কুরবানি নিয়ে যত প্রশ্ন
ইসলামের বিধানগুলোর মধ্যে কুরবানি অন্যতম একটি বিধান। সরাসরি কুরআন ও হাদিস দ্বারা প্রমাণিত এই বিধান। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন,فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَانْحَرْ.আপনি আপনার রবের উদ্দেশে সালাত আদায় করুন এবং কুরবানি করুন।কুরবানি সম্পর্কে ইদানীং আমরা কিছু প্রশ্ন শুনতে পাচ্ছি। মূলত কয়েকটা প্রশ্নই আমরা সচরাচর দেখতে পাই। একটা গ্রুপ পাবেন, যাদের মানুষের প্রতি দরদ নেই, জন্তুজানোয়ারের প্রতি দরদ উথলে ওঠে। তাদের যুক্তি হলো, প্রাণী হত্যা করাটাই নৈতিকতাবিরুদ্ধ অমানবিক একটা ব্যাপার। সবার উচিত শাকসবজি খেয়ে থাকা। এর সপক্ষে বিভিন্ন কুযুক্তি তারা দিতে চায়।আরেকটা গ্রুপ বলছে, প্রাণী হত্যা করা যাবে, খাওয়া যাবে, তারাও সারাবছর গোশত খায়। কিন্তু ধর্মের নামে কেন? ধর্ম বলবে মমতার কথা, দয়ার কথা। এ কেমন ধর্ম, যা প্রাণ হত্যার কথা বলে? তাদের কথা হলো, ঠিক আছে, প্রাণী হত্যা করা যাবে, কিন্তু প্রাণ হত্যা করে উৎসব কেন! কারও জীবন কেড়ে নিয়ে উৎসব, এটা কেমন নৈতিকতা! দেখুন, এরাই কিন্তু আবার লিবারেল পরিচয় দেয়। যখন ইসলামের কোনো বিধান তাকে শোনানো হয়, এসব মুসলিম নামধারীরা অন্যকে বলে, জাজমেন্টাল হচ্ছ কেন, তোমার নৈতিকতা আমার ওপর চাপিয়ে দিচ্ছ কেন। এরাই কিন্তু আবার কুরবানির সময় ঘনিয়ে এলে নিজের ভিত্তিহীন আলগা নৈতিকতা মুসলিমদের ওপর চাপিয়ে দিতে পরোয়া করে না। বোঝাই যাচ্ছে, এই দলের মূল অ্যালার্জি ইসলামে। প্রাণীর প্রতি দরদ-টরদ কিছু না।নাস্তিক বা ইসলামবিদ্বেষীদের মধ্যে যারা একটু চিন্তাভাবনা করে, পড়াশোনা করে, তাদের পক্ষ থেকে যে প্রশ্নটা আসে সেটা হচ্ছে, ঈদটা কুরবানির ঈদ, আসলেই প্রাণহত্যার উৎসব। আযহা বা উযহিয়্যাহ শব্দের অর্থই হচ্ছে কুরবানি। অর্থাৎ, পশু কুরবানি করা। তো এই ঈদটা হচ্ছে, পশু কুরবানির আনন্দ-উৎসব। এজন্যই ঈদ-উল-আযহা বলা হয়। ইসলাম কত নির্মম ধর্ম ইত্যাদি ইত্যাদি।ঘুরেফিরে প্রশ্ন এখানে এই চারটিই—প্রথম প্রশ্ন হচ্ছে : প্রাণী হত্যা করাটাই অমানবিক।দ্বিতীয় প্রশ্ন আরেকটু উন্নত ধাপের : প্রাণী হত্যা ঠিক আছে, কিন্তু প্রাণী হত্যা করে উৎসব কেন?আবার এটার যদি কেউ উত্তর দিয়ে ফেলে, তখন তৃতীয় প্রশ্ন আসে যে : প্রাণী হত্যা করে ''ধর্মীয়' উৎসব কেন?চার নম্বর প্রশ্ন : মুসলমানদের এই উৎসবটা মূলত পশু কুরবানিকে উদ্দেশ্য করেই করা। মানে এটা কেমন কথা হলো যে, প্রাণী হত্যাই একটা উৎসব!এই বইতে আমরা এর উত্তরগুলো খুঁজে দেখব। আসলে কেউ ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ থেকে মাংস খায় না, সেটা এক জিনিস। না-ই খেতে পারে, প্রাণহত্যা তার কাছে কষ্ট লাগে। কিন্তু কেউ যদি ভাবে, হালাল প্রাণী হত্যা করে খাওয়াটা অনৈতিক, তাহলে মূলত সে সর্বশক্তিমান মহান আল্লাহকে ‘অনৈতিক’ সাব্যস্ত করার ধৃষ্টতা প্রদর্শন করল, কেননা এই অনুমতি আল্লাহই আমাদেরকে দিয়েছেন। অর্থাৎ ব্যাপারটা আর নিছক ‘প্রাণীর প্রতি সহানুভূতি’র পর্যায়ে নেই, এই অতি-সহানুভূতি কুফরের পর্যায়ে চলে গেছে, ইরতিদাদের পর্যায়ে চলে গেছে। এমনকি আমরা এও দেখেছি যে, ইসলামবিদ্বেষী সন্তান তাবলিগওয়ালা বাবাকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছে কুরবানি করা অনৈতিক এবং তাকে নিরস্ত করতে সক্ষম হয়ে পোস্ট দিয়েছে। অর্থাৎ ব্যাপারটা ঈমানবিধ্বংসী পর্যায়ে চলে গেছে।
An Najahah Shop
Category List
All products

ইসলামের বিধানগুলোর মধ্যে কুরবানি অন্যতম একটি বিধান। সরাসরি কুরআন ও হাদিস দ্বারা প্রমাণিত এই বিধান। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন,
فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَانْحَرْ.
আপনি আপনার রবের উদ্দেশে সালাত আদায় করুন এবং কুরবানি করুন।
কুরবানি সম্পর্কে ইদানীং আমরা কিছু প্রশ্ন শুনতে পাচ্ছি। মূলত কয়েকটা প্রশ্নই আমরা সচরাচর দেখতে পাই। একটা গ্রুপ পাবেন, যাদের মানুষের প্রতি দরদ নেই, জন্তুজানোয়ারের প্রতি দরদ উথলে ওঠে। তাদের যুক্তি হলো, প্রাণী হত্যা করাটাই নৈতিকতাবিরুদ্ধ অমানবিক একটা ব্যাপার। সবার উচিত শাকসবজি খেয়ে থাকা। এর সপক্ষে বিভিন্ন কুযুক্তি তারা দিতে চায়।
আরেকটা গ্রুপ বলছে, প্রাণী হত্যা করা যাবে, খাওয়া যাবে, তারাও সারাবছর গোশত খায়। কিন্তু ধর্মের নামে কেন? ধর্ম বলবে মমতার কথা, দয়ার কথা। এ কেমন ধর্ম, যা প্রাণ হত্যার কথা বলে? তাদের কথা হলো, ঠিক আছে, প্রাণী হত্যা করা যাবে, কিন্তু প্রাণ হত্যা করে উৎসব কেন! কারও জীবন কেড়ে নিয়ে উৎসব, এটা কেমন নৈতিকতা! দেখুন, এরাই কিন্তু আবার লিবারেল পরিচয় দেয়। যখন ইসলামের কোনো বিধান তাকে শোনানো হয়, এসব মুসলিম নামধারীরা অন্যকে বলে, জাজমেন্টাল হচ্ছ কেন, তোমার নৈতিকতা আমার ওপর চাপিয়ে দিচ্ছ কেন। এরাই কিন্তু আবার কুরবানির সময় ঘনিয়ে এলে নিজের ভিত্তিহীন আলগা নৈতিকতা মুসলিমদের ওপর চাপিয়ে দিতে পরোয়া করে না। বোঝাই যাচ্ছে, এই দলের মূল অ্যালার্জি ইসলামে। প্রাণীর প্রতি দরদ-টরদ কিছু না।
নাস্তিক বা ইসলামবিদ্বেষীদের মধ্যে যারা একটু চিন্তাভাবনা করে, পড়াশোনা করে, তাদের পক্ষ থেকে যে প্রশ্নটা আসে সেটা হচ্ছে, ঈদটা কুরবানির ঈদ, আসলেই প্রাণহত্যার উৎসব। আযহা বা উযহিয়্যাহ শব্দের অর্থই হচ্ছে কুরবানি। অর্থাৎ, পশু কুরবানি করা। তো এই ঈদটা হচ্ছে, পশু কুরবানির আনন্দ-উৎসব। এজন্যই ঈদ-উল-আযহা বলা হয়। ইসলাম কত নির্মম ধর্ম ইত্যাদি ইত্যাদি।
ঘুরেফিরে প্রশ্ন এখানে এই চারটিই—
প্রথম প্রশ্ন হচ্ছে : প্রাণী হত্যা করাটাই অমানবিক।
দ্বিতীয় প্রশ্ন আরেকটু উন্নত ধাপের : প্রাণী হত্যা ঠিক আছে, কিন্তু প্রাণী হত্যা করে উৎসব কেন?
আবার এটার যদি কেউ উত্তর দিয়ে ফেলে, তখন তৃতীয় প্রশ্ন আসে যে : প্রাণী হত্যা করে ''ধর্মীয়' উৎসব কেন?
চার নম্বর প্রশ্ন : মুসলমানদের এই উৎসবটা মূলত পশু কুরবানিকে উদ্দেশ্য করেই করা। মানে এটা কেমন কথা হলো যে, প্রাণী হত্যাই একটা উৎসব!
এই বইতে আমরা এর উত্তরগুলো খুঁজে দেখব। আসলে কেউ ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ থেকে মাংস খায় না, সেটা এক জিনিস। না-ই খেতে পারে, প্রাণহত্যা তার কাছে কষ্ট লাগে। কিন্তু কেউ যদি ভাবে, হালাল প্রাণী হত্যা করে খাওয়াটা অনৈতিক, তাহলে মূলত সে সর্বশক্তিমান মহান আল্লাহকে ‘অনৈতিক’ সাব্যস্ত করার ধৃষ্টতা প্রদর্শন করল, কেননা এই অনুমতি আল্লাহই আমাদেরকে দিয়েছেন। অর্থাৎ ব্যাপারটা আর নিছক ‘প্রাণীর প্রতি সহানুভূতি’র পর্যায়ে নেই, এই অতি-সহানুভূতি কুফরের পর্যায়ে চলে গেছে, ইরতিদাদের পর্যায়ে চলে গেছে। এমনকি আমরা এও দেখেছি যে, ইসলামবিদ্বেষী সন্তান তাবলিগওয়ালা বাবাকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছে কুরবানি করা অনৈতিক এবং তাকে নিরস্ত করতে সক্ষম হয়ে পোস্ট দিয়েছে। অর্থাৎ ব্যাপারটা ঈমানবিধ্বংসী পর্যায়ে চলে গেছে।
কুরবানি নিয়ে যত প্রশ্ন
45 BDT90 BDTSave 45 BDT
1
ইসলামের বিধানগুলোর মধ্যে কুরবানি অন্যতম একটি বিধান। সরাসরি কুরআন ও হাদিস দ্বারা প্রমাণিত এই বিধান। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন,
فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَانْحَرْ.
আপনি আপনার রবের উদ্দেশে সালাত আদায় করুন এবং কুরবানি করুন।
কুরবানি সম্পর্কে ইদানীং আমরা কিছু প্রশ্ন শুনতে পাচ্ছি। মূলত কয়েকটা প্রশ্নই আমরা সচরাচর দেখতে পাই। একটা গ্রুপ পাবেন, যাদের মানুষের প্রতি দরদ নেই, জন্তুজানোয়ারের প্রতি দরদ উথলে ওঠে। তাদের যুক্তি হলো, প্রাণী হত্যা করাটাই নৈতিকতাবিরুদ্ধ অমানবিক একটা ব্যাপার। সবার উচিত শাকসবজি খেয়ে থাকা। এর সপক্ষে বিভিন্ন কুযুক্তি তারা দিতে চায়।
আরেকটা গ্রুপ বলছে, প্রাণী হত্যা করা যাবে, খাওয়া যাবে, তারাও সারাবছর গোশত খায়। কিন্তু ধর্মের নামে কেন? ধর্ম বলবে মমতার কথা, দয়ার কথা। এ কেমন ধর্ম, যা প্রাণ হত্যার কথা বলে? তাদের কথা হলো, ঠিক আছে, প্রাণী হত্যা করা যাবে, কিন্তু প্রাণ হত্যা করে উৎসব কেন! কারও জীবন কেড়ে নিয়ে উৎসব, এটা কেমন নৈতিকতা! দেখুন, এরাই কিন্তু আবার লিবারেল পরিচয় দেয়। যখন ইসলামের কোনো বিধান তাকে শোনানো হয়, এসব মুসলিম নামধারীরা অন্যকে বলে, জাজমেন্টাল হচ্ছ কেন, তোমার নৈতিকতা আমার ওপর চাপিয়ে দিচ্ছ কেন। এরাই কিন্তু আবার কুরবানির সময় ঘনিয়ে এলে নিজের ভিত্তিহীন আলগা নৈতিকতা মুসলিমদের ওপর চাপিয়ে দিতে পরোয়া করে না। বোঝাই যাচ্ছে, এই দলের মূল অ্যালার্জি ইসলামে। প্রাণীর প্রতি দরদ-টরদ কিছু না।
নাস্তিক বা ইসলামবিদ্বেষীদের মধ্যে যারা একটু চিন্তাভাবনা করে, পড়াশোনা করে, তাদের পক্ষ থেকে যে প্রশ্নটা আসে সেটা হচ্ছে, ঈদটা কুরবানির ঈদ, আসলেই প্রাণহত্যার উৎসব। আযহা বা উযহিয়্যাহ শব্দের অর্থই হচ্ছে কুরবানি। অর্থাৎ, পশু কুরবানি করা। তো এই ঈদটা হচ্ছে, পশু কুরবানির আনন্দ-উৎসব। এজন্যই ঈদ-উল-আযহা বলা হয়। ইসলাম কত নির্মম ধর্ম ইত্যাদি ইত্যাদি।
ঘুরেফিরে প্রশ্ন এখানে এই চারটিই—
প্রথম প্রশ্ন হচ্ছে : প্রাণী হত্যা করাটাই অমানবিক।
দ্বিতীয় প্রশ্ন আরেকটু উন্নত ধাপের : প্রাণী হত্যা ঠিক আছে, কিন্তু প্রাণী হত্যা করে উৎসব কেন?
আবার এটার যদি কেউ উত্তর দিয়ে ফেলে, তখন তৃতীয় প্রশ্ন আসে যে : প্রাণী হত্যা করে ''ধর্মীয়' উৎসব কেন?
চার নম্বর প্রশ্ন : মুসলমানদের এই উৎসবটা মূলত পশু কুরবানিকে উদ্দেশ্য করেই করা। মানে এটা কেমন কথা হলো যে, প্রাণী হত্যাই একটা উৎসব!
এই বইতে আমরা এর উত্তরগুলো খুঁজে দেখব। আসলে কেউ ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ থেকে মাংস খায় না, সেটা এক জিনিস। না-ই খেতে পারে, প্রাণহত্যা তার কাছে কষ্ট লাগে। কিন্তু কেউ যদি ভাবে, হালাল প্রাণী হত্যা করে খাওয়াটা অনৈতিক, তাহলে মূলত সে সর্বশক্তিমান মহান আল্লাহকে ‘অনৈতিক’ সাব্যস্ত করার ধৃষ্টতা প্রদর্শন করল, কেননা এই অনুমতি আল্লাহই আমাদেরকে দিয়েছেন। অর্থাৎ ব্যাপারটা আর নিছক ‘প্রাণীর প্রতি সহানুভূতি’র পর্যায়ে নেই, এই অতি-সহানুভূতি কুফরের পর্যায়ে চলে গেছে, ইরতিদাদের পর্যায়ে চলে গেছে। এমনকি আমরা এও দেখেছি যে, ইসলামবিদ্বেষী সন্তান তাবলিগওয়ালা বাবাকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছে কুরবানি করা অনৈতিক এবং তাকে নিরস্ত করতে সক্ষম হয়ে পোস্ট দিয়েছে। অর্থাৎ ব্যাপারটা ঈমানবিধ্বংসী পর্যায়ে চলে গেছে।