আল্লাহর প্রতি সুধারণা
আল্লাহর প্রতি সুধারণালেখক : ইমাম ইবনু আবিদ দুনইয়াপ্রকাশনী : ওয়াফি পাবলিকেশনবিষয় : আত্মশুদ্ধি ও অনুপ্রেরণাআমাদের অন্তরগুলো যদি শতভাগ পবিত্র হতো, আমরা এক নিমেষের জন্যও আল্লাহকে ভুলতে পারতাম না। সত্যি বলতে একজন বান্দা তখনই তার রবকে ভুলে যায়, যখন সে তাঁর পরিচয় হারিয়ে ফেলে। তাকদীর নিয়ে হতাশা, বিপদ আপদে ভেঙ্গে পড়া ইত্যাদি অন্তরের রোগ বান্দাকে চেপে ধরে। জীবন হয় বিষাদময়। সুখানুভূতির ছিটেফোঁটাও থাকে না তাতে।. বাবা-মাকে হারিয়ে ফেলা শিশু যেমন এতিম, রবকে হারিয়ে ফেলে বান্দাও তেমনি এতিম। বরং শিশুকে আশ্রয় দানকারীর অভাব হয়ত হবে না। কিন্তু রবকে হারিয়ে ফেলা বান্দা কোথায় যাবে...? রব যদি বান্দাকে ছেড়ে যায়, বান্দা কার কাছে আশ্রয় নেবে? যখন সকল আশা ভরসা ফিকে হয়ে যায়, তখন বান্দা কার ওপর আশা রাখবে? কে তার ভাঙ্গা অন্তর জোড়া লাগাবে? ব্যথামোড়া স্মৃতি ভুলিয়ে দিয়ে কে তার অন্তরে সুখের আলো জ্বেলে দেবে? .'আল্লাহর প্রতি সুধারণা'—এ এমন এক আমল, যার অভাব বান্দাকে ধাবিত করে আত্মহননের দিকে। রূহ তখনই মরে যায় যখন সে আর সুধারণা রাখতে পারে না। লক্ষ্য করলে দেখবেন, কুফর, শিরক, বড় বড় সব পাপের মূলেই এই সুধারণার অভাব। .তেমনি এই সুধারণার মাত্রা যখন ক্রমেই বৃদ্ধি পেতে থাকে, বান্দা ততই ইহসানের স্তরে উঠতে থাকে। সিদ্দীকদের কাতারে পৌঁছে যায়। মজার বিষয় হচ্ছে, এটা পুরোটাই মনের খেলা। মনের জানালা দিয়ে আপনি কীভাবে দেখছেন—তার ওপর নির্ভর করছে সুধারণা। এই দেখাই আপনাকে আলাদা করে দেবে সাধারণদের কাতার থেকে, নিয়ে যাবে অসাধারণদের মিলনমেলায়। এই দেখাই আপনার আমলকে করবে দামী, মনকে করবে সবচেয়ে নির্মল, প্রশান্ত। .ইমাম ইবনুল-কাইয়্যিম রহ. বলেন, 'আল্লাহর প্রতি সুধারণা রাখার বিষয়টি ইহসানের সাথে সম্পৃক্ত। তাই মুহসিন মাত্রই সে তার রবের প্রতি সুধারণা রাখে। সে বিশ্বাস করে, তার রব এই ইহসানের ভিত্তিতে প্রতিদান দেবেন। তাঁর রব ওয়াদার বরখেলাপ করেন না। তিনি বান্দার তাওবাহ কবুল করেন। কাউকে ফিরিয়ে দেন না। পক্ষান্তরে কোনো পাপী যখন লাগামহীন পাপাচারে লিপ্ত হয়, যুলুম করতে থাকে, তখন তার পাপ, যুলুম আর হারাম কৃতকর্মগুলো ভীতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ফলে সে তার রবের প্রতি সুধারণা রাখতে পারে না। তাঁর আনুগত্য থেকে বের হয়ে যায়। .হাসান বাসরি রহ. বলেন, "মুমিন স্বীয় রবের প্রতি সুধারণা রাখে। ফলে তার আমলও হয় উত্তম। পক্ষান্তরে পাপি স্বীয় রবের প্রতি খারাপ ধারণা রাখে। ফলে তার আমলও হয় নিকৃষ্ট।"'[জাওয়াবুল-কাফী, পৃঃ ৫৯].আর তাই আমাদের সালাফদের অন্যতম আমল ছিল হুসনুয-যন্ন বিল্লাহ, আল্লাহর প্রতি সুধারণা। তাদের মধ্যে যে যত অগ্রাগামী, সে ততই আল্লাহর প্রতি সুধারণায় অগ্রগামী ছিল। কিন্তু আজ আমরা এই আমল হারিয়ে ফেলেছি। না কোনো ওয়াজ মাহফিলে এই বিষয়ে আলোচনা শুনি, না বাজারে এই বিষয়ে কোনো বই খুঁজে পাই। মানুষ হতাশ হবে না কেন? নাস্তিক হবে না কেন? আত্মহত্যা করবে না কেন? আমরা যে তাকে চেনাতে পারিনি, কে তোমার আল্লাহ! .এই বিষয়ে ইমাম ইবনু আবিদ-দুনইয়া রহ. চমৎকার একটি কাজ করে গেছেন হাজার বছর আগে। আল্লাহর প্রতি সুধারণা বিষয়ে আমাদের পূর্ববর্তীগণ কতটা অগ্রগামী ছিলেন, এ ব্যাপারে তাদের বক্তব্য, সুধারণা রাখার ফজিলত, উপায় আসবাব ইত্যাদি নিয়ে লিখেছেন 'হুসনুয যন্ন বিল্লাহ'। পূর্ববর্তীদের উক্তিগুলো তিনি সংকলন করেছেন। .
An Najahah Shop
Category List
All products

আল্লাহর প্রতি সুধারণা
লেখক : ইমাম ইবনু আবিদ দুনইয়া
প্রকাশনী : ওয়াফি পাবলিকেশন
বিষয় : আত্মশুদ্ধি ও অনুপ্রেরণা
আমাদের অন্তরগুলো যদি শতভাগ পবিত্র হতো, আমরা এক নিমেষের জন্যও আল্লাহকে ভুলতে পারতাম না। সত্যি বলতে একজন বান্দা তখনই তার রবকে ভুলে যায়, যখন সে তাঁর পরিচয় হারিয়ে ফেলে। তাকদীর নিয়ে হতাশা, বিপদ আপদে ভেঙ্গে পড়া ইত্যাদি অন্তরের রোগ বান্দাকে চেপে ধরে। জীবন হয় বিষাদময়। সুখানুভূতির ছিটেফোঁটাও থাকে না তাতে।
.
বাবা-মাকে হারিয়ে ফেলা শিশু যেমন এতিম, রবকে হারিয়ে ফেলে বান্দাও তেমনি এতিম। বরং শিশুকে আশ্রয় দানকারীর অভাব হয়ত হবে না। কিন্তু রবকে হারিয়ে ফেলা বান্দা কোথায় যাবে...? রব যদি বান্দাকে ছেড়ে যায়, বান্দা কার কাছে আশ্রয় নেবে? যখন সকল আশা ভরসা ফিকে হয়ে যায়, তখন বান্দা কার ওপর আশা রাখবে? কে তার ভাঙ্গা অন্তর জোড়া লাগাবে? ব্যথামোড়া স্মৃতি ভুলিয়ে দিয়ে কে তার অন্তরে সুখের আলো জ্বেলে দেবে?
.
'আল্লাহর প্রতি সুধারণা'—এ এমন এক আমল, যার অভাব বান্দাকে ধাবিত করে আত্মহননের দিকে। রূহ তখনই মরে যায় যখন সে আর সুধারণা রাখতে পারে না। লক্ষ্য করলে দেখবেন, কুফর, শিরক, বড় বড় সব পাপের মূলেই এই সুধারণার অভাব।
.
তেমনি এই সুধারণার মাত্রা যখন ক্রমেই বৃদ্ধি পেতে থাকে, বান্দা ততই ইহসানের স্তরে উঠতে থাকে। সিদ্দীকদের কাতারে পৌঁছে যায়। মজার বিষয় হচ্ছে, এটা পুরোটাই মনের খেলা। মনের জানালা দিয়ে আপনি কীভাবে দেখছেন—তার ওপর নির্ভর করছে সুধারণা। এই দেখাই আপনাকে আলাদা করে দেবে সাধারণদের কাতার থেকে, নিয়ে যাবে অসাধারণদের মিলনমেলায়। এই দেখাই আপনার আমলকে করবে দামী, মনকে করবে সবচেয়ে নির্মল, প্রশান্ত।
.
ইমাম ইবনুল-কাইয়্যিম রহ. বলেন,
'আল্লাহর প্রতি সুধারণা রাখার বিষয়টি ইহসানের সাথে সম্পৃক্ত। তাই মুহসিন মাত্রই সে তার রবের প্রতি সুধারণা রাখে। সে বিশ্বাস করে, তার রব এই ইহসানের ভিত্তিতে প্রতিদান দেবেন। তাঁর রব ওয়াদার বরখেলাপ করেন না। তিনি বান্দার তাওবাহ কবুল করেন। কাউকে ফিরিয়ে দেন না।
পক্ষান্তরে কোনো পাপী যখন লাগামহীন পাপাচারে লিপ্ত হয়, যুলুম করতে থাকে, তখন তার পাপ, যুলুম আর হারাম কৃতকর্মগুলো ভীতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ফলে সে তার রবের প্রতি সুধারণা রাখতে পারে না। তাঁর আনুগত্য থেকে বের হয়ে যায়।
.
হাসান বাসরি রহ. বলেন,
"মুমিন স্বীয় রবের প্রতি সুধারণা রাখে। ফলে তার আমলও হয় উত্তম। পক্ষান্তরে পাপি স্বীয় রবের প্রতি খারাপ ধারণা রাখে। ফলে তার আমলও হয় নিকৃষ্ট।"'
[জাওয়াবুল-কাফী, পৃঃ ৫৯]
.
আর তাই আমাদের সালাফদের অন্যতম আমল ছিল হুসনুয-যন্ন বিল্লাহ, আল্লাহর প্রতি সুধারণা। তাদের মধ্যে যে যত অগ্রাগামী, সে ততই আল্লাহর প্রতি সুধারণায় অগ্রগামী ছিল। কিন্তু আজ আমরা এই আমল হারিয়ে ফেলেছি। না কোনো ওয়াজ মাহফিলে এই বিষয়ে আলোচনা শুনি, না বাজারে এই বিষয়ে কোনো বই খুঁজে পাই। মানুষ হতাশ হবে না কেন? নাস্তিক হবে না কেন? আত্মহত্যা করবে না কেন? আমরা যে তাকে চেনাতে পারিনি, কে তোমার আল্লাহ!
.
এই বিষয়ে ইমাম ইবনু আবিদ-দুনইয়া রহ. চমৎকার একটি কাজ করে গেছেন হাজার বছর আগে। আল্লাহর প্রতি সুধারণা বিষয়ে আমাদের পূর্ববর্তীগণ কতটা অগ্রগামী ছিলেন, এ ব্যাপারে তাদের বক্তব্য, সুধারণা রাখার ফজিলত, উপায় আসবাব ইত্যাদি নিয়ে লিখেছেন 'হুসনুয যন্ন বিল্লাহ'। পূর্ববর্তীদের উক্তিগুলো তিনি সংকলন করেছেন।
.
আল্লাহর প্রতি সুধারণা
140 BDT179 BDTSave 39 BDT
sold_units 2
1
আল্লাহর প্রতি সুধারণা
লেখক : ইমাম ইবনু আবিদ দুনইয়া
প্রকাশনী : ওয়াফি পাবলিকেশন
বিষয় : আত্মশুদ্ধি ও অনুপ্রেরণা
আমাদের অন্তরগুলো যদি শতভাগ পবিত্র হতো, আমরা এক নিমেষের জন্যও আল্লাহকে ভুলতে পারতাম না। সত্যি বলতে একজন বান্দা তখনই তার রবকে ভুলে যায়, যখন সে তাঁর পরিচয় হারিয়ে ফেলে। তাকদীর নিয়ে হতাশা, বিপদ আপদে ভেঙ্গে পড়া ইত্যাদি অন্তরের রোগ বান্দাকে চেপে ধরে। জীবন হয় বিষাদময়। সুখানুভূতির ছিটেফোঁটাও থাকে না তাতে।
.
বাবা-মাকে হারিয়ে ফেলা শিশু যেমন এতিম, রবকে হারিয়ে ফেলে বান্দাও তেমনি এতিম। বরং শিশুকে আশ্রয় দানকারীর অভাব হয়ত হবে না। কিন্তু রবকে হারিয়ে ফেলা বান্দা কোথায় যাবে...? রব যদি বান্দাকে ছেড়ে যায়, বান্দা কার কাছে আশ্রয় নেবে? যখন সকল আশা ভরসা ফিকে হয়ে যায়, তখন বান্দা কার ওপর আশা রাখবে? কে তার ভাঙ্গা অন্তর জোড়া লাগাবে? ব্যথামোড়া স্মৃতি ভুলিয়ে দিয়ে কে তার অন্তরে সুখের আলো জ্বেলে দেবে?
.
'আল্লাহর প্রতি সুধারণা'—এ এমন এক আমল, যার অভাব বান্দাকে ধাবিত করে আত্মহননের দিকে। রূহ তখনই মরে যায় যখন সে আর সুধারণা রাখতে পারে না। লক্ষ্য করলে দেখবেন, কুফর, শিরক, বড় বড় সব পাপের মূলেই এই সুধারণার অভাব।
.
তেমনি এই সুধারণার মাত্রা যখন ক্রমেই বৃদ্ধি পেতে থাকে, বান্দা ততই ইহসানের স্তরে উঠতে থাকে। সিদ্দীকদের কাতারে পৌঁছে যায়। মজার বিষয় হচ্ছে, এটা পুরোটাই মনের খেলা। মনের জানালা দিয়ে আপনি কীভাবে দেখছেন—তার ওপর নির্ভর করছে সুধারণা। এই দেখাই আপনাকে আলাদা করে দেবে সাধারণদের কাতার থেকে, নিয়ে যাবে অসাধারণদের মিলনমেলায়। এই দেখাই আপনার আমলকে করবে দামী, মনকে করবে সবচেয়ে নির্মল, প্রশান্ত।
.
ইমাম ইবনুল-কাইয়্যিম রহ. বলেন,
'আল্লাহর প্রতি সুধারণা রাখার বিষয়টি ইহসানের সাথে সম্পৃক্ত। তাই মুহসিন মাত্রই সে তার রবের প্রতি সুধারণা রাখে। সে বিশ্বাস করে, তার রব এই ইহসানের ভিত্তিতে প্রতিদান দেবেন। তাঁর রব ওয়াদার বরখেলাপ করেন না। তিনি বান্দার তাওবাহ কবুল করেন। কাউকে ফিরিয়ে দেন না।
পক্ষান্তরে কোনো পাপী যখন লাগামহীন পাপাচারে লিপ্ত হয়, যুলুম করতে থাকে, তখন তার পাপ, যুলুম আর হারাম কৃতকর্মগুলো ভীতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ফলে সে তার রবের প্রতি সুধারণা রাখতে পারে না। তাঁর আনুগত্য থেকে বের হয়ে যায়।
.
হাসান বাসরি রহ. বলেন,
"মুমিন স্বীয় রবের প্রতি সুধারণা রাখে। ফলে তার আমলও হয় উত্তম। পক্ষান্তরে পাপি স্বীয় রবের প্রতি খারাপ ধারণা রাখে। ফলে তার আমলও হয় নিকৃষ্ট।"'
[জাওয়াবুল-কাফী, পৃঃ ৫৯]
.
আর তাই আমাদের সালাফদের অন্যতম আমল ছিল হুসনুয-যন্ন বিল্লাহ, আল্লাহর প্রতি সুধারণা। তাদের মধ্যে যে যত অগ্রাগামী, সে ততই আল্লাহর প্রতি সুধারণায় অগ্রগামী ছিল। কিন্তু আজ আমরা এই আমল হারিয়ে ফেলেছি। না কোনো ওয়াজ মাহফিলে এই বিষয়ে আলোচনা শুনি, না বাজারে এই বিষয়ে কোনো বই খুঁজে পাই। মানুষ হতাশ হবে না কেন? নাস্তিক হবে না কেন? আত্মহত্যা করবে না কেন? আমরা যে তাকে চেনাতে পারিনি, কে তোমার আল্লাহ!
.
এই বিষয়ে ইমাম ইবনু আবিদ-দুনইয়া রহ. চমৎকার একটি কাজ করে গেছেন হাজার বছর আগে। আল্লাহর প্রতি সুধারণা বিষয়ে আমাদের পূর্ববর্তীগণ কতটা অগ্রগামী ছিলেন, এ ব্যাপারে তাদের বক্তব্য, সুধারণা রাখার ফজিলত, উপায় আসবাব ইত্যাদি নিয়ে লিখেছেন 'হুসনুয যন্ন বিল্লাহ'। পূর্ববর্তীদের উক্তিগুলো তিনি সংকলন করেছেন।
.