An Najahah Shop
EN

আমি কারো মেয়ে নই

An Najahah Shop

আমি কারো মেয়ে নই
  • আমি কারো মেয়ে নই_img_0

আমি কারো মেয়ে নই

240 BDT400 BDTSave 160 BDT
1

বই পরিচিতিঃ
বইয়ের নামঃ আমি কারো মেয়ে নই
লেখকঃ এনায়েতুল্লাহ আলতামাশ
অনুবাদকঃ মাওলানা মুহাম্মদ আবদুল আলিম
হুদ হুদ প্রকাশন।
মুদ্রিত মূল্য ৪০০/-
পৃষ্ঠা ২৪০/-


১৯৭০ এর অসম্ভব এক সুন্দরী ও উঁচু পর্যায়ের
পতিতার আত্মকথন। ১৯৪৭-এ দেশ ভাগের
সময় যার বয়স ছিলো ৬ বছর।

এটা এমন এক পতিতার আত্মকথন যা পড়ে
ঐ পতিতার জন্য দোআ করতে মনে চাইবে।
৭৮ নম্বর পৃষ্ঠায় গিয়ে আমি নিশ্চিত, আপনি
হু হু করে কেঁদে উঠবেন। আবার ঘৃনাও জাগবে।
আর ১৪৩ নম্বর পৃষ্ঠায় এসে হয়ত আপনার
গায়ের লোম দাড়িয়ে যাবে। দাঁতে দাঁত পিষবেন।
এমন বিচিত্রময় বহু পৃষ্ঠা আছে বক্ষমান বইয়ে।

বইটি তার পাঠককে চুম্বকের মত টেনে রাখে
আসরের পর থেকে শুরু করে ফজর পর্যন্ত
একনাগাড়ে বইটি পড়ে শেষ করলাম।
মাঝখানে নামায ও খাবারের বিরতি ছিলো।
সারারাত একটুও অলসতা বা তন্দ্রা ভাবও আসেনি।

এটা জাস্ট কোনো বই নয়
এটা সমাজের বাস্তব আয়না।

বইয়ে একটি শিরোনাম আছে
"খদ্দের হয়ে এলো আপন ভাই"
তার লেখাটুকু পড়ে আপনার ভাষাটুকু
হারিয়ে ফেলবেন। স্তব্ধ হয়ে যাবেন আপনি।

এই বইয়ের চরিত্রের মেয়েটি যদিও পাকিস্তানের
কিন্তু এমন চরিত্র আমার দেশেও ভুরি ভুরি।

বইটিতে ১৯৪৭ এর দেশভাগের দাঙ্গার লোমহর্ষক
কিছু বাস্তব চিত্র দেখতে পাবেন। আপনার মনে হবে শত্রুরা মুসলিমদের উপর অকথ্য নির্যাতন, বোনের ইজ্জত লুন্ঠন, দুগ্ধপোষ্য শিশুকে জলন্ত আগুনে
নিক্ষেপ, যেন আপনার সামনেই ঘটাচ্ছে।

অসম্ভব হৃদয়গ্রাহী শ্বাসরুদ্ধকর আত্মজীবনী।
বইয়ের প্রতিটি পাতায় আপনাকে কাপিয়ে দিবে।
কখনো আপনি বই বন্ধ করে চোখের পানি ফেলবেন
আমি মনে করি এদেশের প্রতিটি প্রাপ্ত বয়স্ক
নাগরিকের বইটি পড়া উচিৎ। প্রতিটি পরিবারের
সদস্যদের জন্য এই বইটি আয়না স্বরুপ।
অনেকেরই বিবেকের দরজা খুলে যাবে।

এই বই চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিবে
সমাজের আসল অপরাধী করা। ও কাদের
মদদে, ভালো মানুষও অপরাধী হয়ে ওঠে।

একজন পতিতা তার অন্ধকার জগতের কথা
তার অপবিত্র রাতের বর্ণনা, অবলীলায় কেন
বললেন? তার নিজের ভাষায় শুনুন।👇

"আমি এই কাহিনী এ জন্য শোনালাম না যে,
আপনি আমার উপর অভিশাপ দিবেন, অথবা
আমার প্রতি অনুকম্পা দেখাবেন। আমার উদ্দেশ্য
হচ্ছে নিজের ছেলেমেয়ের উপর দয়া করুন।
আমার থেকে শিক্ষা নিন। আমার কাহিনী শোনার
পর মাথা নিচু করে চিন্তা করুন যে, অভিশাপের
উপযুক্ত কি আমি, নাকি অন্য কেউ? আমি তো মেথর।
যখন আপনার বাড়ির বর্জ্যভরা টুকরি মাথায় নিয়ে
আপনার পাশ দিয়ে অতিবাহিত হই, তখন আপনি
নাকে হাত বা রুমাল চেপে দূরে সরে যান।....
পতিতাবৃত্তির অপরাধে শুধু আমাকে গ্রেফতার
করলে আপনার সোসাইটি পবিত্র হবে না। একটু
চিন্তা করে দেখুন যে, বিদেশীরা কীভাবে আপনাদের
নতুন প্রজন্মকে নিজেদের ছাঁচে গড়ে তুলছে।
আমার উপর ফতুয়া জারি করার আগে। ওইসব
জায়গা একটু খোঁজ নিয়ে দেখুন, যেগুলো আমি
শনাক্ত করে দিয়েছি। আমার কাহিনী স্বতন্ত্র বা
নতুন নয়। আপনাদের সোসাইটি এমন কাহিনীমালা
দিয়ে ভরে আছে। পার্থক্য শুধু এতটুকু যে, আমি
নিজের দাস্তান শুনিয়ে দিলাম" (পৃষ্ঠা ১০)

এবার বইয়ের কিছু চুম্বাকাংশ তুলে ধরছি
যা আমার হৃদয়ে প্রচন্ড ধাক্কা দিয়েছে :

ব্যভিচার শুধু পতিতালয় এবং নির্দিষ্ট স্থানে হয় না।
নতুন সংস্কৃতির আড়ালে বাড়িতে বাড়িতেও হয়ে থাকে।
কলেজ ও ক্যাম্পাসে হয়। হোটেল ও উদ্যানে হয়।
গাড়ির মধ্যে হয়। আপনার পাশের কুঠিতেও হয়।
এবং এও সম্ভব যে, আপনার নিজের কুঠিতেও হচ্ছে।
(পৃষ্ঠা ৪৭)

আমি আপনাকে সেইসব রাজনৈতিক নেতা দেখিয়ে
দিতে পারবো, যাদের কেউ পাকিস্তানকে ইসলামী,
কেউ গনতান্ত্রিক, এবং কেউ সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র
বানাতে চাইতেন; কিন্তু তারা আমার মতো মেয়েদের
হাতে শরাব পান করতেন এবং তাদের সাথে রাতযাপন
করতেন। জনসাধারণের চিন্তায় বিমুঢ় এসব লোককে
আমি এজাতীয় ইউরোপিয়ান হোটেলে এমন আয়েশ
করতে দেখেছি, যা মোগল খান্দানের রাজা
বাদশাদের ভাগ্যেও হয়তো জোটেনি (পৃষ্ঠা ৬৮)

১৯৬৪ এর পত্রপত্রিকা দেখেন,তাহলে সেগুলোতে
দেখতে পাবেন, প্রথম পাতাগুলোতেই আইয়ুবশাহীর
এক মন্ত্রীর বিবৃতি ছাপা হয়েছিল, যাতে তিনি
এই শব্দগুলো বলেছিলেন, আমরা পাকিস্তানে
খোলাফায়ে রাশেদীনের রাষ্ট্রব্যবস্থা বাস্তবায়ন
করেই দম নিব।' এই বিবৃতি তিনি মারীতে অবস্থান
করেই পত্রপত্রিকায় প্রেরণ করেছিলেন।
আমি মারীতেই পড়েছিলাম। ওই রাতেই তার নির্দেশ
'তাজা মাল চাই' অনুসারে আমি তার কামরায়
গিয়েছিলাম এবং ফিরেছিলাম তখন, যখন শরাব
ও নিদ্রা তাকে বেহুশ করে দিয়েছিল।আমি তাকে
জিজ্ঞেস করতে পারিনি, 'জনাব! খোলাফায়ে রাশেদীনের রাষ্ট্রব্যবস্থায় কি এগুলোর কিছু ছিল?
( পৃষ্ঠা ১৪৩)

এমন বাক্যগুলো সব লিখতে গেলে পোস্টের
পরিধি বেড়ে যাবে তাই এতটুকুই থাক।
বাকিটুকু বই পড়ে জেনে নিন।
কথা দিচ্ছি বইটি আপনাকে আপনার পরিবার,
আপনার আত্নীয়স্বজন, আপনার প্রতিবেশী,
সর্বপরি আপনার দেশ নিয়ে ভাবতে বাধ্য করবে।