন্মত্ততায় নেমেছিলেন, সেদিনই ইসলামের অমৃতসুধা পান করে হয়ে গিয়েছিলেন ইসলামের বীরবাহু সৈনিক। নবীজির সোহবতে জন্ম নিয়েছিল যে ইসলামি রাষ্ট্রব্যবস্থা, আবু বাকরের হাত ধরে যে রাষ্ট্র পার করেছে শৈশবের কাঁচামিঠে দিনগুলো, উমারের সময়ে সেই রাষ্ট্রের যেন ছিল ষোড়শীর টালমাটাল তারুণ্য। তাঁর খেলাফত কালেই এই উম্মাহ পেয়েছিল অর্ধ-পৃথিবীর শাসনভার। সুশৃঙ্খল সমাজব্যবস্থা, সামরিক ইতিহাসের গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়ের আলোচনায় আজও 'উমার' নামটি উঠে আসে সবার আগে। নজরুলের ভাষ্যে- "অর্ধ পৃথিবী করেছ শাসন ধুলার তখতে বসি খেজুরপাতার প্রাসাদ তোমার বারে বারে গেছে খসি সাইমুম ঝড়ে পড়েছে কুটির, তুমি পড়নি ক’ নুয়ে। ঊর্ধ্বে যারা- পড়ছে তাহারা, তুমি ছিলে খাড়া ভূঁয়ে।" . ▪️প্রেক্ষাপটঃ উমর (রা.) হলেন ইতিহাসের এক স্বর্ণ-খোদিত নাম। ব্যক্তিত্বের মূর্ছনা আর লিডারশীপের বিচক্ষণতায় তিনি ইসলামী রাষ্ট্রের সীমানা ছড়িয়ে দিয়েছেন দিগ্বিদিক। তাঁর হাতেই প্রতিষ্ঠা পেয়েছে রাষ্ট্রীয় বহু অবকাঠামো। তাঁর তাক্বওয়া, নেতৃত্বের মুনশিয়ানা, জ্ঞানের দূরদর্শিতা মুসলিম উম্মাহর জন্য সৃষ্টি করেছে অনবদ্য ইতিহাস, বর্ণালী ঐতিহ্য। মহান এই ব্যক্তিত্বের জীবনের জানা-অজানা বিভিন্ন তথ্য ও তত্ত্ব, ঘটনাপ্রবাহ ও বৈশিষ্ট্য ইত্যাদির সমন্বয়ে রচিত বইয়ের বাঙলায়ন হচ্ছে আমাদের আলোচ্য দুটি খন্ডের বই। কীভাবে আঁধারের অতলান্তে ডুবে থাকা মানুষটা পেলেন আলোর পরশমণি? মদের বোতলে বুঁদ হয়ে থাকা যুবক কি করে হয়ে উঠলেন আমিরুল মু'মিনীন? কেমন ছিল তাঁর শাসন-ব্যবস্থা, ন্যায়বিচারের ইতিবৃত্ত, যার নিমিত্তে তিনি পেয়েছিলেন আল-ফারুক উপাধি? জানতে হলে আমাদের পাড়ি দিতে হবে এই মহাবীরের জীবন সায়রের অন্তরীপে। সুবিন্যস্ত আর তথ্যবহুল আলোচনায়। .
▪️পাঠ-পর্যালোচনা : ঈষৎ বাদামীরঙা ঝিরিঝিরির সাথে একটুকরো সবুজাভ অংশে বিজয়ের খোলা তরবারী। যার জীবনালেখ্য তাঁর সাথে কি গভীর অর্থবোধক মিল এই প্রচ্ছদের! এই মহাবীরের জীবনসমুদ্র সেঁচে এক পেয়ালা মুক্তো কুড়িয়ে শব্দবন্দী করা অনুবাদ পাঠকের সামনে তুলে ধরেছে 'কালান্তর প্রকাশনী '। বইটি রচনা করেছেন সমকালীন বিখ্যাত ইতিহাসবিদ ও গবেষক ড. আলী মুহাম্মদ সাল্লাবী। স্ব-গুণেই তিনি আজ জগদ্বিখ্যাত এক ব্যক্তিত্ব। দুটি খন্ডে বিভক্ত বইটিতে মোটামুটি উমার (রা.) এর জীবনের উল্লেখ-অনুল্লেখযোগ্য অনেক ঘটনাবলী স্থান পেয়েছে। উভয়খন্ড মিলে মোট ৮টি অধ্যায় রয়েছে।
• প্রথম খন্ডে মোট ৩টি-অধ্যায়। মক্কায় উমার(রা.), হিজরত থেকে খেলাফত এবং সামাজিক জীবন ও সমাজ সংস্কার এই তিনটি শিরোনামের অধীনে ছোট ছোট অনেক উপঅধ্যায় রয়েছে। প্রথম অধ্যায়ে তাঁর জন্ম, শারীরিক বৈশিষ্ট্য, ইসলামগ্রহণ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দ্বিতীয় অধ্যায়ে আলোচিত হয়েছে হিজরতকালীন ঘটনাবলী, আহলে বাইতদের প্রতি তাঁর হৃদ্যতা ইত্যাদি। শেষ অধ্যায়ের উপজীব্য তাঁর খিলাফাত কাল। সমাজ সংস্কার, নাগরিকদের খোঁজখবর নেওয়া, ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
• ২য় খন্ডে রয়েছে মোট পাঁচটা অধ্যায়। এই খন্ডে পুরোদমে তাঁর খিলাফাতের আলোচনাই হয়েছে। তাঁর বিচারকার্য, নেতৃত্ব, বিভিন্ন অভিযান, বিজয় ও তাঁর জীবনের শেষ দিনগুলোর ঘটন-অঘটনে সজ্জিত একেকটা অধ্যায়। .
▪️বইটির বিশেষত্ব : বইটির মূল ফোকাস কেবল গাদাগাদা তথ্য আর ঘটনা প্রবাহের বহমানতায় নয়, বরং এখানে উমার (রা.) এর জীবনের একেকটা গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বর্ণনার পর এর বিশ্লেষণেপূর্বক সাবলীল ব্যাখ্যা প্রদান করা হয়েছে। গতানুগতিকতার বাইরে গিয়ে অনেকটা সম্মুখ আলোচনার মতো বায়োগ্রাফি পর্যালোচনা করা। শুধু গৎবাঁধা ইতিহাসের সমষ্টিতে অবসান নয়, বরং আলোচনা হয়েছে সুবিন্যস্তভাবে তবে মাধুর্যতার সাথে। ঘটনাগুলোকে বর্ণনার পর একটা কম্পেয়ার করা হয়েছে বর্তমান অবস্থার সাথে। যা পাঠকদের দাঁড় করাবে অর্জন-বর্জনের কাঠগড়ায়। জুগিয়ে দিবে উপলব্ধির খোরাক। আর এটাই বইটির প্রধান বিশেষত্ব। ড. সাল্লাবী রচিত বলে বিশুদ্ধতার মান নিয়ে হেডেক নেই। বরং অনুবাদকের পাঁকা হাতে সহজবোধ্য শব্দয়ন আর সাবলীল বর্ণনা সবশ্রেণীর পাঠকের জন্য বইটিকে করেছে সুখপাঠ্য। কেবল জীবনাচরণের একঘেয়ে বর্ণনাই হয়নি এই বইটিতে, বরং তাঁর জীবন ও কর্ম, আচার-আচরণের সাথে তুলনা করা হয়েছে বর্তমান যুগের। দেওয়া হয়েছে যুগোপযোগী নাসীহাহ। সাধারণত কোনো বাস্তব সত্য ঘটনার বর্ণনাপূর্বক নাসীহাহ প্রদান করলে, অডিয়েন্স অর্থাৎ পাঠককূলের মনে দাগ কাটতে বা আগ্রহ ধরে রাখতে অধিক কার্যকর হয়। প্রচলিত নিয়মের অন্তে এই জায়গাটাতেই বইটি অনন্য। সেই সাথে বইয়ের পৃষ্ঠা কিংবা বাইন্ডিং কোয়ালিটি বরাবরের মতোই উন্নত। . ▪️কেন পড়বেন? যখন কারো ঈমানে দুর্বলতা চলে আসে, গুনাহপ্রবণতা বেড়ে যায়, ইবাদতে আগ্রহ মিলেনা, তখন বিজ্ঞজনেরাও সাজেস্ট করেন নববী, সাহাবী, সালাফদের জীবনী অধ্যয়নের জন্য। গাফিলতির এই সময়টায় তাই আমাদের উমার রাযি. এর মতো সবার জীবনী পড়াই উচিত। মুসলিমদের সহজাত হীনম্মন্যতা আর পরাজিত মানসিকতা কাঁটিয়ে লিডারশীপের প্রেষণা নেওয়ার জন্য আমাদের যুবকদের উমার ইবনুল খাত্তাবকে (রাযি.) পড়াতো ভীষণরকমের প্রয়োজন। তবে, প্রশ্ন হতে পারে, এই বইটিই কেনো বেছে নিবো? উত্তরে হবে এই বইটির সুবিন্যস্ততা আর সহজপাঠ্যতা। তথ্যবহুল প্রত্যেকটা আলোচনা। আমিরুল মু'মিনীনকে সবিস্তারে জানতে এই বইটির তুলনা চলেনা। কেনো অনুসরণ করবেন, কি অনুসরণ করবেন তার সিক্যুয়েল আর রেফারেন্স মেইনটেইন করে বইটি পাঠকের তৃপ্তির পারদ ঊর্ধ্বে বৈ নিম্নগামী হওয়ার করবেনা, ইনশাআল্লাহ্। .
▪️পাঠ-পর্যালোচনা : ঈষৎ বাদামীরঙা ঝিরিঝিরির সাথে একটুকরো সবুজাভ অংশে বিজয়ের খোলা তরবারী। যার জীবনালেখ্য তাঁর সাথে কি গভীর অর্থবোধক মিল এই প্রচ্ছদের! এই মহাবীরের জীবনসমুদ্র সেঁচে এক পেয়ালা মুক্তো কুড়িয়ে শব্দবন্দী করা অনুবাদ পাঠকের সামনে তুলে ধরেছে 'কালান্তর প্রকাশনী '। বইটি রচনা করেছেন সমকালীন বিখ্যাত ইতিহাসবিদ ও গবেষক ড. আলী মুহাম্মদ সাল্লাবী। স্ব-গুণেই তিনি আজ জগদ্বিখ্যাত এক ব্যক্তিত্ব। দুটি খন্ডে বিভক্ত বইটিতে মোটামুটি উমার (রা.) এর জীবনের উল্লেখ-অনুল্লেখযোগ্য অনেক ঘটনাবলী স্থান পেয়েছে। উভয়খন্ড মিলে মোট ৮টি অধ্যায় রয়েছে।
• প্রথম খন্ডে মোট ৩টি-অধ্যায়। মক্কায় উমার(রা.), হিজরত থেকে খেলাফত এবং সামাজিক জীবন ও সমাজ সংস্কার এই তিনটি শিরোনামের অধীনে ছোট ছোট অনেক উপঅধ্যায় রয়েছে। প্রথম অধ্যায়ে তাঁর জন্ম, শারীরিক বৈশিষ্ট্য, ইসলামগ্রহণ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দ্বিতীয় অধ্যায়ে আলোচিত হয়েছে হিজরতকালীন ঘটনাবলী, আহলে বাইতদের প্রতি তাঁর হৃদ্যতা ইত্যাদি। শেষ অধ্যায়ের উপজীব্য তাঁর খিলাফাত কাল। সমাজ সংস্কার, নাগরিকদের খোঁজখবর নেওয়া, ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
• ২য় খন্ডে রয়েছে মোট পাঁচটা অধ্যায়। এই খন্ডে পুরোদমে তাঁর খিলাফাতের আলোচনাই হয়েছে। তাঁর বিচারকার্য, নেতৃত্ব, বিভিন্ন অভিযান, বিজয় ও তাঁর জীবনের শেষ দিনগুলোর ঘটন-অঘটনে সজ্জিত একেকটা অধ্যায়। .
▪️বইটির বিশেষত্ব : বইটির মূল ফোকাস কেবল গাদাগাদা তথ্য আর ঘটনা প্রবাহের বহমানতায় নয়, বরং এখানে উমার (রা.) এর জীবনের একেকটা গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বর্ণনার পর এর বিশ্লেষণেপূর্বক সাবলীল ব্যাখ্যা প্রদান করা হয়েছে। গতানুগতিকতার বাইরে গিয়ে অনেকটা সম্মুখ আলোচনার মতো বায়োগ্রাফি পর্যালোচনা করা। শুধু গৎবাঁধা ইতিহাসের সমষ্টিতে অবসান নয়, বরং আলোচনা হয়েছে সুবিন্যস্তভাবে তবে মাধুর্যতার সাথে। ঘটনাগুলোকে বর্ণনার পর একটা কম্পেয়ার করা হয়েছে বর্তমান অবস্থার সাথে। যা পাঠকদের দাঁড় করাবে অর্জন-বর্জনের কাঠগড়ায়। জুগিয়ে দিবে উপলব্ধির খোরাক। আর এটাই বইটির প্রধান বিশেষত্ব। ড. সাল্লাবী রচিত বলে বিশুদ্ধতার মান নিয়ে হেডেক নেই। বরং অনুবাদকের পাঁকা হাতে সহজবোধ্য শব্দয়ন আর সাবলীল বর্ণনা সবশ্রেণীর পাঠকের জন্য বইটিকে করেছে সুখপাঠ্য। কেবল জীবনাচরণের একঘেয়ে বর্ণনাই হয়নি এই বইটিতে, বরং তাঁর জীবন ও কর্ম, আচার-আচরণের সাথে তুলনা করা হয়েছে বর্তমান যুগের। দেওয়া হয়েছে যুগোপযোগী নাসীহাহ। সাধারণত কোনো বাস্তব সত্য ঘটনার বর্ণনাপূর্বক নাসীহাহ প্রদান করলে, অডিয়েন্স অর্থাৎ পাঠককূলের মনে দাগ কাটতে বা আগ্রহ ধরে রাখতে অধিক কার্যকর হয়। প্রচলিত নিয়মের অন্তে এই জায়গাটাতেই বইটি অনন্য। সেই সাথে বইয়ের পৃষ্ঠা কিংবা বাইন্ডিং কোয়ালিটি বরাবরের মতোই উন্নত। . ▪️কেন পড়বেন? যখন কারো ঈমানে দুর্বলতা চলে আসে, গুনাহপ্রবণতা বেড়ে যায়, ইবাদতে আগ্রহ মিলেনা, তখন বিজ্ঞজনেরাও সাজেস্ট করেন নববী, সাহাবী, সালাফদের জীবনী অধ্যয়নের জন্য। গাফিলতির এই সময়টায় তাই আমাদের উমার রাযি. এর মতো সবার জীবনী পড়াই উচিত। মুসলিমদের সহজাত হীনম্মন্যতা আর পরাজিত মানসিকতা কাঁটিয়ে লিডারশীপের প্রেষণা নেওয়ার জন্য আমাদের যুবকদের উমার ইবনুল খাত্তাবকে (রাযি.) পড়াতো ভীষণরকমের প্রয়োজন। তবে, প্রশ্ন হতে পারে, এই বইটিই কেনো বেছে নিবো? উত্তরে হবে এই বইটির সুবিন্যস্ততা আর সহজপাঠ্যতা। তথ্যবহুল প্রত্যেকটা আলোচনা। আমিরুল মু'মিনীনকে সবিস্তারে জানতে এই বইটির তুলনা চলেনা। কেনো অনুসরণ করবেন, কি অনুসরণ করবেন তার সিক্যুয়েল আর রেফারেন্স মেইনটেইন করে বইটি পাঠকের তৃপ্তির পারদ ঊর্ধ্বে বৈ নিম্নগামী হওয়ার করবেনা, ইনশাআল্লাহ্। .
উমর ইবনুল খাত্তাব রা. (১ম ও ২য় খণ্ড)
1,025 BDT1,370 BDTSave 345 BDT
1
ইসলামের ইতিহাসে যেন গোটা এক রোমাঞ্চকর অধ্যায়। আদর্শ শাসনের অনবদ্য দৃষ্টান্তে সমগ্র পৃথিবীর নিকট আজও তিনি এক আইডল। ঠিক যেদিন উন্মুক্ত তরবারি হাতে নবীজির গর্দানচ্ছেদের উন্মত্ততায় নেমেছিলেন, সেদিনই ইসলামের অমৃতসুধা পান করে হয়ে গিয়েছিলেন ইসলামের বীরবাহু সৈনিক। নবীজির সোহবতে জন্ম নিয়েছিল যে ইসলামি রাষ্ট্রব্যবস্থা, আবু বাকরের হাত ধরে যে রাষ্ট্র পার করেছে শৈশবের কাঁচামিঠে দিনগুলো, উমারের সময়ে সেই রাষ্ট্রের যেন ছিল ষোড়শীর টালমাটাল তারুণ্য। তাঁর খেলাফত কালেই এই উম্মাহ পেয়েছিল অর্ধ-পৃথিবীর শাসনভার। সুশৃঙ্খল সমাজব্যবস্থা, সামরিক ইতিহাসের গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়ের আলোচনায় আজও 'উমার' নামটি উঠে আসে সবার আগে। নজরুলের ভাষ্যে- "অর্ধ পৃথিবী করেছ শাসন ধুলার তখতে বসি খেজুরপাতার প্রাসাদ তোমার বারে বারে গেছে খসি সাইমুম ঝড়ে পড়েছে কুটির, তুমি পড়নি ক’ নুয়ে। ঊর্ধ্বে যারা- পড়ছে তাহারা, তুমি ছিলে খাড়া ভূঁয়ে।" . ▪️প্রেক্ষাপটঃ উমর (রা.) হলেন ইতিহাসের এক স্বর্ণ-খোদিত নাম। ব্যক্তিত্বের মূর্ছনা আর লিডারশীপের বিচক্ষণতায় তিনি ইসলামী রাষ্ট্রের সীমানা ছড়িয়ে দিয়েছেন দিগ্বিদিক। তাঁর হাতেই প্রতিষ্ঠা পেয়েছে রাষ্ট্রীয় বহু অবকাঠামো। তাঁর তাক্বওয়া, নেতৃত্বের মুনশিয়ানা, জ্ঞানের দূরদর্শিতা মুসলিম উম্মাহর জন্য সৃষ্টি করেছে অনবদ্য ইতিহাস, বর্ণালী ঐতিহ্য। মহান এই ব্যক্তিত্বের জীবনের জানা-অজানা বিভিন্ন তথ্য ও তত্ত্ব, ঘটনাপ্রবাহ ও বৈশিষ্ট্য ইত্যাদির সমন্বয়ে রচিত বইয়ের বাঙলায়ন হচ্ছে আমাদের আলোচ্য দুটি খন্ডের বই। কীভাবে আঁধারের অতলান্তে ডুবে থাকা মানুষটা পেলেন আলোর পরশমণি? মদের বোতলে বুঁদ হয়ে থাকা যুবক কি করে হয়ে উঠলেন আমিরুল মু'মিনীন? কেমন ছিল তাঁর শাসন-ব্যবস্থা, ন্যায়বিচারের ইতিবৃত্ত, যার নিমিত্তে তিনি পেয়েছিলেন আল-ফারুক উপাধি? জানতে হলে আমাদের পাড়ি দিতে হবে এই মহাবীরের জীবন সায়রের অন্তরীপে। সুবিন্যস্ত আর তথ্যবহুল আলোচনায়। .
▪️পাঠ-পর্যালোচনা : ঈষৎ বাদামীরঙা ঝিরিঝিরির সাথে একটুকরো সবুজাভ অংশে বিজয়ের খোলা তরবারী। যার জীবনালেখ্য তাঁর সাথে কি গভীর অর্থবোধক মিল এই প্রচ্ছদের! এই মহাবীরের জীবনসমুদ্র সেঁচে এক পেয়ালা মুক্তো কুড়িয়ে শব্দবন্দী করা অনুবাদ পাঠকের সামনে তুলে ধরেছে 'কালান্তর প্রকাশনী '। বইটি রচনা করেছেন সমকালীন বিখ্যাত ইতিহাসবিদ ও গবেষক ড. আলী মুহাম্মদ সাল্লাবী। স্ব-গুণেই তিনি আজ জগদ্বিখ্যাত এক ব্যক্তিত্ব। দুটি খন্ডে বিভক্ত বইটিতে মোটামুটি উমার (রা.) এর জীবনের উল্লেখ-অনুল্লেখযোগ্য অনেক ঘটনাবলী স্থান পেয়েছে। উভয়খন্ড মিলে মোট ৮টি অধ্যায় রয়েছে।
• প্রথম খন্ডে মোট ৩টি-অধ্যায়। মক্কায় উমার(রা.), হিজরত থেকে খেলাফত এবং সামাজিক জীবন ও সমাজ সংস্কার এই তিনটি শিরোনামের অধীনে ছোট ছোট অনেক উপঅধ্যায় রয়েছে। প্রথম অধ্যায়ে তাঁর জন্ম, শারীরিক বৈশিষ্ট্য, ইসলামগ্রহণ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দ্বিতীয় অধ্যায়ে আলোচিত হয়েছে হিজরতকালীন ঘটনাবলী, আহলে বাইতদের প্রতি তাঁর হৃদ্যতা ইত্যাদি। শেষ অধ্যায়ের উপজীব্য তাঁর খিলাফাত কাল। সমাজ সংস্কার, নাগরিকদের খোঁজখবর নেওয়া, ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
• ২য় খন্ডে রয়েছে মোট পাঁচটা অধ্যায়। এই খন্ডে পুরোদমে তাঁর খিলাফাতের আলোচনাই হয়েছে। তাঁর বিচারকার্য, নেতৃত্ব, বিভিন্ন অভিযান, বিজয় ও তাঁর জীবনের শেষ দিনগুলোর ঘটন-অঘটনে সজ্জিত একেকটা অধ্যায়। .
▪️বইটির বিশেষত্ব : বইটির মূল ফোকাস কেবল গাদাগাদা তথ্য আর ঘটনা প্রবাহের বহমানতায় নয়, বরং এখানে উমার (রা.) এর জীবনের একেকটা গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বর্ণনার পর এর বিশ্লেষণেপূর্বক সাবলীল ব্যাখ্যা প্রদান করা হয়েছে। গতানুগতিকতার বাইরে গিয়ে অনেকটা সম্মুখ আলোচনার মতো বায়োগ্রাফি পর্যালোচনা করা। শুধু গৎবাঁধা ইতিহাসের সমষ্টিতে অবসান নয়, বরং আলোচনা হয়েছে সুবিন্যস্তভাবে তবে মাধুর্যতার সাথে। ঘটনাগুলোকে বর্ণনার পর একটা কম্পেয়ার করা হয়েছে বর্তমান অবস্থার সাথে। যা পাঠকদের দাঁড় করাবে অর্জন-বর্জনের কাঠগড়ায়। জুগিয়ে দিবে উপলব্ধির খোরাক। আর এটাই বইটির প্রধান বিশেষত্ব। ড. সাল্লাবী রচিত বলে বিশুদ্ধতার মান নিয়ে হেডেক নেই। বরং অনুবাদকের পাঁকা হাতে সহজবোধ্য শব্দয়ন আর সাবলীল বর্ণনা সবশ্রেণীর পাঠকের জন্য বইটিকে করেছে সুখপাঠ্য। কেবল জীবনাচরণের একঘেয়ে বর্ণনাই হয়নি এই বইটিতে, বরং তাঁর জীবন ও কর্ম, আচার-আচরণের সাথে তুলনা করা হয়েছে বর্তমান যুগের। দেওয়া হয়েছে যুগোপযোগী নাসীহাহ। সাধারণত কোনো বাস্তব সত্য ঘটনার বর্ণনাপূর্বক নাসীহাহ প্রদান করলে, অডিয়েন্স অর্থাৎ পাঠককূলের মনে দাগ কাটতে বা আগ্রহ ধরে রাখতে অধিক কার্যকর হয়। প্রচলিত নিয়মের অন্তে এই জায়গাটাতেই বইটি অনন্য। সেই সাথে বইয়ের পৃষ্ঠা কিংবা বাইন্ডিং কোয়ালিটি বরাবরের মতোই উন্নত। . ▪️কেন পড়বেন? যখন কারো ঈমানে দুর্বলতা চলে আসে, গুনাহপ্রবণতা বেড়ে যায়, ইবাদতে আগ্রহ মিলেনা, তখন বিজ্ঞজনেরাও সাজেস্ট করেন নববী, সাহাবী, সালাফদের জীবনী অধ্যয়নের জন্য। গাফিলতির এই সময়টায় তাই আমাদের উমার রাযি. এর মতো সবার জীবনী পড়াই উচিত। মুসলিমদের সহজাত হীনম্মন্যতা আর পরাজিত মানসিকতা কাঁটিয়ে লিডারশীপের প্রেষণা নেওয়ার জন্য আমাদের যুবকদের উমার ইবনুল খাত্তাবকে (রাযি.) পড়াতো ভীষণরকমের প্রয়োজন। তবে, প্রশ্ন হতে পারে, এই বইটিই কেনো বেছে নিবো? উত্তরে হবে এই বইটির সুবিন্যস্ততা আর সহজপাঠ্যতা। তথ্যবহুল প্রত্যেকটা আলোচনা। আমিরুল মু'মিনীনকে সবিস্তারে জানতে এই বইটির তুলনা চলেনা। কেনো অনুসরণ করবেন, কি অনুসরণ করবেন তার সিক্যুয়েল আর রেফারেন্স মেইনটেইন করে বইটি পাঠকের তৃপ্তির পারদ ঊর্ধ্বে বৈ নিম্নগামী হওয়ার করবেনা, ইনশাআল্লাহ্। .
▪️পাঠ-পর্যালোচনা : ঈষৎ বাদামীরঙা ঝিরিঝিরির সাথে একটুকরো সবুজাভ অংশে বিজয়ের খোলা তরবারী। যার জীবনালেখ্য তাঁর সাথে কি গভীর অর্থবোধক মিল এই প্রচ্ছদের! এই মহাবীরের জীবনসমুদ্র সেঁচে এক পেয়ালা মুক্তো কুড়িয়ে শব্দবন্দী করা অনুবাদ পাঠকের সামনে তুলে ধরেছে 'কালান্তর প্রকাশনী '। বইটি রচনা করেছেন সমকালীন বিখ্যাত ইতিহাসবিদ ও গবেষক ড. আলী মুহাম্মদ সাল্লাবী। স্ব-গুণেই তিনি আজ জগদ্বিখ্যাত এক ব্যক্তিত্ব। দুটি খন্ডে বিভক্ত বইটিতে মোটামুটি উমার (রা.) এর জীবনের উল্লেখ-অনুল্লেখযোগ্য অনেক ঘটনাবলী স্থান পেয়েছে। উভয়খন্ড মিলে মোট ৮টি অধ্যায় রয়েছে।
• প্রথম খন্ডে মোট ৩টি-অধ্যায়। মক্কায় উমার(রা.), হিজরত থেকে খেলাফত এবং সামাজিক জীবন ও সমাজ সংস্কার এই তিনটি শিরোনামের অধীনে ছোট ছোট অনেক উপঅধ্যায় রয়েছে। প্রথম অধ্যায়ে তাঁর জন্ম, শারীরিক বৈশিষ্ট্য, ইসলামগ্রহণ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দ্বিতীয় অধ্যায়ে আলোচিত হয়েছে হিজরতকালীন ঘটনাবলী, আহলে বাইতদের প্রতি তাঁর হৃদ্যতা ইত্যাদি। শেষ অধ্যায়ের উপজীব্য তাঁর খিলাফাত কাল। সমাজ সংস্কার, নাগরিকদের খোঁজখবর নেওয়া, ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
• ২য় খন্ডে রয়েছে মোট পাঁচটা অধ্যায়। এই খন্ডে পুরোদমে তাঁর খিলাফাতের আলোচনাই হয়েছে। তাঁর বিচারকার্য, নেতৃত্ব, বিভিন্ন অভিযান, বিজয় ও তাঁর জীবনের শেষ দিনগুলোর ঘটন-অঘটনে সজ্জিত একেকটা অধ্যায়। .
▪️বইটির বিশেষত্ব : বইটির মূল ফোকাস কেবল গাদাগাদা তথ্য আর ঘটনা প্রবাহের বহমানতায় নয়, বরং এখানে উমার (রা.) এর জীবনের একেকটা গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বর্ণনার পর এর বিশ্লেষণেপূর্বক সাবলীল ব্যাখ্যা প্রদান করা হয়েছে। গতানুগতিকতার বাইরে গিয়ে অনেকটা সম্মুখ আলোচনার মতো বায়োগ্রাফি পর্যালোচনা করা। শুধু গৎবাঁধা ইতিহাসের সমষ্টিতে অবসান নয়, বরং আলোচনা হয়েছে সুবিন্যস্তভাবে তবে মাধুর্যতার সাথে। ঘটনাগুলোকে বর্ণনার পর একটা কম্পেয়ার করা হয়েছে বর্তমান অবস্থার সাথে। যা পাঠকদের দাঁড় করাবে অর্জন-বর্জনের কাঠগড়ায়। জুগিয়ে দিবে উপলব্ধির খোরাক। আর এটাই বইটির প্রধান বিশেষত্ব। ড. সাল্লাবী রচিত বলে বিশুদ্ধতার মান নিয়ে হেডেক নেই। বরং অনুবাদকের পাঁকা হাতে সহজবোধ্য শব্দয়ন আর সাবলীল বর্ণনা সবশ্রেণীর পাঠকের জন্য বইটিকে করেছে সুখপাঠ্য। কেবল জীবনাচরণের একঘেয়ে বর্ণনাই হয়নি এই বইটিতে, বরং তাঁর জীবন ও কর্ম, আচার-আচরণের সাথে তুলনা করা হয়েছে বর্তমান যুগের। দেওয়া হয়েছে যুগোপযোগী নাসীহাহ। সাধারণত কোনো বাস্তব সত্য ঘটনার বর্ণনাপূর্বক নাসীহাহ প্রদান করলে, অডিয়েন্স অর্থাৎ পাঠককূলের মনে দাগ কাটতে বা আগ্রহ ধরে রাখতে অধিক কার্যকর হয়। প্রচলিত নিয়মের অন্তে এই জায়গাটাতেই বইটি অনন্য। সেই সাথে বইয়ের পৃষ্ঠা কিংবা বাইন্ডিং কোয়ালিটি বরাবরের মতোই উন্নত। . ▪️কেন পড়বেন? যখন কারো ঈমানে দুর্বলতা চলে আসে, গুনাহপ্রবণতা বেড়ে যায়, ইবাদতে আগ্রহ মিলেনা, তখন বিজ্ঞজনেরাও সাজেস্ট করেন নববী, সাহাবী, সালাফদের জীবনী অধ্যয়নের জন্য। গাফিলতির এই সময়টায় তাই আমাদের উমার রাযি. এর মতো সবার জীবনী পড়াই উচিত। মুসলিমদের সহজাত হীনম্মন্যতা আর পরাজিত মানসিকতা কাঁটিয়ে লিডারশীপের প্রেষণা নেওয়ার জন্য আমাদের যুবকদের উমার ইবনুল খাত্তাবকে (রাযি.) পড়াতো ভীষণরকমের প্রয়োজন। তবে, প্রশ্ন হতে পারে, এই বইটিই কেনো বেছে নিবো? উত্তরে হবে এই বইটির সুবিন্যস্ততা আর সহজপাঠ্যতা। তথ্যবহুল প্রত্যেকটা আলোচনা। আমিরুল মু'মিনীনকে সবিস্তারে জানতে এই বইটির তুলনা চলেনা। কেনো অনুসরণ করবেন, কি অনুসরণ করবেন তার সিক্যুয়েল আর রেফারেন্স মেইনটেইন করে বইটি পাঠকের তৃপ্তির পারদ ঊর্ধ্বে বৈ নিম্নগামী হওয়ার করবেনা, ইনশাআল্লাহ্। .