An Najahah Shop
EN

ওগো শুনছ!

An Najahah Shop

ওগো শুনছ!
  • ওগো শুনছ!_img_0

ওগো শুনছ!

130 BDT260 BDTSave 130 BDT
sold_units 1
1

এক নজরে বই পরিচিতি
বই: ওগো শুনছ!
লেখক: মুহাম্মাদ আতীক উল্লাহ
প্রকাশনী: মাকতাবাতুল আযহার
পৃষ্ঠা: ১২৮


***সুবাহানাল্লাহ, মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মানুষকে আশরাফুল মাখলুকাত করে জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করেছেন। যাতে একে অপরে সহযোগী হয়ে নির্বিঘ্নে একমাত্র মালিকেরই দাসত্ব করে যেতে পারে। সেই সাথে মহান রব শরীয়াহর যাবতীয় দিকনির্দেশনা ও সতর্কতা প্রদানের জন্য যুগে যুগে অসংখ্য নবী-রাসুল ও আসমানী কিতাব প্রেরণ করেছেন। যাতে বান্দাগণ তার আদেশ-নিষেধ জেনে আমল করে, কৃতকর্মের উপযুক্ত প্রতিদান গ্রহণ করতে পারে। তেমনিভাবে দয়াময় আল্লাহ তায়ালা দ্বীন পালনকে আমাদের জন্য সহজ করেছেন।যেমনভাবে যিনাকে হারাম আর বিবাহকে হালাল করেছেন।তেমনি সুদকে হারাম আর ব্যবসাকে হালাল করেছেন।অথচ আমরা নফস আর শয়তানের প্ররোচনায় হালাল গ্রহণ না করে,হারাম গ্রহণেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি।নাঊযুবিল্লাহ।অতএব মূল কথা হলো আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ধর্ম হিসেবে একমাত্র ইসলামকেই আমাদের জন্য সুস্পষ্ট মনোনীত জীবন ব্যবস্থা হিসেবে নির্ধারণ করেছেন। অথচ আজকে আমরা ইসলাম পালন করছি ঠিকই কিন্তু সেটা নামকাওয়াস্তে অন্তসারশূন্য ইসলাম। যার দরুন আমরা আন্তরিকভাবে ইসলামকে বুঝার ও মানার চেষ্টা তো করছিই না,আবার অনৈসলামিক পাশ্চাত্য কৃষ্টি কালচারকে মনে প্রাণে গ্রহণ করছি। ফলে আমাদের জীবনের প্রতিটি সেক্টর ইসলাম বিরোধী কার্যকলাপে সয়লাব। বিশেষ করে আমাদের হেদায়েত গ্রহণের সর্বোচ্চ সেক্টর হলো, 'দ্বীনি শিক্ষা ব্যবস্থা'।অথচ আজ আমরা সে শিক্ষা গ্রহণ করা থেকে বিমুখ থেকে অনৈসলামিক, সেক্যুলার ও শরিয়া বিধ্বংসী শিক্ষা ব্যবস্থা, কারিকুলাম গ্রহণ করেছি। যার দরুন সেক্যুলার,নাস্তিক ও চরিত্রহীন ব্যক্তিদের খোদাদ্রোহী, অশ্লীল,বেহায়াপনা লেখাগুলো আমাদেরকে কিভাবে ধ্বংসের অতল গহ্বরে নিক্ষেপ করছে,তা এখন বলার অপেক্ষা রাখে না। তাই এই করুন পরিস্থিতিতে লেখক মুহাম্মাদ আতিকুল্লাহ হাফিজাহুল্লাহ এই জাতি কে অসুস্থ সাহিত্য ও সংস্কৃতির করাল গ্রাস থেকে পুনরুদ্ধারের জন্য, সম্পূর্ণ নতুন আঙ্গিকে এই জাতিকে এমন কিছু দেয়ার চেষ্টা করেছেন যা সত্যিই যুগোপযোগী,অতুলনীয় ও প্রশংসনীয়।

***বইটিতে যা থাকছে,
"ওগো শুনছ" বইটিতে দুই মলাটের ভাজে মোট ১৭টি গল্প রয়েছে। প্রতিটি গল্পে রয়েছে সীমাহীন অভিজ্ঞতা ও শিক্ষা। শুরুতেই যে গল্পটি আছে " দুই এতিমের সংসার"
গল্পটি পড়ে চোখের জল ধরে রাখা কঠিন। কারণ একজন ইয়াতীম অসহায় ব্যক্তি যখন সুযোগ থাকা সত্ত্বেও,তুচ্ছ এই দুনিয়ার লোভ-লালসাকে লাথি মেরে, জীবনসঙ্গিনী গ্রহণের ক্ষেত্রে আখেরাতকে প্রাধান্য দেওয়ার পাশাপাশি আল্লাহর উপর পূর্ণ তাওয়াক্কুল করার চিত্রগুলো সত্যি বিবেককে নাড়া দিয়ে দেয়।

* "জান্নাত মহল" ও "গৃহ সংবিধান" গল্প দুটিতে আদর্শ সন্তান গড়ে তোলার ক্রিয়েটিভ ট্রেনিং অত্যন্ত চমৎকারভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। যা একজন সচেতন বাবা-মাকে খুবই বিস্মিত ও উৎসাহিত করবে।

* "বধূয়া" ও "পড়ুয়া মেয়েটিকে বধূয়া কর" গল্প দুটি একজন অসচেতন যুবককে জীবন পরিবর্তনের নতুন পথ দেখিয়ে দেবে। সেই সাথে একজন প্রেমময়ী, পুতপবিত্র ও ধার্মিক জীবনসঙ্গিনী গ্রহণের ক্ষেত্রে সে ভুল করবে না।

* "আমার বিয়ে ও বিবি" গল্পটিতে আদর্শ দাম্পত্য জীবনের বাস্তব প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছে। যেখানে স্বামী-স্ত্রী থেকে শুরু করে মা-বাবা বিশেষ করে যুবকদের জন্য রয়েছে খুবই ক্রিয়েটিভ ও চমৎকার শিক্ষা। তেমনি যুবতীদের জন্যও রয়েছে ব্যাপক শিক্ষা যে কিভাবে তারা একজন আদর্শ দম্পতি হতে পারবে। তাছাড়া সঙ্গী গ্রহণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ উপদেশ হলো: শুধু চেহারার সৌন্দর্য না দেখে, মনের সৌন্দর্যকেই সর্বাগ্রে লক্ষ্য করো।

* " হারানো প্রেম" এই গল্পটি পড়লে অন্তরে যে রোমান্টিকতা কাজ করে তা লিখে বুঝানো সম্ভব নয়। লেখক এখানে অবিবাহিতদেরক 'ঝুপ বুঝে কুপ মারা' অর্থাৎ সময় ও সুযোগমতো দ্বীন পূর্ণ করার সুযোগ পেলে তা মিস করতে নিষেধ করেছেন। যাতে একটু সাহস ও বুদ্ধির অভাবে যেন হালাল কাজ বিলম্ব হওয়ার কারণে,পরবর্তীতে পস্তাতে না হয়।

* "বাড়ির কাজ" গল্পটিতে আদর্শ সন্তান গঠনের খুবই উপকারী ও কার্যকর উপদেশগুলো সুচারুভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। যেখানে সন্তানের পাশাপাশি পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও আদর্শবান ও দ্বীনদার হয়ে উঠবে। তখন একটি পরিবার দুনিয়াতেই জান্নাতের প্রশান্তি অনুভব করতে পারবে।

* "হুন্না লিবাস - বডি হিটার" গল্পটিতে দুটি শব্দের মধ্যে পুরো দাম্পত্য জীবনকে গেঁথে দেয়া হয়েছে। সুবাহানাল্লাহ, পবিত্র কোরআনে মহান রাব্বুল আলামিন, এই দুটি শব্দ উল্লেখ করে স্বামী- স্ত্রীকে সম্বোধন করে,তাদের দাম্পত্য জীবনকে সুখময় ও স্বপ্নময় করার যে সূক্ষ্ম দিকনির্দেশনা দান করেছেন। সে ব্যখ্যা-বিশ্লেষণই অত্যন্ত চমৎকারভাবে লেখক ফুটিয়ে তুলেছেন এই গল্পে।

* "ওয়াসজুদ ওয়াকতারিব"গল্পটিতে চরম ধৈর্যের এক জ্বলন্ত উদাহরণ দেয়া হয়েছে। গল্পটি পড়লে ধৈর্যই যে সফলতা চাবিকাঠি তাতে কোন সন্দেহ থাকবে না। কারণ একটি অসহায় নারী যখন তার পরিবারের সব সদস্যের থেকে শত জুলুম নির্যাতনের জাঁতাকলে পিষ্ট হয়ে,এই জীবনের উদ্দেশ্যকেই ভুলে গিয়েছিল।তখন সে একমাত্র সহায় হিসেবে পেয়েছিল মহান প্রভুকে। যে কষ্ট বেদনা, বালা-মুসিবতের কথা পৃথিবীর কাউকে বলা যায় না,সেটাও নির্বিঘ্নে মহান আল্লাহকে বলা যায়। এভাবে লেখক পবিত্র কুরআন থেকে চয়নকৃত এই শব্দ দুটির ব্যাখ্যা অত্যন্ত চমৎকারভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।

*"সাকানা- মাওয়াদ্দাহ-রহমাহ" শিরোনামে লেখক কোরআন ও বাস্তব জীবনের গল্প উল্লেখ করে দাম্পত্য জীবনকে প্রশান্তিময় ও মধুময় করার বর্ণনা খুবই সুন্দরভাবে উল্লেখ করেছেন। তাছাড়া আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ব্যাপক অর্থবোধক এই শব্দ তিনটিতে কিভাবে দাম্পত্য জীবনকে সুক্ষ্মভাবে বর্ণনা করেছেন, তা লেখক তার বইতে সুস্পষ্ট করেছেন।

* "দাদু নাতনিকে" গল্পে লেখক নববধূকে বিদায়ের পূর্ব মুহূর্তে দেওয়া খুবই প্রাসঙ্গিক ও সুপরিকল্পনীয় উপদেশগুলো, সুচারুভাবে উল্লেখ করেছেন। যা সত্যিকারার্থে একজন নববধূকে আদর্শ পরিবার গঠনে সহায়তা করবে।

* " বাসর"গল্পটি পড়লে মনে হবে এটি যেন কোন বাস্তব স্বামী-স্ত্রীর বাসর রাতের সংলাপ। তেমনি গল্পটিতে কোন প্রকার অশ্লীলতা ছাড়াই হাস্যরসাত্মকভাবে একটি সত্যিকারের বাসর রাতের অভিনয় পেশ করে,বাস্তব জীবনের অনেক কিছুই শেখানো হয়েছে।

*" খাইরুল মাতা গুনাই বিবি" গল্পটিতে একজন স্বামী-স্ত্রী কিভাবে তাদের ভালোবাসা ও মহব্বতকে মৃত্যু পর্যন্ত অটুট রাখতে পারে তা চমৎকারভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। অবাক হওয়ার বিষয়টি হলো,কিরূপ ভালোবাসা একে অপরের প্রতি অর্জিত হলে,একজন মারা গেলে অপরজন সে দুঃখ,বিরহের যাতনা সইতে না পেরে কিছুদিনের মধ্যেই পরপারে পাড়ি জমায়।

*বই সম্পর্কে কিছু কথা,
আপনারা উপরোল্লিখিত গল্পের শিরোনাম ও বিষয়বস্তু দেখেই বুঝতে পারছেন যে, বইটি কেমন হতে পারে! তবে পুরোদস্তুর বইটি যেন দাম্পত্য জীবনের অজ্ঞতা ও কলহ সমাধানের পাশাপাশি একটি আদর্শ ও রোমান্টিক পরিবার গঠনের প্র্যাকটিকেল প্রেসক্রিপশন। তেমনি বইটি সময়ের এই ক্রান্তিলগ্নে সন্তানকে উম্মাহর পাঞ্জেরীরূপে গড়ে তোলার ক্রিয়েটিভ দিকনির্দেশনা হিসেবেও ভূমিকা রাখবে। তবে বিশেষ করে বইটি অবিবাহিত যুবক-যুবতীদের উপযুক্ত জীবনসঙ্গীনী নির্বাচনের পাশাপাশি অশ্লীলতা ও চরিত্রহরণের মায়াজাল থেকে নিজেকে বাঁচানোর এক চমৎকার ও আধুনিক পদক্ষেপ গ্রহণে সহায়তা করবে।

সর্বশেষে,চমকপ্রদ হলো পাঠক এক বৈঠকেই বইটি পড়ে শেষ করতে পারবে। তাছাড়া পাঠক একবার বইটি পড়তে শুরু করলে, মনের অজান্তেই বইটি শেষ করে কোন প্রকার ক্লান্তি বা ক্লেশের অনুভব ছাড়াই লেখকের অন্যান্য লেখাগুলো পড়তে আগ্রহী হবে। ইনশাআল্লাহ।
সুতরাং এরকম একজন সৃজনশীল লেখকের বই পড়ার পাশাপাশি অন্যকে উৎসাহিত করতে কে না চাইবে!তাই আমি আশা করি, লেখক এই নির্যাতিত ও বিশৃঙ্খল উম্মাহর মুক্তির লক্ষ্যে এমন কিছু নতুনত্ব উপহার দিবে, যা আমাদের এক পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ করবে।