কুরআন জীবনের গাইডলাইন
বই : কুরআন জীবনের গাইডলাইনলেখক : ড. ইয়াদ কুনাইবীঅনুবাদ : আবদুল্লাহ ইবনে আব্দুল জলিল সম্পাদনা : আহমাদ ইউসূফ শরীফ , আশিক আরমান নিলয় পৃষ্ঠা : ১০৪ মূল্য : ১৬৭ টাকাপ্রকাশনী : সন্দীপন প্রকাশনআল্লাহর কালাম বুঝতে পারা একটি নিয়ামাত। অনেক বড় নিয়ামাত। কারণ, কালামুল্লাহ’র অনুধাবন হৃদয়ে আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা, অনুরাগ ও ভালোলাগা সৃষ্টি করে। কুরআন বোঝার মধ্য দিয়েই তৈরি হয় আত্মার পরিশুদ্ধি, হৃদয়ের পরিতৃপ্তি আর তাকদীরের ফায়সালার প্রতি সন্তুষ্টি। কুরআন বোঝার মধ্য দিয়েই অর্জিত হয় ইয়াক্বীন ও সুদৃঢ় বিশ্বাস, অর্জিত হয় আল্লাহর সাথে বান্দার সম্পর্ক ও দ্বীনি আত্মমর্যাদাবোধ, সৃষ্টি হয় আখিরাতের ফিকির এবং আল্লাহর কাছে পরিপূর্ণ প্রতিদান লাভের সজীব প্রত্যাশা। এ সবই অনেক বড় বড় একেকটি অর্জন।.বিশ্বাস ও ঈমানী আলোর বিচ্ছুরণের মূল উৎসও হচ্ছে কুরআন কারীমের উপলব্ধি। সুতরাং, কুরআন কারীম বুঝতে পারা এক বিশাল নিয়ামাত। .তবে বাস্তবতা হচ্ছে সকলে এই নিয়ামাতের উপযুক্ত হতে পারে না। বিশেষ করে কিছু অকর্মণ্য লোক আছে। এরা যদি কুরআন বুঝত-ও, তবুও দুনিয়ার সস্তা-সামগ্রীকেই কুরআনের ওপর প্রাধান্য দিত তারা। ওইসব লোক আল্লাহর কালাম বুঝার নিয়ামাত পেয়ে যাবে, তা যেন স্বয়ং আল্লাহ তাবারকা ওয়া তাআলার আত্মসম্মানের পরিপন্থী!.আসলেই কি কিছু ব্যক্তি কুরআন বোঝার অনুপযুক্ত? কুরআনে কি এই দাবির স্বপক্ষে প্রমাণ আছে?.উত্তর হলো, হ্যাঁ। বহু আয়াত রয়েছে। যেমন, সূরা ইসরার ৪৫ নং ও ৪৬ নং আয়াত দুটি, ‘যখন আপনি কুরআন তিলাওয়াত করেন, তখন আমি আপনার মাঝে আর পরকালে অবিশ্বাসীদের মাঝে একটি অদৃশ্য পর্দা দিয়ে দিই। আর তাদের অন্তরে তা অনুধাবনের ক্ষেত্রে আবরণ সৃষ্টি করে দিই আমি। তাদের কানে ছিপি মেরে দিই। আর যখন আপনি কুরআনে আপনার পালনকর্তার একত্ব আলোচনা করেন, তখন তারা অনীহাবশতঃ পৃষ্ঠপ্রদর্শন করে চলে যায়।’.অর্থাৎ, আল্লাহ তাআলার জন্য এটা আত্মমর্যাদাবোধের প্রশ্ন যে, তাঁর কালামের নূর এ-সকল উদাসীন অন্তরে প্রবেশ করবে! তাই তিনি তাদের ও কুরআনের মাঝে একটি অদৃশ্য বাঁধার দেয়াল তৈরি করে দিয়েছেন। এতেই বোঝা যায় যে, তারা আসলে এই কুরআন বোঝার উপযুক্ত নয়।.কিন্তু কেন তারা কুরআন বোঝার যোগ্যতা হারাল? .আল্লাহ এর উত্তর দিয়েছেন পরের আয়াতেই। আল্লাহ তাআলা বলেন,‘তারা কেন কান পেতে তা শোনে, তা আমি ভালো করেই জানি। এও জানি যে, গোপনে আলোচনাকালে যালিমরা বলে, “তোমরা তো এক জাদুগ্রস্ত ব্যক্তির অনুসরণ করছ!” দেখুন, তারা আপনার জন্যে কেমন উপমা দেয়। মূলত তারা পথভ্রষ্ট হয়েছে; অতএব, ওরা (হিদায়াতের) পথ পেতে পারে না।’ [সূরা ইসরা, ১৭ : ৪৭-৪৮].এদের অপরাধ ছিল, এরা রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালাম-কে জাদুগ্রস্ত বলে দাবি করত। অথচ মনে মনে ঠিকই জানতো যে, তাদের এ কথা সম্পূর্ণ মিথ্যাচার। এদের সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা আরও বলেন, ‘তারপরও যখন তারা এই বক্রতার পথ বেছে নিল, আল্লাহ তায়ালাও তাদের অন্তরকে বাঁকা করে দিলেন।’ [সূরা সফ, ৬১ : ৫].অর্থাৎ, তাঁর পবিত্র কালাম বোঝার নিয়ামাত থেকে বঞ্চিত করলেন। এটা তাদের নিজেদেরই কর্মফল। আল্লাহ তাআলা তাদের প্রতি মোটেও অন্যায় করেননি। কারণ, আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ মানুষের ওপর সামান্য যুলুমও করেন না। বরং মানুষই নিজেদের ওপর যুলুম করে থাকে।’ [সূরা ইউনুস, ১০ : ৪৪].আল্লামা ইবনুল কাইয়্যিম রাহিমাহুল্লাহ বলেন,'যে ব্যক্তি হিদায়াতের পথে আহ্বানকারীর ডাকে সাড়া দেবে না, তাকে ছেড়ে দাও; দেখবে, সে হাজার রকম ভ্রষ্টতার দিকে আহ্বানকারীদের ডাকে ঠিকই সাড়া দিচ্ছে।আর যে দূরে ছিল তাকে বলে দাও, তোমার এই অনীহাই তোমার জন্য শাস্তি হিসেবে যথেষ্ঠ; সেই রূপসীর বেদনার কথা আর কী বলব, যাকে নপুংসক অন্ধের কাছে বিয়ে দেয়া হয়েছে!' [মাদারিজুস সালিকীন , ৩/৩৩,৩৪। দীর্ঘ কবিতার একাংশ।].নপুংসক সেই হতভাগার কথা ভেবে দেখুন, যে এক সুন্দরী রমণীকে স্ত্রী হিসেবে উপহার পেয়েছে। অথচ সে নিজে অন্ধ ও পৌরুষহীন। ঠিক তেমনিভাবে যে ব্যক্তি কুরআন কারীমের কদর করে না, সে কুরআন বোঝার উপযুক্ত না।.সুতরাং, আপনি যদি এর যথাযথ মর্যাদা বুঝে থাকেন তবে একে সযত্নে আগলে রাখুন; যতক্ষণ না আপনার কাছে এর উপযুক্ত অন্য কেউ আসে। অর্থাৎ, নিজে কুরআন বুঝুন এবং এর আদর্শ উত্তরাধিকার ও আগামী প্রজন্ম তৈরিতে সচেষ্ট হোন। .সারকথা:১. কুরআন কারীম বোঝা আল্লাহর পক্ষ থেকে অনেক বড় এক নিয়ামাত, বিশাল সম্মান ও মর্যাদার বিষয়। ২. সাবধান! সত্যের আহ্বান থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন না। না হলে আল্লাহ আপনার এবং তাঁর কালামের মধ্যে অদৃশ্য পর্দা সৃষ্টি করে দেবেন। কারণ, অযোগ্য ব্যক্তি আল্লাহর কালাম বুঝুক, তা আল্লাহ তাআলার আত্মমর্যাদাবোধে বাধে।..
An Najahah Shop
Category List
All products

বই : কুরআন জীবনের গাইডলাইন
লেখক : ড. ইয়াদ কুনাইবী
অনুবাদ : আবদুল্লাহ ইবনে আব্দুল জলিল
সম্পাদনা : আহমাদ ইউসূফ শরীফ , আশিক আরমান নিলয়
পৃষ্ঠা : ১০৪
মূল্য : ১৬৭ টাকা
প্রকাশনী : সন্দীপন প্রকাশন
আল্লাহর কালাম বুঝতে পারা একটি নিয়ামাত। অনেক বড় নিয়ামাত। কারণ, কালামুল্লাহ’র অনুধাবন হৃদয়ে আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা, অনুরাগ ও ভালোলাগা সৃষ্টি করে। কুরআন বোঝার মধ্য দিয়েই তৈরি হয় আত্মার পরিশুদ্ধি, হৃদয়ের পরিতৃপ্তি আর তাকদীরের ফায়সালার প্রতি সন্তুষ্টি। কুরআন বোঝার মধ্য দিয়েই অর্জিত হয় ইয়াক্বীন ও সুদৃঢ় বিশ্বাস, অর্জিত হয় আল্লাহর সাথে বান্দার সম্পর্ক ও দ্বীনি আত্মমর্যাদাবোধ, সৃষ্টি হয় আখিরাতের ফিকির এবং আল্লাহর কাছে পরিপূর্ণ প্রতিদান লাভের সজীব প্রত্যাশা। এ সবই অনেক বড় বড় একেকটি অর্জন।
.
বিশ্বাস ও ঈমানী আলোর বিচ্ছুরণের মূল উৎসও হচ্ছে কুরআন কারীমের উপলব্ধি। সুতরাং, কুরআন কারীম বুঝতে পারা এক বিশাল নিয়ামাত।
.
তবে বাস্তবতা হচ্ছে সকলে এই নিয়ামাতের উপযুক্ত হতে পারে না। বিশেষ করে কিছু অকর্মণ্য লোক আছে। এরা যদি কুরআন বুঝত-ও, তবুও দুনিয়ার সস্তা-সামগ্রীকেই কুরআনের ওপর প্রাধান্য দিত তারা। ওইসব লোক আল্লাহর কালাম বুঝার নিয়ামাত পেয়ে যাবে, তা যেন স্বয়ং আল্লাহ তাবারকা ওয়া তাআলার আত্মসম্মানের পরিপন্থী!
.
আসলেই কি কিছু ব্যক্তি কুরআন বোঝার অনুপযুক্ত? কুরআনে কি এই দাবির স্বপক্ষে প্রমাণ আছে?
.
উত্তর হলো, হ্যাঁ। বহু আয়াত রয়েছে। যেমন, সূরা ইসরার ৪৫ নং ও ৪৬ নং আয়াত দুটি,
‘যখন আপনি কুরআন তিলাওয়াত করেন, তখন আমি আপনার মাঝে আর পরকালে অবিশ্বাসীদের মাঝে একটি অদৃশ্য পর্দা দিয়ে দিই। আর তাদের অন্তরে তা অনুধাবনের ক্ষেত্রে আবরণ সৃষ্টি করে দিই আমি। তাদের কানে ছিপি মেরে দিই। আর যখন আপনি কুরআনে আপনার পালনকর্তার একত্ব আলোচনা করেন, তখন তারা অনীহাবশতঃ পৃষ্ঠপ্রদর্শন করে চলে যায়।’
.
অর্থাৎ, আল্লাহ তাআলার জন্য এটা আত্মমর্যাদাবোধের প্রশ্ন যে, তাঁর কালামের নূর এ-সকল উদাসীন অন্তরে প্রবেশ করবে! তাই তিনি তাদের ও কুরআনের মাঝে একটি অদৃশ্য বাঁধার দেয়াল তৈরি করে দিয়েছেন। এতেই বোঝা যায় যে, তারা আসলে এই কুরআন বোঝার উপযুক্ত নয়।
.
কিন্তু কেন তারা কুরআন বোঝার যোগ্যতা হারাল?
.
আল্লাহ এর উত্তর দিয়েছেন পরের আয়াতেই। আল্লাহ তাআলা বলেন,
‘তারা কেন কান পেতে তা শোনে, তা আমি ভালো করেই জানি। এও জানি যে, গোপনে আলোচনাকালে যালিমরা বলে, “তোমরা তো এক জাদুগ্রস্ত ব্যক্তির অনুসরণ করছ!” দেখুন, তারা আপনার জন্যে কেমন উপমা দেয়। মূলত তারা পথভ্রষ্ট হয়েছে; অতএব, ওরা (হিদায়াতের) পথ পেতে পারে না।’ [সূরা ইসরা, ১৭ : ৪৭-৪৮]
.
এদের অপরাধ ছিল, এরা রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালাম-কে জাদুগ্রস্ত বলে দাবি করত। অথচ মনে মনে ঠিকই জানতো যে, তাদের এ কথা সম্পূর্ণ মিথ্যাচার। এদের সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা আরও বলেন,
‘তারপরও যখন তারা এই বক্রতার পথ বেছে নিল, আল্লাহ তায়ালাও তাদের অন্তরকে বাঁকা করে দিলেন।’ [সূরা সফ, ৬১ : ৫]
.
অর্থাৎ, তাঁর পবিত্র কালাম বোঝার নিয়ামাত থেকে বঞ্চিত করলেন। এটা তাদের নিজেদেরই কর্মফল। আল্লাহ তাআলা তাদের প্রতি মোটেও অন্যায় করেননি। কারণ, আল্লাহ তাআলা বলেন,
‘নিশ্চয়ই আল্লাহ মানুষের ওপর সামান্য যুলুমও করেন না। বরং মানুষই নিজেদের ওপর যুলুম করে থাকে।’ [সূরা ইউনুস, ১০ : ৪৪]
.
আল্লামা ইবনুল কাইয়্যিম রাহিমাহুল্লাহ বলেন,
'যে ব্যক্তি হিদায়াতের পথে আহ্বানকারীর ডাকে সাড়া দেবে না, তাকে ছেড়ে দাও;
দেখবে, সে হাজার রকম ভ্রষ্টতার দিকে আহ্বানকারীদের ডাকে ঠিকই সাড়া দিচ্ছে।
আর যে দূরে ছিল তাকে বলে দাও,
তোমার এই অনীহাই তোমার জন্য শাস্তি হিসেবে যথেষ্ঠ;
সেই রূপসীর বেদনার কথা আর কী বলব,
যাকে নপুংসক অন্ধের কাছে বিয়ে দেয়া হয়েছে!' [মাদারিজুস সালিকীন , ৩/৩৩,৩৪। দীর্ঘ কবিতার একাংশ।]
.
নপুংসক সেই হতভাগার কথা ভেবে দেখুন, যে এক সুন্দরী রমণীকে স্ত্রী হিসেবে উপহার পেয়েছে। অথচ সে নিজে অন্ধ ও পৌরুষহীন। ঠিক তেমনিভাবে যে ব্যক্তি কুরআন কারীমের কদর করে না, সে কুরআন বোঝার উপযুক্ত না।
.
সুতরাং, আপনি যদি এর যথাযথ মর্যাদা বুঝে থাকেন তবে একে সযত্নে আগলে রাখুন; যতক্ষণ না আপনার কাছে এর উপযুক্ত অন্য কেউ আসে। অর্থাৎ, নিজে কুরআন বুঝুন এবং এর আদর্শ উত্তরাধিকার ও আগামী প্রজন্ম তৈরিতে সচেষ্ট হোন।
.
সারকথা:
১. কুরআন কারীম বোঝা আল্লাহর পক্ষ থেকে অনেক বড় এক নিয়ামাত, বিশাল সম্মান ও মর্যাদার বিষয়।
২. সাবধান! সত্যের আহ্বান থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন না। না হলে আল্লাহ আপনার এবং তাঁর কালামের মধ্যে অদৃশ্য পর্দা সৃষ্টি করে দেবেন। কারণ, অযোগ্য ব্যক্তি আল্লাহর কালাম বুঝুক, তা আল্লাহ তাআলার আত্মমর্যাদাবোধে বাধে।
.
.
লেখক : ড. ইয়াদ কুনাইবী
অনুবাদ : আবদুল্লাহ ইবনে আব্দুল জলিল
সম্পাদনা : আহমাদ ইউসূফ শরীফ , আশিক আরমান নিলয়
পৃষ্ঠা : ১০৪
মূল্য : ১৬৭ টাকা
প্রকাশনী : সন্দীপন প্রকাশন
আল্লাহর কালাম বুঝতে পারা একটি নিয়ামাত। অনেক বড় নিয়ামাত। কারণ, কালামুল্লাহ’র অনুধাবন হৃদয়ে আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা, অনুরাগ ও ভালোলাগা সৃষ্টি করে। কুরআন বোঝার মধ্য দিয়েই তৈরি হয় আত্মার পরিশুদ্ধি, হৃদয়ের পরিতৃপ্তি আর তাকদীরের ফায়সালার প্রতি সন্তুষ্টি। কুরআন বোঝার মধ্য দিয়েই অর্জিত হয় ইয়াক্বীন ও সুদৃঢ় বিশ্বাস, অর্জিত হয় আল্লাহর সাথে বান্দার সম্পর্ক ও দ্বীনি আত্মমর্যাদাবোধ, সৃষ্টি হয় আখিরাতের ফিকির এবং আল্লাহর কাছে পরিপূর্ণ প্রতিদান লাভের সজীব প্রত্যাশা। এ সবই অনেক বড় বড় একেকটি অর্জন।
.
বিশ্বাস ও ঈমানী আলোর বিচ্ছুরণের মূল উৎসও হচ্ছে কুরআন কারীমের উপলব্ধি। সুতরাং, কুরআন কারীম বুঝতে পারা এক বিশাল নিয়ামাত।
.
তবে বাস্তবতা হচ্ছে সকলে এই নিয়ামাতের উপযুক্ত হতে পারে না। বিশেষ করে কিছু অকর্মণ্য লোক আছে। এরা যদি কুরআন বুঝত-ও, তবুও দুনিয়ার সস্তা-সামগ্রীকেই কুরআনের ওপর প্রাধান্য দিত তারা। ওইসব লোক আল্লাহর কালাম বুঝার নিয়ামাত পেয়ে যাবে, তা যেন স্বয়ং আল্লাহ তাবারকা ওয়া তাআলার আত্মসম্মানের পরিপন্থী!
.
আসলেই কি কিছু ব্যক্তি কুরআন বোঝার অনুপযুক্ত? কুরআনে কি এই দাবির স্বপক্ষে প্রমাণ আছে?
.
উত্তর হলো, হ্যাঁ। বহু আয়াত রয়েছে। যেমন, সূরা ইসরার ৪৫ নং ও ৪৬ নং আয়াত দুটি,
‘যখন আপনি কুরআন তিলাওয়াত করেন, তখন আমি আপনার মাঝে আর পরকালে অবিশ্বাসীদের মাঝে একটি অদৃশ্য পর্দা দিয়ে দিই। আর তাদের অন্তরে তা অনুধাবনের ক্ষেত্রে আবরণ সৃষ্টি করে দিই আমি। তাদের কানে ছিপি মেরে দিই। আর যখন আপনি কুরআনে আপনার পালনকর্তার একত্ব আলোচনা করেন, তখন তারা অনীহাবশতঃ পৃষ্ঠপ্রদর্শন করে চলে যায়।’
.
অর্থাৎ, আল্লাহ তাআলার জন্য এটা আত্মমর্যাদাবোধের প্রশ্ন যে, তাঁর কালামের নূর এ-সকল উদাসীন অন্তরে প্রবেশ করবে! তাই তিনি তাদের ও কুরআনের মাঝে একটি অদৃশ্য বাঁধার দেয়াল তৈরি করে দিয়েছেন। এতেই বোঝা যায় যে, তারা আসলে এই কুরআন বোঝার উপযুক্ত নয়।
.
কিন্তু কেন তারা কুরআন বোঝার যোগ্যতা হারাল?
.
আল্লাহ এর উত্তর দিয়েছেন পরের আয়াতেই। আল্লাহ তাআলা বলেন,
‘তারা কেন কান পেতে তা শোনে, তা আমি ভালো করেই জানি। এও জানি যে, গোপনে আলোচনাকালে যালিমরা বলে, “তোমরা তো এক জাদুগ্রস্ত ব্যক্তির অনুসরণ করছ!” দেখুন, তারা আপনার জন্যে কেমন উপমা দেয়। মূলত তারা পথভ্রষ্ট হয়েছে; অতএব, ওরা (হিদায়াতের) পথ পেতে পারে না।’ [সূরা ইসরা, ১৭ : ৪৭-৪৮]
.
এদের অপরাধ ছিল, এরা রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালাম-কে জাদুগ্রস্ত বলে দাবি করত। অথচ মনে মনে ঠিকই জানতো যে, তাদের এ কথা সম্পূর্ণ মিথ্যাচার। এদের সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা আরও বলেন,
‘তারপরও যখন তারা এই বক্রতার পথ বেছে নিল, আল্লাহ তায়ালাও তাদের অন্তরকে বাঁকা করে দিলেন।’ [সূরা সফ, ৬১ : ৫]
.
অর্থাৎ, তাঁর পবিত্র কালাম বোঝার নিয়ামাত থেকে বঞ্চিত করলেন। এটা তাদের নিজেদেরই কর্মফল। আল্লাহ তাআলা তাদের প্রতি মোটেও অন্যায় করেননি। কারণ, আল্লাহ তাআলা বলেন,
‘নিশ্চয়ই আল্লাহ মানুষের ওপর সামান্য যুলুমও করেন না। বরং মানুষই নিজেদের ওপর যুলুম করে থাকে।’ [সূরা ইউনুস, ১০ : ৪৪]
.
আল্লামা ইবনুল কাইয়্যিম রাহিমাহুল্লাহ বলেন,
'যে ব্যক্তি হিদায়াতের পথে আহ্বানকারীর ডাকে সাড়া দেবে না, তাকে ছেড়ে দাও;
দেখবে, সে হাজার রকম ভ্রষ্টতার দিকে আহ্বানকারীদের ডাকে ঠিকই সাড়া দিচ্ছে।
আর যে দূরে ছিল তাকে বলে দাও,
তোমার এই অনীহাই তোমার জন্য শাস্তি হিসেবে যথেষ্ঠ;
সেই রূপসীর বেদনার কথা আর কী বলব,
যাকে নপুংসক অন্ধের কাছে বিয়ে দেয়া হয়েছে!' [মাদারিজুস সালিকীন , ৩/৩৩,৩৪। দীর্ঘ কবিতার একাংশ।]
.
নপুংসক সেই হতভাগার কথা ভেবে দেখুন, যে এক সুন্দরী রমণীকে স্ত্রী হিসেবে উপহার পেয়েছে। অথচ সে নিজে অন্ধ ও পৌরুষহীন। ঠিক তেমনিভাবে যে ব্যক্তি কুরআন কারীমের কদর করে না, সে কুরআন বোঝার উপযুক্ত না।
.
সুতরাং, আপনি যদি এর যথাযথ মর্যাদা বুঝে থাকেন তবে একে সযত্নে আগলে রাখুন; যতক্ষণ না আপনার কাছে এর উপযুক্ত অন্য কেউ আসে। অর্থাৎ, নিজে কুরআন বুঝুন এবং এর আদর্শ উত্তরাধিকার ও আগামী প্রজন্ম তৈরিতে সচেষ্ট হোন।
.
সারকথা:
১. কুরআন কারীম বোঝা আল্লাহর পক্ষ থেকে অনেক বড় এক নিয়ামাত, বিশাল সম্মান ও মর্যাদার বিষয়।
২. সাবধান! সত্যের আহ্বান থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন না। না হলে আল্লাহ আপনার এবং তাঁর কালামের মধ্যে অদৃশ্য পর্দা সৃষ্টি করে দেবেন। কারণ, অযোগ্য ব্যক্তি আল্লাহর কালাম বুঝুক, তা আল্লাহ তাআলার আত্মমর্যাদাবোধে বাধে।
.
.
কুরআন জীবনের গাইডলাইন
125 BDT167 BDTSave 42 BDT
1
বই : কুরআন জীবনের গাইডলাইন
লেখক : ড. ইয়াদ কুনাইবী
অনুবাদ : আবদুল্লাহ ইবনে আব্দুল জলিল
সম্পাদনা : আহমাদ ইউসূফ শরীফ , আশিক আরমান নিলয়
পৃষ্ঠা : ১০৪
মূল্য : ১৬৭ টাকা
প্রকাশনী : সন্দীপন প্রকাশন
আল্লাহর কালাম বুঝতে পারা একটি নিয়ামাত। অনেক বড় নিয়ামাত। কারণ, কালামুল্লাহ’র অনুধাবন হৃদয়ে আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা, অনুরাগ ও ভালোলাগা সৃষ্টি করে। কুরআন বোঝার মধ্য দিয়েই তৈরি হয় আত্মার পরিশুদ্ধি, হৃদয়ের পরিতৃপ্তি আর তাকদীরের ফায়সালার প্রতি সন্তুষ্টি। কুরআন বোঝার মধ্য দিয়েই অর্জিত হয় ইয়াক্বীন ও সুদৃঢ় বিশ্বাস, অর্জিত হয় আল্লাহর সাথে বান্দার সম্পর্ক ও দ্বীনি আত্মমর্যাদাবোধ, সৃষ্টি হয় আখিরাতের ফিকির এবং আল্লাহর কাছে পরিপূর্ণ প্রতিদান লাভের সজীব প্রত্যাশা। এ সবই অনেক বড় বড় একেকটি অর্জন।
.
বিশ্বাস ও ঈমানী আলোর বিচ্ছুরণের মূল উৎসও হচ্ছে কুরআন কারীমের উপলব্ধি। সুতরাং, কুরআন কারীম বুঝতে পারা এক বিশাল নিয়ামাত।
.
তবে বাস্তবতা হচ্ছে সকলে এই নিয়ামাতের উপযুক্ত হতে পারে না। বিশেষ করে কিছু অকর্মণ্য লোক আছে। এরা যদি কুরআন বুঝত-ও, তবুও দুনিয়ার সস্তা-সামগ্রীকেই কুরআনের ওপর প্রাধান্য দিত তারা। ওইসব লোক আল্লাহর কালাম বুঝার নিয়ামাত পেয়ে যাবে, তা যেন স্বয়ং আল্লাহ তাবারকা ওয়া তাআলার আত্মসম্মানের পরিপন্থী!
.
আসলেই কি কিছু ব্যক্তি কুরআন বোঝার অনুপযুক্ত? কুরআনে কি এই দাবির স্বপক্ষে প্রমাণ আছে?
.
উত্তর হলো, হ্যাঁ। বহু আয়াত রয়েছে। যেমন, সূরা ইসরার ৪৫ নং ও ৪৬ নং আয়াত দুটি,
‘যখন আপনি কুরআন তিলাওয়াত করেন, তখন আমি আপনার মাঝে আর পরকালে অবিশ্বাসীদের মাঝে একটি অদৃশ্য পর্দা দিয়ে দিই। আর তাদের অন্তরে তা অনুধাবনের ক্ষেত্রে আবরণ সৃষ্টি করে দিই আমি। তাদের কানে ছিপি মেরে দিই। আর যখন আপনি কুরআনে আপনার পালনকর্তার একত্ব আলোচনা করেন, তখন তারা অনীহাবশতঃ পৃষ্ঠপ্রদর্শন করে চলে যায়।’
.
অর্থাৎ, আল্লাহ তাআলার জন্য এটা আত্মমর্যাদাবোধের প্রশ্ন যে, তাঁর কালামের নূর এ-সকল উদাসীন অন্তরে প্রবেশ করবে! তাই তিনি তাদের ও কুরআনের মাঝে একটি অদৃশ্য বাঁধার দেয়াল তৈরি করে দিয়েছেন। এতেই বোঝা যায় যে, তারা আসলে এই কুরআন বোঝার উপযুক্ত নয়।
.
কিন্তু কেন তারা কুরআন বোঝার যোগ্যতা হারাল?
.
আল্লাহ এর উত্তর দিয়েছেন পরের আয়াতেই। আল্লাহ তাআলা বলেন,
‘তারা কেন কান পেতে তা শোনে, তা আমি ভালো করেই জানি। এও জানি যে, গোপনে আলোচনাকালে যালিমরা বলে, “তোমরা তো এক জাদুগ্রস্ত ব্যক্তির অনুসরণ করছ!” দেখুন, তারা আপনার জন্যে কেমন উপমা দেয়। মূলত তারা পথভ্রষ্ট হয়েছে; অতএব, ওরা (হিদায়াতের) পথ পেতে পারে না।’ [সূরা ইসরা, ১৭ : ৪৭-৪৮]
.
এদের অপরাধ ছিল, এরা রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালাম-কে জাদুগ্রস্ত বলে দাবি করত। অথচ মনে মনে ঠিকই জানতো যে, তাদের এ কথা সম্পূর্ণ মিথ্যাচার। এদের সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা আরও বলেন,
‘তারপরও যখন তারা এই বক্রতার পথ বেছে নিল, আল্লাহ তায়ালাও তাদের অন্তরকে বাঁকা করে দিলেন।’ [সূরা সফ, ৬১ : ৫]
.
অর্থাৎ, তাঁর পবিত্র কালাম বোঝার নিয়ামাত থেকে বঞ্চিত করলেন। এটা তাদের নিজেদেরই কর্মফল। আল্লাহ তাআলা তাদের প্রতি মোটেও অন্যায় করেননি। কারণ, আল্লাহ তাআলা বলেন,
‘নিশ্চয়ই আল্লাহ মানুষের ওপর সামান্য যুলুমও করেন না। বরং মানুষই নিজেদের ওপর যুলুম করে থাকে।’ [সূরা ইউনুস, ১০ : ৪৪]
.
আল্লামা ইবনুল কাইয়্যিম রাহিমাহুল্লাহ বলেন,
'যে ব্যক্তি হিদায়াতের পথে আহ্বানকারীর ডাকে সাড়া দেবে না, তাকে ছেড়ে দাও;
দেখবে, সে হাজার রকম ভ্রষ্টতার দিকে আহ্বানকারীদের ডাকে ঠিকই সাড়া দিচ্ছে।
আর যে দূরে ছিল তাকে বলে দাও,
তোমার এই অনীহাই তোমার জন্য শাস্তি হিসেবে যথেষ্ঠ;
সেই রূপসীর বেদনার কথা আর কী বলব,
যাকে নপুংসক অন্ধের কাছে বিয়ে দেয়া হয়েছে!' [মাদারিজুস সালিকীন , ৩/৩৩,৩৪। দীর্ঘ কবিতার একাংশ।]
.
নপুংসক সেই হতভাগার কথা ভেবে দেখুন, যে এক সুন্দরী রমণীকে স্ত্রী হিসেবে উপহার পেয়েছে। অথচ সে নিজে অন্ধ ও পৌরুষহীন। ঠিক তেমনিভাবে যে ব্যক্তি কুরআন কারীমের কদর করে না, সে কুরআন বোঝার উপযুক্ত না।
.
সুতরাং, আপনি যদি এর যথাযথ মর্যাদা বুঝে থাকেন তবে একে সযত্নে আগলে রাখুন; যতক্ষণ না আপনার কাছে এর উপযুক্ত অন্য কেউ আসে। অর্থাৎ, নিজে কুরআন বুঝুন এবং এর আদর্শ উত্তরাধিকার ও আগামী প্রজন্ম তৈরিতে সচেষ্ট হোন।
.
সারকথা:
১. কুরআন কারীম বোঝা আল্লাহর পক্ষ থেকে অনেক বড় এক নিয়ামাত, বিশাল সম্মান ও মর্যাদার বিষয়।
২. সাবধান! সত্যের আহ্বান থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন না। না হলে আল্লাহ আপনার এবং তাঁর কালামের মধ্যে অদৃশ্য পর্দা সৃষ্টি করে দেবেন। কারণ, অযোগ্য ব্যক্তি আল্লাহর কালাম বুঝুক, তা আল্লাহ তাআলার আত্মমর্যাদাবোধে বাধে।
.
.
লেখক : ড. ইয়াদ কুনাইবী
অনুবাদ : আবদুল্লাহ ইবনে আব্দুল জলিল
সম্পাদনা : আহমাদ ইউসূফ শরীফ , আশিক আরমান নিলয়
পৃষ্ঠা : ১০৪
মূল্য : ১৬৭ টাকা
প্রকাশনী : সন্দীপন প্রকাশন
আল্লাহর কালাম বুঝতে পারা একটি নিয়ামাত। অনেক বড় নিয়ামাত। কারণ, কালামুল্লাহ’র অনুধাবন হৃদয়ে আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা, অনুরাগ ও ভালোলাগা সৃষ্টি করে। কুরআন বোঝার মধ্য দিয়েই তৈরি হয় আত্মার পরিশুদ্ধি, হৃদয়ের পরিতৃপ্তি আর তাকদীরের ফায়সালার প্রতি সন্তুষ্টি। কুরআন বোঝার মধ্য দিয়েই অর্জিত হয় ইয়াক্বীন ও সুদৃঢ় বিশ্বাস, অর্জিত হয় আল্লাহর সাথে বান্দার সম্পর্ক ও দ্বীনি আত্মমর্যাদাবোধ, সৃষ্টি হয় আখিরাতের ফিকির এবং আল্লাহর কাছে পরিপূর্ণ প্রতিদান লাভের সজীব প্রত্যাশা। এ সবই অনেক বড় বড় একেকটি অর্জন।
.
বিশ্বাস ও ঈমানী আলোর বিচ্ছুরণের মূল উৎসও হচ্ছে কুরআন কারীমের উপলব্ধি। সুতরাং, কুরআন কারীম বুঝতে পারা এক বিশাল নিয়ামাত।
.
তবে বাস্তবতা হচ্ছে সকলে এই নিয়ামাতের উপযুক্ত হতে পারে না। বিশেষ করে কিছু অকর্মণ্য লোক আছে। এরা যদি কুরআন বুঝত-ও, তবুও দুনিয়ার সস্তা-সামগ্রীকেই কুরআনের ওপর প্রাধান্য দিত তারা। ওইসব লোক আল্লাহর কালাম বুঝার নিয়ামাত পেয়ে যাবে, তা যেন স্বয়ং আল্লাহ তাবারকা ওয়া তাআলার আত্মসম্মানের পরিপন্থী!
.
আসলেই কি কিছু ব্যক্তি কুরআন বোঝার অনুপযুক্ত? কুরআনে কি এই দাবির স্বপক্ষে প্রমাণ আছে?
.
উত্তর হলো, হ্যাঁ। বহু আয়াত রয়েছে। যেমন, সূরা ইসরার ৪৫ নং ও ৪৬ নং আয়াত দুটি,
‘যখন আপনি কুরআন তিলাওয়াত করেন, তখন আমি আপনার মাঝে আর পরকালে অবিশ্বাসীদের মাঝে একটি অদৃশ্য পর্দা দিয়ে দিই। আর তাদের অন্তরে তা অনুধাবনের ক্ষেত্রে আবরণ সৃষ্টি করে দিই আমি। তাদের কানে ছিপি মেরে দিই। আর যখন আপনি কুরআনে আপনার পালনকর্তার একত্ব আলোচনা করেন, তখন তারা অনীহাবশতঃ পৃষ্ঠপ্রদর্শন করে চলে যায়।’
.
অর্থাৎ, আল্লাহ তাআলার জন্য এটা আত্মমর্যাদাবোধের প্রশ্ন যে, তাঁর কালামের নূর এ-সকল উদাসীন অন্তরে প্রবেশ করবে! তাই তিনি তাদের ও কুরআনের মাঝে একটি অদৃশ্য বাঁধার দেয়াল তৈরি করে দিয়েছেন। এতেই বোঝা যায় যে, তারা আসলে এই কুরআন বোঝার উপযুক্ত নয়।
.
কিন্তু কেন তারা কুরআন বোঝার যোগ্যতা হারাল?
.
আল্লাহ এর উত্তর দিয়েছেন পরের আয়াতেই। আল্লাহ তাআলা বলেন,
‘তারা কেন কান পেতে তা শোনে, তা আমি ভালো করেই জানি। এও জানি যে, গোপনে আলোচনাকালে যালিমরা বলে, “তোমরা তো এক জাদুগ্রস্ত ব্যক্তির অনুসরণ করছ!” দেখুন, তারা আপনার জন্যে কেমন উপমা দেয়। মূলত তারা পথভ্রষ্ট হয়েছে; অতএব, ওরা (হিদায়াতের) পথ পেতে পারে না।’ [সূরা ইসরা, ১৭ : ৪৭-৪৮]
.
এদের অপরাধ ছিল, এরা রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালাম-কে জাদুগ্রস্ত বলে দাবি করত। অথচ মনে মনে ঠিকই জানতো যে, তাদের এ কথা সম্পূর্ণ মিথ্যাচার। এদের সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা আরও বলেন,
‘তারপরও যখন তারা এই বক্রতার পথ বেছে নিল, আল্লাহ তায়ালাও তাদের অন্তরকে বাঁকা করে দিলেন।’ [সূরা সফ, ৬১ : ৫]
.
অর্থাৎ, তাঁর পবিত্র কালাম বোঝার নিয়ামাত থেকে বঞ্চিত করলেন। এটা তাদের নিজেদেরই কর্মফল। আল্লাহ তাআলা তাদের প্রতি মোটেও অন্যায় করেননি। কারণ, আল্লাহ তাআলা বলেন,
‘নিশ্চয়ই আল্লাহ মানুষের ওপর সামান্য যুলুমও করেন না। বরং মানুষই নিজেদের ওপর যুলুম করে থাকে।’ [সূরা ইউনুস, ১০ : ৪৪]
.
আল্লামা ইবনুল কাইয়্যিম রাহিমাহুল্লাহ বলেন,
'যে ব্যক্তি হিদায়াতের পথে আহ্বানকারীর ডাকে সাড়া দেবে না, তাকে ছেড়ে দাও;
দেখবে, সে হাজার রকম ভ্রষ্টতার দিকে আহ্বানকারীদের ডাকে ঠিকই সাড়া দিচ্ছে।
আর যে দূরে ছিল তাকে বলে দাও,
তোমার এই অনীহাই তোমার জন্য শাস্তি হিসেবে যথেষ্ঠ;
সেই রূপসীর বেদনার কথা আর কী বলব,
যাকে নপুংসক অন্ধের কাছে বিয়ে দেয়া হয়েছে!' [মাদারিজুস সালিকীন , ৩/৩৩,৩৪। দীর্ঘ কবিতার একাংশ।]
.
নপুংসক সেই হতভাগার কথা ভেবে দেখুন, যে এক সুন্দরী রমণীকে স্ত্রী হিসেবে উপহার পেয়েছে। অথচ সে নিজে অন্ধ ও পৌরুষহীন। ঠিক তেমনিভাবে যে ব্যক্তি কুরআন কারীমের কদর করে না, সে কুরআন বোঝার উপযুক্ত না।
.
সুতরাং, আপনি যদি এর যথাযথ মর্যাদা বুঝে থাকেন তবে একে সযত্নে আগলে রাখুন; যতক্ষণ না আপনার কাছে এর উপযুক্ত অন্য কেউ আসে। অর্থাৎ, নিজে কুরআন বুঝুন এবং এর আদর্শ উত্তরাধিকার ও আগামী প্রজন্ম তৈরিতে সচেষ্ট হোন।
.
সারকথা:
১. কুরআন কারীম বোঝা আল্লাহর পক্ষ থেকে অনেক বড় এক নিয়ামাত, বিশাল সম্মান ও মর্যাদার বিষয়।
২. সাবধান! সত্যের আহ্বান থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন না। না হলে আল্লাহ আপনার এবং তাঁর কালামের মধ্যে অদৃশ্য পর্দা সৃষ্টি করে দেবেন। কারণ, অযোগ্য ব্যক্তি আল্লাহর কালাম বুঝুক, তা আল্লাহ তাআলার আত্মমর্যাদাবোধে বাধে।
.
.