দুরন্ত নিশাচরের’
উইলসনের দাদা মিস্টার হেনরি জর্ডান ছিলেন প্রখ্যাত মিশনারি কর্মকর্তা। ধর্মপ্রচারের জন্য যুবক বয়সে স্ত্রী-সন্তান ফেলে পাড়ি জমিয়েছিলেন কলকাতায়। জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আর ফিরে যাননি নিউইয়র্কে। মৃত্যুর দশ বছর আগে থেকে হঠাৎ তার মাঝে ব্যাপক পরিবর্তন দেখা দেয়। পরিবারের সাথে ন্যূনতম যোগাযোগটুকুও রক্ষা করেন না। মিশনারির সমস্ত দায়িত্ব থেকেও ইস্তফা দিয়ে দেন। সবার চোখের আড়ালে চলে যান মিস্টার হেনরি। তার এ নিবিড় একাকীত্বের রহস্য সবারই অজানা। মিশনারির দায়িত্ব পেয়ে বাংলাদেশে আসার আগে উইলসনকে তার বাবা কলকাতা পাঠায় দাদার খোঁজে। উইলসনও যেহেতু দাদার মতোই নিজেকে ধর্মের জন্য উৎসর্গ করেছিল, তাই তারও একান্ত ইচ্ছে ছিল দাদার সাক্ষাত পাওয়া।বিভিন্ন সুত্র ধরে অনেক খোঁজাখুঁজির পর মিস্টার হেনরি জর্ডানকে পাওয়া গেল শ্রীরামপুরের এক গ্রামে। পরিচয় দেবার পর নাতিকে বুকে টেনে নিলেন তিনি। বয়োবৃদ্ধ দাদা তার যুবক নাতিকে শোনালেন জীবনের নানান অভিজ্ঞতার গল্প। তবে এতশত গল্পের ফাঁকে ভুলেও মিস্টার হেনরি নিজের ব্যাপারে কোনো রহস্যের খোলাসা করেননি। ফেরার সময় উইলসনকে প্রকাণ্ড এক ডায়েরি দেন মিস্টার হেনরি। সেটা ছিল দাদার পক্ষ থেকে নাতিকে দেওয়া প্রথম ও শেষ উপহার। ডায়েরির কথা এতদিন কেন মাথায় এল না—তার পেছনেও যুক্তি আছে। মিস্টার হেনরি বলেছিলেন, ‘তুমি যখন হতাশ হয়ে পড়বে, তখন আমার এই ডায়েরি খুলবে; এর আগে নয়।’তার মানে দাঁড়াচ্ছে, উইলসন সত্যিই হতাশ! সে নিজেকে হতাশাগ্রস্ত মেনে না নেবার জন্য বেশ কয়েকবার ডায়েরির কথা ভুলতে চেয়েছে। কিন্তু ডায়েরি ইতিমধ্যে তার টেবিল পর্যন্ত চলে এসেছে, আর সে টেবিলের সামনে বসে আছে। এরিনকে গতকাল রাতে সে অদ্ভুত কণ্ঠে বলেছে,‘এরিন! আমি বিরতি চাই!’‘কীসের বিরতি!’‘কিছুদিন পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে চাই!’‘কী পড়বে?’‘দাদার ডায়েরি!’‘পড়! না করেছে কে? সারাদিনের কাজ শেষ করে রাতে ঘুমানোর আগে ঘন্টাখানেক পড়বে!’‘না! ওটা যতদিন পড়ব, ততদিন অন্য কোনো কাজ করতে চাচ্ছি না।’‘হোয়াট! বাইরে কী চলছে জানো তুমি? ম্যান ফর ম্যান ফাউন্ডেশন আমাদের গ্রামে ধর্মীয় স্কুল ওপেন করেছে। আমরা যেমন বিশ্বাস করি, চার্চ ও মিশনারি স্কুল হচ্ছে আমাদের পাওয়ার হাউজ, ওরাও মাদরাসা-মসজিদকে তাই মনে করে। ওপর থেকে বারবার বলা হচ্ছে—নতুন কিছু ভাবতে। এই মুহূর্তে তুমি আছো ডায়েরি নিয়ে? কী আছে ওই ডায়েরিতে? কী কাজে আসবে তোমার?’ একাধারে মেশিনের মতো বলে যায় এরিন। তার ভ্রু কুঁচকে আছে।‘আমার জন্য এটা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। আপাতত এ ব্যাপারে কথা বাড়াতে চাচ্ছি না। আমাকে একটু সময় দাও। তুমি ওদিকটা সামলে নাও।’‘সেই জেদিই রয়ে গেছ। গুডলাক।’ এ বলে চুপ হয়ে গেল এরিন।এরিনকে ডায়েরির ব্যাপারে ভেঙে বলেনি উইলসন। তার হতাশার ব্যপারটা ফাঁস হয়ে যাওয়া ভালো ব্যাপার নয়। যাক, কোনোমতে এরিনকে বোঝানো গেছে। এবার উইলসন নিশ্চিন্তে গিয়ে টেবিলে বসে। ধীরে ধীরে ডায়েরির পাতা উল্টায়। পৃষ্ঠাগুলো হলুদ হয়ে গেছে। যেন যেকোনো মুহূর্তে খুলে পড়বে। খুব সতর্কতার সাথে ডায়েরি পড়তে আরম্ভ করল উইলসন।হেনরি জর্ডানের এ রহস্যময় ডায়েরি ‘দুরন্ত নিশাচরের’ পাঠককে টেনে নিয়ে যাবে আলো-আঁধারের গন্তব্যে। ভয়, রহস্য, ইতিহাস, ঈমানজাগানিয়া দুরন্ত নিশাচরের পাতায় স্বাগত জানাচ্ছি পাঠক।
An Najahah Shop
Category List
All products

উইলসনের দাদা মিস্টার হেনরি জর্ডান ছিলেন প্রখ্যাত মিশনারি কর্মকর্তা। ধর্মপ্রচারের জন্য যুবক বয়সে স্ত্রী-সন্তান ফেলে পাড়ি জমিয়েছিলেন কলকাতায়। জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আর ফিরে যাননি নিউইয়র্কে। মৃত্যুর দশ বছর আগে থেকে হঠাৎ তার মাঝে ব্যাপক পরিবর্তন দেখা দেয়। পরিবারের সাথে ন্যূনতম যোগাযোগটুকুও রক্ষা করেন না। মিশনারির সমস্ত দায়িত্ব থেকেও ইস্তফা দিয়ে দেন। সবার চোখের আড়ালে চলে যান মিস্টার হেনরি। তার এ নিবিড় একাকীত্বের রহস্য সবারই অজানা। মিশনারির দায়িত্ব পেয়ে বাংলাদেশে আসার আগে উইলসনকে তার বাবা কলকাতা পাঠায় দাদার খোঁজে। উইলসনও যেহেতু দাদার মতোই নিজেকে ধর্মের জন্য উৎসর্গ করেছিল, তাই তারও একান্ত ইচ্ছে ছিল দাদার সাক্ষাত পাওয়া।
বিভিন্ন সুত্র ধরে অনেক খোঁজাখুঁজির পর মিস্টার হেনরি জর্ডানকে পাওয়া গেল শ্রীরামপুরের এক গ্রামে। পরিচয় দেবার পর নাতিকে বুকে টেনে নিলেন তিনি। বয়োবৃদ্ধ দাদা তার যুবক নাতিকে শোনালেন জীবনের নানান অভিজ্ঞতার গল্প। তবে এতশত গল্পের ফাঁকে ভুলেও মিস্টার হেনরি নিজের ব্যাপারে কোনো রহস্যের খোলাসা করেননি। ফেরার সময় উইলসনকে প্রকাণ্ড এক ডায়েরি দেন মিস্টার হেনরি। সেটা ছিল দাদার পক্ষ থেকে নাতিকে দেওয়া প্রথম ও শেষ উপহার। ডায়েরির কথা এতদিন কেন মাথায় এল না—তার পেছনেও যুক্তি আছে। মিস্টার হেনরি বলেছিলেন, ‘তুমি যখন হতাশ হয়ে পড়বে, তখন আমার এই ডায়েরি খুলবে; এর আগে নয়।’
তার মানে দাঁড়াচ্ছে, উইলসন সত্যিই হতাশ! সে নিজেকে হতাশাগ্রস্ত মেনে না নেবার জন্য বেশ কয়েকবার ডায়েরির কথা ভুলতে চেয়েছে। কিন্তু ডায়েরি ইতিমধ্যে তার টেবিল পর্যন্ত চলে এসেছে, আর সে টেবিলের সামনে বসে আছে। এরিনকে গতকাল রাতে সে অদ্ভুত কণ্ঠে বলেছে,
‘এরিন! আমি বিরতি চাই!’
‘কীসের বিরতি!’
‘কিছুদিন পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে চাই!’
‘কী পড়বে?’
‘দাদার ডায়েরি!’
‘পড়! না করেছে কে? সারাদিনের কাজ শেষ করে রাতে ঘুমানোর আগে ঘন্টাখানেক পড়বে!’
‘না! ওটা যতদিন পড়ব, ততদিন অন্য কোনো কাজ করতে চাচ্ছি না।’
‘হোয়াট! বাইরে কী চলছে জানো তুমি? ম্যান ফর ম্যান ফাউন্ডেশন আমাদের গ্রামে ধর্মীয় স্কুল ওপেন করেছে। আমরা যেমন বিশ্বাস করি, চার্চ ও মিশনারি স্কুল হচ্ছে আমাদের পাওয়ার হাউজ, ওরাও মাদরাসা-মসজিদকে তাই মনে করে। ওপর থেকে বারবার বলা হচ্ছে—নতুন কিছু ভাবতে। এই মুহূর্তে তুমি আছো ডায়েরি নিয়ে? কী আছে ওই ডায়েরিতে? কী কাজে আসবে তোমার?’ একাধারে মেশিনের মতো বলে যায় এরিন। তার ভ্রু কুঁচকে আছে।
‘আমার জন্য এটা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। আপাতত এ ব্যাপারে কথা বাড়াতে চাচ্ছি না। আমাকে একটু সময় দাও। তুমি ওদিকটা সামলে নাও।’
‘সেই জেদিই রয়ে গেছ। গুডলাক।’ এ বলে চুপ হয়ে গেল এরিন।
এরিনকে ডায়েরির ব্যাপারে ভেঙে বলেনি উইলসন। তার হতাশার ব্যপারটা ফাঁস হয়ে যাওয়া ভালো ব্যাপার নয়। যাক, কোনোমতে এরিনকে বোঝানো গেছে। এবার উইলসন নিশ্চিন্তে গিয়ে টেবিলে বসে। ধীরে ধীরে ডায়েরির পাতা উল্টায়। পৃষ্ঠাগুলো হলুদ হয়ে গেছে। যেন যেকোনো মুহূর্তে খুলে পড়বে। খুব সতর্কতার সাথে ডায়েরি পড়তে আরম্ভ করল উইলসন।
হেনরি জর্ডানের এ রহস্যময় ডায়েরি ‘দুরন্ত নিশাচরের’ পাঠককে টেনে নিয়ে যাবে আলো-আঁধারের গন্তব্যে। ভয়, রহস্য, ইতিহাস, ঈমানজাগানিয়া দুরন্ত নিশাচরের পাতায় স্বাগত জানাচ্ছি পাঠক।
বিভিন্ন সুত্র ধরে অনেক খোঁজাখুঁজির পর মিস্টার হেনরি জর্ডানকে পাওয়া গেল শ্রীরামপুরের এক গ্রামে। পরিচয় দেবার পর নাতিকে বুকে টেনে নিলেন তিনি। বয়োবৃদ্ধ দাদা তার যুবক নাতিকে শোনালেন জীবনের নানান অভিজ্ঞতার গল্প। তবে এতশত গল্পের ফাঁকে ভুলেও মিস্টার হেনরি নিজের ব্যাপারে কোনো রহস্যের খোলাসা করেননি। ফেরার সময় উইলসনকে প্রকাণ্ড এক ডায়েরি দেন মিস্টার হেনরি। সেটা ছিল দাদার পক্ষ থেকে নাতিকে দেওয়া প্রথম ও শেষ উপহার। ডায়েরির কথা এতদিন কেন মাথায় এল না—তার পেছনেও যুক্তি আছে। মিস্টার হেনরি বলেছিলেন, ‘তুমি যখন হতাশ হয়ে পড়বে, তখন আমার এই ডায়েরি খুলবে; এর আগে নয়।’
তার মানে দাঁড়াচ্ছে, উইলসন সত্যিই হতাশ! সে নিজেকে হতাশাগ্রস্ত মেনে না নেবার জন্য বেশ কয়েকবার ডায়েরির কথা ভুলতে চেয়েছে। কিন্তু ডায়েরি ইতিমধ্যে তার টেবিল পর্যন্ত চলে এসেছে, আর সে টেবিলের সামনে বসে আছে। এরিনকে গতকাল রাতে সে অদ্ভুত কণ্ঠে বলেছে,
‘এরিন! আমি বিরতি চাই!’
‘কীসের বিরতি!’
‘কিছুদিন পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে চাই!’
‘কী পড়বে?’
‘দাদার ডায়েরি!’
‘পড়! না করেছে কে? সারাদিনের কাজ শেষ করে রাতে ঘুমানোর আগে ঘন্টাখানেক পড়বে!’
‘না! ওটা যতদিন পড়ব, ততদিন অন্য কোনো কাজ করতে চাচ্ছি না।’
‘হোয়াট! বাইরে কী চলছে জানো তুমি? ম্যান ফর ম্যান ফাউন্ডেশন আমাদের গ্রামে ধর্মীয় স্কুল ওপেন করেছে। আমরা যেমন বিশ্বাস করি, চার্চ ও মিশনারি স্কুল হচ্ছে আমাদের পাওয়ার হাউজ, ওরাও মাদরাসা-মসজিদকে তাই মনে করে। ওপর থেকে বারবার বলা হচ্ছে—নতুন কিছু ভাবতে। এই মুহূর্তে তুমি আছো ডায়েরি নিয়ে? কী আছে ওই ডায়েরিতে? কী কাজে আসবে তোমার?’ একাধারে মেশিনের মতো বলে যায় এরিন। তার ভ্রু কুঁচকে আছে।
‘আমার জন্য এটা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। আপাতত এ ব্যাপারে কথা বাড়াতে চাচ্ছি না। আমাকে একটু সময় দাও। তুমি ওদিকটা সামলে নাও।’
‘সেই জেদিই রয়ে গেছ। গুডলাক।’ এ বলে চুপ হয়ে গেল এরিন।
এরিনকে ডায়েরির ব্যাপারে ভেঙে বলেনি উইলসন। তার হতাশার ব্যপারটা ফাঁস হয়ে যাওয়া ভালো ব্যাপার নয়। যাক, কোনোমতে এরিনকে বোঝানো গেছে। এবার উইলসন নিশ্চিন্তে গিয়ে টেবিলে বসে। ধীরে ধীরে ডায়েরির পাতা উল্টায়। পৃষ্ঠাগুলো হলুদ হয়ে গেছে। যেন যেকোনো মুহূর্তে খুলে পড়বে। খুব সতর্কতার সাথে ডায়েরি পড়তে আরম্ভ করল উইলসন।
হেনরি জর্ডানের এ রহস্যময় ডায়েরি ‘দুরন্ত নিশাচরের’ পাঠককে টেনে নিয়ে যাবে আলো-আঁধারের গন্তব্যে। ভয়, রহস্য, ইতিহাস, ঈমানজাগানিয়া দুরন্ত নিশাচরের পাতায় স্বাগত জানাচ্ছি পাঠক।
দুরন্ত নিশাচরের’
140 BDT280 BDTSave 140 BDT
1
উইলসনের দাদা মিস্টার হেনরি জর্ডান ছিলেন প্রখ্যাত মিশনারি কর্মকর্তা। ধর্মপ্রচারের জন্য যুবক বয়সে স্ত্রী-সন্তান ফেলে পাড়ি জমিয়েছিলেন কলকাতায়। জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আর ফিরে যাননি নিউইয়র্কে। মৃত্যুর দশ বছর আগে থেকে হঠাৎ তার মাঝে ব্যাপক পরিবর্তন দেখা দেয়। পরিবারের সাথে ন্যূনতম যোগাযোগটুকুও রক্ষা করেন না। মিশনারির সমস্ত দায়িত্ব থেকেও ইস্তফা দিয়ে দেন। সবার চোখের আড়ালে চলে যান মিস্টার হেনরি। তার এ নিবিড় একাকীত্বের রহস্য সবারই অজানা। মিশনারির দায়িত্ব পেয়ে বাংলাদেশে আসার আগে উইলসনকে তার বাবা কলকাতা পাঠায় দাদার খোঁজে। উইলসনও যেহেতু দাদার মতোই নিজেকে ধর্মের জন্য উৎসর্গ করেছিল, তাই তারও একান্ত ইচ্ছে ছিল দাদার সাক্ষাত পাওয়া।
বিভিন্ন সুত্র ধরে অনেক খোঁজাখুঁজির পর মিস্টার হেনরি জর্ডানকে পাওয়া গেল শ্রীরামপুরের এক গ্রামে। পরিচয় দেবার পর নাতিকে বুকে টেনে নিলেন তিনি। বয়োবৃদ্ধ দাদা তার যুবক নাতিকে শোনালেন জীবনের নানান অভিজ্ঞতার গল্প। তবে এতশত গল্পের ফাঁকে ভুলেও মিস্টার হেনরি নিজের ব্যাপারে কোনো রহস্যের খোলাসা করেননি। ফেরার সময় উইলসনকে প্রকাণ্ড এক ডায়েরি দেন মিস্টার হেনরি। সেটা ছিল দাদার পক্ষ থেকে নাতিকে দেওয়া প্রথম ও শেষ উপহার। ডায়েরির কথা এতদিন কেন মাথায় এল না—তার পেছনেও যুক্তি আছে। মিস্টার হেনরি বলেছিলেন, ‘তুমি যখন হতাশ হয়ে পড়বে, তখন আমার এই ডায়েরি খুলবে; এর আগে নয়।’
তার মানে দাঁড়াচ্ছে, উইলসন সত্যিই হতাশ! সে নিজেকে হতাশাগ্রস্ত মেনে না নেবার জন্য বেশ কয়েকবার ডায়েরির কথা ভুলতে চেয়েছে। কিন্তু ডায়েরি ইতিমধ্যে তার টেবিল পর্যন্ত চলে এসেছে, আর সে টেবিলের সামনে বসে আছে। এরিনকে গতকাল রাতে সে অদ্ভুত কণ্ঠে বলেছে,
‘এরিন! আমি বিরতি চাই!’
‘কীসের বিরতি!’
‘কিছুদিন পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে চাই!’
‘কী পড়বে?’
‘দাদার ডায়েরি!’
‘পড়! না করেছে কে? সারাদিনের কাজ শেষ করে রাতে ঘুমানোর আগে ঘন্টাখানেক পড়বে!’
‘না! ওটা যতদিন পড়ব, ততদিন অন্য কোনো কাজ করতে চাচ্ছি না।’
‘হোয়াট! বাইরে কী চলছে জানো তুমি? ম্যান ফর ম্যান ফাউন্ডেশন আমাদের গ্রামে ধর্মীয় স্কুল ওপেন করেছে। আমরা যেমন বিশ্বাস করি, চার্চ ও মিশনারি স্কুল হচ্ছে আমাদের পাওয়ার হাউজ, ওরাও মাদরাসা-মসজিদকে তাই মনে করে। ওপর থেকে বারবার বলা হচ্ছে—নতুন কিছু ভাবতে। এই মুহূর্তে তুমি আছো ডায়েরি নিয়ে? কী আছে ওই ডায়েরিতে? কী কাজে আসবে তোমার?’ একাধারে মেশিনের মতো বলে যায় এরিন। তার ভ্রু কুঁচকে আছে।
‘আমার জন্য এটা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। আপাতত এ ব্যাপারে কথা বাড়াতে চাচ্ছি না। আমাকে একটু সময় দাও। তুমি ওদিকটা সামলে নাও।’
‘সেই জেদিই রয়ে গেছ। গুডলাক।’ এ বলে চুপ হয়ে গেল এরিন।
এরিনকে ডায়েরির ব্যাপারে ভেঙে বলেনি উইলসন। তার হতাশার ব্যপারটা ফাঁস হয়ে যাওয়া ভালো ব্যাপার নয়। যাক, কোনোমতে এরিনকে বোঝানো গেছে। এবার উইলসন নিশ্চিন্তে গিয়ে টেবিলে বসে। ধীরে ধীরে ডায়েরির পাতা উল্টায়। পৃষ্ঠাগুলো হলুদ হয়ে গেছে। যেন যেকোনো মুহূর্তে খুলে পড়বে। খুব সতর্কতার সাথে ডায়েরি পড়তে আরম্ভ করল উইলসন।
হেনরি জর্ডানের এ রহস্যময় ডায়েরি ‘দুরন্ত নিশাচরের’ পাঠককে টেনে নিয়ে যাবে আলো-আঁধারের গন্তব্যে। ভয়, রহস্য, ইতিহাস, ঈমানজাগানিয়া দুরন্ত নিশাচরের পাতায় স্বাগত জানাচ্ছি পাঠক।
বিভিন্ন সুত্র ধরে অনেক খোঁজাখুঁজির পর মিস্টার হেনরি জর্ডানকে পাওয়া গেল শ্রীরামপুরের এক গ্রামে। পরিচয় দেবার পর নাতিকে বুকে টেনে নিলেন তিনি। বয়োবৃদ্ধ দাদা তার যুবক নাতিকে শোনালেন জীবনের নানান অভিজ্ঞতার গল্প। তবে এতশত গল্পের ফাঁকে ভুলেও মিস্টার হেনরি নিজের ব্যাপারে কোনো রহস্যের খোলাসা করেননি। ফেরার সময় উইলসনকে প্রকাণ্ড এক ডায়েরি দেন মিস্টার হেনরি। সেটা ছিল দাদার পক্ষ থেকে নাতিকে দেওয়া প্রথম ও শেষ উপহার। ডায়েরির কথা এতদিন কেন মাথায় এল না—তার পেছনেও যুক্তি আছে। মিস্টার হেনরি বলেছিলেন, ‘তুমি যখন হতাশ হয়ে পড়বে, তখন আমার এই ডায়েরি খুলবে; এর আগে নয়।’
তার মানে দাঁড়াচ্ছে, উইলসন সত্যিই হতাশ! সে নিজেকে হতাশাগ্রস্ত মেনে না নেবার জন্য বেশ কয়েকবার ডায়েরির কথা ভুলতে চেয়েছে। কিন্তু ডায়েরি ইতিমধ্যে তার টেবিল পর্যন্ত চলে এসেছে, আর সে টেবিলের সামনে বসে আছে। এরিনকে গতকাল রাতে সে অদ্ভুত কণ্ঠে বলেছে,
‘এরিন! আমি বিরতি চাই!’
‘কীসের বিরতি!’
‘কিছুদিন পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে চাই!’
‘কী পড়বে?’
‘দাদার ডায়েরি!’
‘পড়! না করেছে কে? সারাদিনের কাজ শেষ করে রাতে ঘুমানোর আগে ঘন্টাখানেক পড়বে!’
‘না! ওটা যতদিন পড়ব, ততদিন অন্য কোনো কাজ করতে চাচ্ছি না।’
‘হোয়াট! বাইরে কী চলছে জানো তুমি? ম্যান ফর ম্যান ফাউন্ডেশন আমাদের গ্রামে ধর্মীয় স্কুল ওপেন করেছে। আমরা যেমন বিশ্বাস করি, চার্চ ও মিশনারি স্কুল হচ্ছে আমাদের পাওয়ার হাউজ, ওরাও মাদরাসা-মসজিদকে তাই মনে করে। ওপর থেকে বারবার বলা হচ্ছে—নতুন কিছু ভাবতে। এই মুহূর্তে তুমি আছো ডায়েরি নিয়ে? কী আছে ওই ডায়েরিতে? কী কাজে আসবে তোমার?’ একাধারে মেশিনের মতো বলে যায় এরিন। তার ভ্রু কুঁচকে আছে।
‘আমার জন্য এটা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। আপাতত এ ব্যাপারে কথা বাড়াতে চাচ্ছি না। আমাকে একটু সময় দাও। তুমি ওদিকটা সামলে নাও।’
‘সেই জেদিই রয়ে গেছ। গুডলাক।’ এ বলে চুপ হয়ে গেল এরিন।
এরিনকে ডায়েরির ব্যাপারে ভেঙে বলেনি উইলসন। তার হতাশার ব্যপারটা ফাঁস হয়ে যাওয়া ভালো ব্যাপার নয়। যাক, কোনোমতে এরিনকে বোঝানো গেছে। এবার উইলসন নিশ্চিন্তে গিয়ে টেবিলে বসে। ধীরে ধীরে ডায়েরির পাতা উল্টায়। পৃষ্ঠাগুলো হলুদ হয়ে গেছে। যেন যেকোনো মুহূর্তে খুলে পড়বে। খুব সতর্কতার সাথে ডায়েরি পড়তে আরম্ভ করল উইলসন।
হেনরি জর্ডানের এ রহস্যময় ডায়েরি ‘দুরন্ত নিশাচরের’ পাঠককে টেনে নিয়ে যাবে আলো-আঁধারের গন্তব্যে। ভয়, রহস্য, ইতিহাস, ঈমানজাগানিয়া দুরন্ত নিশাচরের পাতায় স্বাগত জানাচ্ছি পাঠক।