জ্ঞান ও পবিত্রার ভাস্কর এক মহীয়সী আয়েশা
❝মা আয়িশার জ্ঞান যদি এক পাল্লায় রাখা হতো, আর অন্য সকল স্ত্রীর জ্ঞান আরেক পাল্লায় রাখা হতো, তাহলে মা আয়িশার পাল্লাই ভারী হতো।❞—ইবনে শিহাব জুহরি (রহ.).উম্মুল মুমিনিন আয়িশা বিনতে আবু বকর (রা.) ছিলেন জ্ঞান ও প্রজ্ঞায় এক অনন্যসাধারণ নারী। তিনি নারী সাহাবিদের মধ্যে সর্বাধিক জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন। তার বিচক্ষণতা ও সাহসিকতা ছিলো অনন্য। অনেক বিখ্যাত সাহাবিরাও মা আয়িশা (রা.) এর ছাত্র ছিলেন। ফিকহ, চিকিৎসা, কবিতা সহ জ্ঞানের বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার ছিলো অবাধ বিচরণ। .অসংখ্য মানুষ তাঁর থেকে হাদিস ও দ্বীনের পাঠ গ্রহণ করতেন। বিভিন্ন সময় সাহাবিদের অনিচ্ছাকৃত যেসব ভুল তাঁর গোচরে আসত, তিনি তা হিকমার সাথে শুধরে দিতেন। যাতে উম্মতে মুহাম্মদি দ্বীনের সঠিক জ্ঞান ধারণ করতে পারে। এই তালিকায় উমর (রা.) এর মতো জ্যেষ্ঠ সাহাবি ও ছিলেন।.নবীজি (সঃ) এর সম্মানিত স্ত্রীদের নিয়ে ড. ইয়াসির ক্বাদি 'মাদার অফ বিলিভার্স' নামের একটি ভিডিও লেকচার সিরিজ উম্মাহর সামনে উপস্থিত করেছেন। যেখানে তিনি আয়িশা রা. কে নিয়ে বিস্তারিত বক্তব্য পেশ করেছেন। গার্ডিয়ান পাবলিকেশন পুরো লেকচার সিরিজটি 'বিশ্বাসীদের মা' শিরোনামে বই আকারে প্রকাশ করেছে। সেখান থেকে মা আয়িশার অংশটুকু 'আয়িশা (রা.)' নামে প্রকাশ করা হয়।.উম্মুল মুমিনিন আয়িশা (রা.) ছিলেন সেই নারী যার সম্পর্কে মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে ১০ টি আয়াত নাজিল করেছেন। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে তাঁকে বলেছেন— 'মুহসানাত' ও 'গাফিলাতুল মুমিনাত'। যার অর্থ সচ্চরিত্র ও নিষ্পাপ মুমিন নারী। তিনি এমন একজন নারী ছিলেন, যিনি মন্দ কিছু শোনা, বলা এমনকি চিন্তা ও করতে পারতেন না। মহান আল্লাহ তায়ালা যাকে এতো সম্মান ও মর্যাদা দিয়েছেন, তাঁর সম্পর্কে অপবাদ দেওয়া আর কুরআনের আয়াতকে প্রত্যাখ্যান করা একই কথা। .ইমাম মালেক (রা.) বলেন—❝যে ব্যক্তি আয়েশা (রা.) কে নিয়ে বাজে কথা বলে তার শাস্তি হলো মৃত্যুদন্ড।❞ .কেননা আল্লাহ তায়ালা বলেছেন—❝আল্লাহ তোমাদের সতর্ক করে দিচ্ছেন আর কখনোই এ ধরনের কিছু না বলার জন্য, যদি তোমরা মুমিন হয়ে থাকো।❞.সুতরাং, কোনো মুসলমান যদি আয়িশা (রা.) এর ব্যাপারে অভিযোগ ও অপবাদ দেয়, তবে আল্লাহ তাকে ইসলাম থেকে খারিজ করে দেবেন। পুরুষদের মধ্যে অনেকে পূর্ণতা অর্জন করেছেন, তবে নারীদের মধ্যে পূর্ণতা অর্জন করেছেন কেবল মারইয়াতে ইমরান ও ফেরাউনের স্ত্রী আসিয়া। আর সব খাবারের মধ্যে সারিদ যেমন, তেমনি সব নারীদের মধ্যে আয়িশা শ্রেষ্ঠ মর্যাদার অধিকারী।.খাদিজা রা. এরপর নবী করিম (সাঃ) যাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসতেন, তিনি বিবি আয়িশা (রা.)। নবীজি (সঃ) তাকে ভালোবেসে 'হুমায়রা' ডাকতেন। নবী করিম সাঃ এর স্ত্রীদের মধ্যে তিনি ছিলেন সবচেয়ে বেশি সম্মান ও মর্যাদার অধিকারী। তিনি নবীজির থেকে ২২০০ এর অধিক হাদিস বর্ণনা করেছেন। যা হাদিস বর্ণনাকারী হিসেবে সকল পুরুষ ও মহিলাদের মধ্যে তাকে দিয়েছে দ্বিতীয় স্থান। অসাধারণ ছিলো তার বিশ্লেষণী শক্তি।.ইসলামের জন্য আয়িশা (রাঃ) এঁর অবদান ছিল অতুলনীয়। আল্লাহ তাআলা তাঁকে অসাধারণ মেধা দিয়েছিলেন। রাসূল (সঃ) এঁর ইন্তেকালের পর প্রায় পঞ্চাশ বছর পর্যন্ত তিনি ছিলেন নবুওয়তের ধারক ও বাহক। ধর্মীয় ব্যাপারে কোন ভুল হলে, তিনি ছিলেন সম্মানিত সংশোধক। তিনি ছিলেন জ্ঞান দানকারী এবং ধৈর্য্যশীল। .মুসলিম উম্মাহ অনেক কিছুর জন্যই বিবি আয়িশার কাছে ঋণী। যেমন: সর্বপ্রথম তায়াম্মুমের বিষয়টি সামনে এসেছিলো মা আয়িশার জন্যই। আর এটিকে আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে একটি বড় নেয়ামত হিসেবেই বিবেচনা করা হয়। আর এই নিয়ামতটা সম্ভব হয়েছিল তার জন্যই। এরকম আরো কিছু ছোট বড় ঘটনার বর্ণনা এসেছে বইটিতে। যেমন :-আয়িশা (রা.) এর পরিচয়, নবিজির সঙ্গে বিয়ে, সম্মান ও মর্যাদা, নিয়ামতপ্রাপ্ত নারী, তাকওয়া ও ঈমান, জ্ঞান ও বুদ্ধিমত্তা, সাহাবিদের ভুল সংশোধন, আরবের ডাক্তার, উষ্ট্রের যুদ্ধ ইত্যাদি। .সবশেষে আলোচনা করা হয়েছে আয়িশা (রা.) এর বিয়ের বয়স ও তার প্রতি বিদ্বেষ পোষণের পরিণাম নিয়ে। আয়িশা (রা.) এর বিয়ের বয়স নিয়ে আধুনিক প্রগ্রতিশীলদের মধ্যে জল্পনা কল্পনার শেষ নেই। এই নিয়ে তারা নবিজি (সঃ).এর নামে আঙ্গুল তুলতে কুন্ঠাবোধ করেনি। অথচ তারা জানেনা, যুগে যুগে বিয়ের বয়স নির্ধারিত হয়েছিলো সেই সময়ের সমাজ ও সংস্কৃতির দ্বারা। অতীতের কোনো ঘটনা নিয়ে মতামত দিলে হলে সেই সময়ের প্রেক্ষাপট বিবেচনা করা দরকার। এই সত্যকে যে বা যারা অবহেলা করবে, তাদের পক্ষে এসব অপবাদ দেওয়া স্বাভাবিক। .বইটির মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা ১১১। অনুবাদের সহজ সরল অনুবাদ ভালো লেগেছে। এক জায়গায় আ-কার (া) জনিত বানান ভুল পেয়েছি। ভালোভাবে লক্ষ্য করলে হয়তো আরো পাওয়া যেতো। এই সামান্য ভুল ছাড়া, বইটিকে স্বল্প পৃষ্ঠার ভালো মানের একটা বই মনে হয়েছে। বিশেষ করে আয়িশা (রা.) বিয়ের বয়স জনিত যুক্তি খন্ডন চমৎকার লেগেছে। যারা আয়িশা (রা.) কে নিয়ে জানতে আগ্রহী তারা পড়তে পারেন। আশাকরি সব বিতর্কের অবসান হবে।
An Najahah Shop
Category List
All products

❝মা আয়িশার জ্ঞান যদি এক পাল্লায় রাখা হতো, আর অন্য সকল স্ত্রীর জ্ঞান আরেক পাল্লায় রাখা হতো, তাহলে মা আয়িশার পাল্লাই ভারী হতো।❞
—ইবনে শিহাব জুহরি (রহ.)
.
উম্মুল মুমিনিন আয়িশা বিনতে আবু বকর (রা.) ছিলেন জ্ঞান ও প্রজ্ঞায় এক অনন্যসাধারণ নারী। তিনি নারী সাহাবিদের মধ্যে সর্বাধিক জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন। তার বিচক্ষণতা ও সাহসিকতা ছিলো অনন্য। অনেক বিখ্যাত সাহাবিরাও মা আয়িশা (রা.) এর ছাত্র ছিলেন। ফিকহ, চিকিৎসা, কবিতা সহ জ্ঞানের বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার ছিলো অবাধ বিচরণ।
.
অসংখ্য মানুষ তাঁর থেকে হাদিস ও দ্বীনের পাঠ গ্রহণ করতেন। বিভিন্ন সময় সাহাবিদের অনিচ্ছাকৃত যেসব ভুল তাঁর গোচরে আসত, তিনি তা হিকমার সাথে শুধরে দিতেন। যাতে উম্মতে মুহাম্মদি দ্বীনের সঠিক জ্ঞান ধারণ করতে পারে। এই তালিকায় উমর (রা.) এর মতো জ্যেষ্ঠ সাহাবি ও ছিলেন।
.
নবীজি (সঃ) এর সম্মানিত স্ত্রীদের নিয়ে ড. ইয়াসির ক্বাদি 'মাদার অফ বিলিভার্স' নামের একটি ভিডিও লেকচার সিরিজ উম্মাহর সামনে উপস্থিত করেছেন। যেখানে তিনি আয়িশা রা. কে নিয়ে বিস্তারিত বক্তব্য পেশ করেছেন। গার্ডিয়ান পাবলিকেশন পুরো লেকচার সিরিজটি 'বিশ্বাসীদের মা' শিরোনামে বই আকারে প্রকাশ করেছে। সেখান থেকে মা আয়িশার অংশটুকু 'আয়িশা (রা.)' নামে প্রকাশ করা হয়।
.
উম্মুল মুমিনিন আয়িশা (রা.) ছিলেন সেই নারী যার সম্পর্কে মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে ১০ টি আয়াত নাজিল করেছেন। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে তাঁকে বলেছেন— 'মুহসানাত' ও 'গাফিলাতুল মুমিনাত'। যার অর্থ সচ্চরিত্র ও নিষ্পাপ মুমিন নারী। তিনি এমন একজন নারী ছিলেন, যিনি মন্দ কিছু শোনা, বলা এমনকি চিন্তা ও করতে পারতেন না।
মহান আল্লাহ তায়ালা যাকে এতো সম্মান ও মর্যাদা দিয়েছেন, তাঁর সম্পর্কে অপবাদ দেওয়া আর কুরআনের আয়াতকে প্রত্যাখ্যান করা একই কথা।
.
ইমাম মালেক (রা.) বলেন—
❝যে ব্যক্তি আয়েশা (রা.) কে নিয়ে বাজে কথা বলে তার শাস্তি হলো
মৃত্যুদন্ড।❞
.
কেননা আল্লাহ তায়ালা বলেছেন—
❝আল্লাহ তোমাদের সতর্ক করে দিচ্ছেন আর কখনোই এ ধরনের কিছু না বলার জন্য, যদি তোমরা মুমিন হয়ে থাকো।❞
.
সুতরাং, কোনো মুসলমান যদি আয়িশা (রা.) এর ব্যাপারে অভিযোগ ও অপবাদ দেয়, তবে আল্লাহ তাকে ইসলাম থেকে খারিজ করে দেবেন। পুরুষদের মধ্যে অনেকে পূর্ণতা অর্জন করেছেন, তবে নারীদের মধ্যে পূর্ণতা অর্জন করেছেন কেবল মারইয়াতে ইমরান ও ফেরাউনের স্ত্রী আসিয়া। আর সব খাবারের মধ্যে সারিদ যেমন, তেমনি সব নারীদের মধ্যে আয়িশা শ্রেষ্ঠ মর্যাদার অধিকারী।
.
খাদিজা রা. এরপর নবী করিম (সাঃ) যাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসতেন, তিনি বিবি আয়িশা (রা.)। নবীজি (সঃ) তাকে ভালোবেসে 'হুমায়রা' ডাকতেন। নবী করিম সাঃ এর স্ত্রীদের মধ্যে তিনি ছিলেন সবচেয়ে বেশি সম্মান ও মর্যাদার অধিকারী। তিনি নবীজির থেকে ২২০০ এর অধিক হাদিস বর্ণনা করেছেন। যা হাদিস বর্ণনাকারী হিসেবে সকল পুরুষ ও মহিলাদের মধ্যে তাকে দিয়েছে দ্বিতীয় স্থান। অসাধারণ ছিলো তার বিশ্লেষণী শক্তি।
.
ইসলামের জন্য আয়িশা (রাঃ) এঁর অবদান ছিল অতুলনীয়। আল্লাহ তাআলা তাঁকে অসাধারণ মেধা দিয়েছিলেন। রাসূল (সঃ) এঁর ইন্তেকালের পর প্রায় পঞ্চাশ বছর পর্যন্ত তিনি ছিলেন নবুওয়তের ধারক ও বাহক। ধর্মীয় ব্যাপারে কোন ভুল হলে, তিনি ছিলেন সম্মানিত সংশোধক। তিনি ছিলেন জ্ঞান দানকারী এবং ধৈর্য্যশীল।
.
মুসলিম উম্মাহ অনেক কিছুর জন্যই বিবি আয়িশার কাছে ঋণী। যেমন: সর্বপ্রথম তায়াম্মুমের বিষয়টি সামনে এসেছিলো মা আয়িশার জন্যই। আর এটিকে আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে একটি বড় নেয়ামত হিসেবেই বিবেচনা করা হয়। আর এই নিয়ামতটা সম্ভব হয়েছিল তার জন্যই। এরকম আরো কিছু ছোট বড় ঘটনার বর্ণনা এসেছে বইটিতে। যেমন :-
আয়িশা (রা.) এর পরিচয়, নবিজির সঙ্গে বিয়ে, সম্মান ও মর্যাদা, নিয়ামতপ্রাপ্ত নারী, তাকওয়া ও ঈমান, জ্ঞান ও বুদ্ধিমত্তা, সাহাবিদের ভুল সংশোধন, আরবের ডাক্তার, উষ্ট্রের যুদ্ধ ইত্যাদি।
.
সবশেষে আলোচনা করা হয়েছে আয়িশা (রা.) এর বিয়ের বয়স ও তার প্রতি বিদ্বেষ পোষণের পরিণাম নিয়ে। আয়িশা (রা.) এর বিয়ের বয়স নিয়ে আধুনিক প্রগ্রতিশীলদের মধ্যে জল্পনা কল্পনার শেষ নেই। এই নিয়ে তারা নবিজি (সঃ)
.
এর নামে আঙ্গুল তুলতে কুন্ঠাবোধ করেনি। অথচ তারা জানেনা, যুগে যুগে বিয়ের বয়স নির্ধারিত হয়েছিলো সেই সময়ের সমাজ ও সংস্কৃতির দ্বারা। অতীতের কোনো ঘটনা নিয়ে মতামত দিলে হলে সেই সময়ের প্রেক্ষাপট বিবেচনা করা দরকার। এই সত্যকে যে বা যারা অবহেলা করবে, তাদের পক্ষে এসব অপবাদ দেওয়া স্বাভাবিক।
.
বইটির মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা ১১১। অনুবাদের সহজ সরল অনুবাদ ভালো লেগেছে। এক জায়গায় আ-কার (া) জনিত বানান ভুল পেয়েছি। ভালোভাবে লক্ষ্য করলে হয়তো আরো পাওয়া যেতো। এই সামান্য ভুল ছাড়া, বইটিকে স্বল্প পৃষ্ঠার ভালো মানের একটা বই মনে হয়েছে। বিশেষ করে আয়িশা (রা.) বিয়ের বয়স জনিত যুক্তি খন্ডন চমৎকার লেগেছে। যারা আয়িশা (রা.) কে নিয়ে জানতে আগ্রহী তারা পড়তে পারেন। আশাকরি সব বিতর্কের অবসান হবে।
—ইবনে শিহাব জুহরি (রহ.)
.
উম্মুল মুমিনিন আয়িশা বিনতে আবু বকর (রা.) ছিলেন জ্ঞান ও প্রজ্ঞায় এক অনন্যসাধারণ নারী। তিনি নারী সাহাবিদের মধ্যে সর্বাধিক জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন। তার বিচক্ষণতা ও সাহসিকতা ছিলো অনন্য। অনেক বিখ্যাত সাহাবিরাও মা আয়িশা (রা.) এর ছাত্র ছিলেন। ফিকহ, চিকিৎসা, কবিতা সহ জ্ঞানের বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার ছিলো অবাধ বিচরণ।
.
অসংখ্য মানুষ তাঁর থেকে হাদিস ও দ্বীনের পাঠ গ্রহণ করতেন। বিভিন্ন সময় সাহাবিদের অনিচ্ছাকৃত যেসব ভুল তাঁর গোচরে আসত, তিনি তা হিকমার সাথে শুধরে দিতেন। যাতে উম্মতে মুহাম্মদি দ্বীনের সঠিক জ্ঞান ধারণ করতে পারে। এই তালিকায় উমর (রা.) এর মতো জ্যেষ্ঠ সাহাবি ও ছিলেন।
.
নবীজি (সঃ) এর সম্মানিত স্ত্রীদের নিয়ে ড. ইয়াসির ক্বাদি 'মাদার অফ বিলিভার্স' নামের একটি ভিডিও লেকচার সিরিজ উম্মাহর সামনে উপস্থিত করেছেন। যেখানে তিনি আয়িশা রা. কে নিয়ে বিস্তারিত বক্তব্য পেশ করেছেন। গার্ডিয়ান পাবলিকেশন পুরো লেকচার সিরিজটি 'বিশ্বাসীদের মা' শিরোনামে বই আকারে প্রকাশ করেছে। সেখান থেকে মা আয়িশার অংশটুকু 'আয়িশা (রা.)' নামে প্রকাশ করা হয়।
.
উম্মুল মুমিনিন আয়িশা (রা.) ছিলেন সেই নারী যার সম্পর্কে মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে ১০ টি আয়াত নাজিল করেছেন। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে তাঁকে বলেছেন— 'মুহসানাত' ও 'গাফিলাতুল মুমিনাত'। যার অর্থ সচ্চরিত্র ও নিষ্পাপ মুমিন নারী। তিনি এমন একজন নারী ছিলেন, যিনি মন্দ কিছু শোনা, বলা এমনকি চিন্তা ও করতে পারতেন না।
মহান আল্লাহ তায়ালা যাকে এতো সম্মান ও মর্যাদা দিয়েছেন, তাঁর সম্পর্কে অপবাদ দেওয়া আর কুরআনের আয়াতকে প্রত্যাখ্যান করা একই কথা।
.
ইমাম মালেক (রা.) বলেন—
❝যে ব্যক্তি আয়েশা (রা.) কে নিয়ে বাজে কথা বলে তার শাস্তি হলো
মৃত্যুদন্ড।❞
.
কেননা আল্লাহ তায়ালা বলেছেন—
❝আল্লাহ তোমাদের সতর্ক করে দিচ্ছেন আর কখনোই এ ধরনের কিছু না বলার জন্য, যদি তোমরা মুমিন হয়ে থাকো।❞
.
সুতরাং, কোনো মুসলমান যদি আয়িশা (রা.) এর ব্যাপারে অভিযোগ ও অপবাদ দেয়, তবে আল্লাহ তাকে ইসলাম থেকে খারিজ করে দেবেন। পুরুষদের মধ্যে অনেকে পূর্ণতা অর্জন করেছেন, তবে নারীদের মধ্যে পূর্ণতা অর্জন করেছেন কেবল মারইয়াতে ইমরান ও ফেরাউনের স্ত্রী আসিয়া। আর সব খাবারের মধ্যে সারিদ যেমন, তেমনি সব নারীদের মধ্যে আয়িশা শ্রেষ্ঠ মর্যাদার অধিকারী।
.
খাদিজা রা. এরপর নবী করিম (সাঃ) যাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসতেন, তিনি বিবি আয়িশা (রা.)। নবীজি (সঃ) তাকে ভালোবেসে 'হুমায়রা' ডাকতেন। নবী করিম সাঃ এর স্ত্রীদের মধ্যে তিনি ছিলেন সবচেয়ে বেশি সম্মান ও মর্যাদার অধিকারী। তিনি নবীজির থেকে ২২০০ এর অধিক হাদিস বর্ণনা করেছেন। যা হাদিস বর্ণনাকারী হিসেবে সকল পুরুষ ও মহিলাদের মধ্যে তাকে দিয়েছে দ্বিতীয় স্থান। অসাধারণ ছিলো তার বিশ্লেষণী শক্তি।
.
ইসলামের জন্য আয়িশা (রাঃ) এঁর অবদান ছিল অতুলনীয়। আল্লাহ তাআলা তাঁকে অসাধারণ মেধা দিয়েছিলেন। রাসূল (সঃ) এঁর ইন্তেকালের পর প্রায় পঞ্চাশ বছর পর্যন্ত তিনি ছিলেন নবুওয়তের ধারক ও বাহক। ধর্মীয় ব্যাপারে কোন ভুল হলে, তিনি ছিলেন সম্মানিত সংশোধক। তিনি ছিলেন জ্ঞান দানকারী এবং ধৈর্য্যশীল।
.
মুসলিম উম্মাহ অনেক কিছুর জন্যই বিবি আয়িশার কাছে ঋণী। যেমন: সর্বপ্রথম তায়াম্মুমের বিষয়টি সামনে এসেছিলো মা আয়িশার জন্যই। আর এটিকে আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে একটি বড় নেয়ামত হিসেবেই বিবেচনা করা হয়। আর এই নিয়ামতটা সম্ভব হয়েছিল তার জন্যই। এরকম আরো কিছু ছোট বড় ঘটনার বর্ণনা এসেছে বইটিতে। যেমন :-
আয়িশা (রা.) এর পরিচয়, নবিজির সঙ্গে বিয়ে, সম্মান ও মর্যাদা, নিয়ামতপ্রাপ্ত নারী, তাকওয়া ও ঈমান, জ্ঞান ও বুদ্ধিমত্তা, সাহাবিদের ভুল সংশোধন, আরবের ডাক্তার, উষ্ট্রের যুদ্ধ ইত্যাদি।
.
সবশেষে আলোচনা করা হয়েছে আয়িশা (রা.) এর বিয়ের বয়স ও তার প্রতি বিদ্বেষ পোষণের পরিণাম নিয়ে। আয়িশা (রা.) এর বিয়ের বয়স নিয়ে আধুনিক প্রগ্রতিশীলদের মধ্যে জল্পনা কল্পনার শেষ নেই। এই নিয়ে তারা নবিজি (সঃ)
.
এর নামে আঙ্গুল তুলতে কুন্ঠাবোধ করেনি। অথচ তারা জানেনা, যুগে যুগে বিয়ের বয়স নির্ধারিত হয়েছিলো সেই সময়ের সমাজ ও সংস্কৃতির দ্বারা। অতীতের কোনো ঘটনা নিয়ে মতামত দিলে হলে সেই সময়ের প্রেক্ষাপট বিবেচনা করা দরকার। এই সত্যকে যে বা যারা অবহেলা করবে, তাদের পক্ষে এসব অপবাদ দেওয়া স্বাভাবিক।
.
বইটির মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা ১১১। অনুবাদের সহজ সরল অনুবাদ ভালো লেগেছে। এক জায়গায় আ-কার (া) জনিত বানান ভুল পেয়েছি। ভালোভাবে লক্ষ্য করলে হয়তো আরো পাওয়া যেতো। এই সামান্য ভুল ছাড়া, বইটিকে স্বল্প পৃষ্ঠার ভালো মানের একটা বই মনে হয়েছে। বিশেষ করে আয়িশা (রা.) বিয়ের বয়স জনিত যুক্তি খন্ডন চমৎকার লেগেছে। যারা আয়িশা (রা.) কে নিয়ে জানতে আগ্রহী তারা পড়তে পারেন। আশাকরি সব বিতর্কের অবসান হবে।
জ্ঞান ও পবিত্রার ভাস্কর এক মহীয়সী আয়েশা
75 BDT
1
❝মা আয়িশার জ্ঞান যদি এক পাল্লায় রাখা হতো, আর অন্য সকল স্ত্রীর জ্ঞান আরেক পাল্লায় রাখা হতো, তাহলে মা আয়িশার পাল্লাই ভারী হতো।❞
—ইবনে শিহাব জুহরি (রহ.)
.
উম্মুল মুমিনিন আয়িশা বিনতে আবু বকর (রা.) ছিলেন জ্ঞান ও প্রজ্ঞায় এক অনন্যসাধারণ নারী। তিনি নারী সাহাবিদের মধ্যে সর্বাধিক জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন। তার বিচক্ষণতা ও সাহসিকতা ছিলো অনন্য। অনেক বিখ্যাত সাহাবিরাও মা আয়িশা (রা.) এর ছাত্র ছিলেন। ফিকহ, চিকিৎসা, কবিতা সহ জ্ঞানের বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার ছিলো অবাধ বিচরণ।
.
অসংখ্য মানুষ তাঁর থেকে হাদিস ও দ্বীনের পাঠ গ্রহণ করতেন। বিভিন্ন সময় সাহাবিদের অনিচ্ছাকৃত যেসব ভুল তাঁর গোচরে আসত, তিনি তা হিকমার সাথে শুধরে দিতেন। যাতে উম্মতে মুহাম্মদি দ্বীনের সঠিক জ্ঞান ধারণ করতে পারে। এই তালিকায় উমর (রা.) এর মতো জ্যেষ্ঠ সাহাবি ও ছিলেন।
.
নবীজি (সঃ) এর সম্মানিত স্ত্রীদের নিয়ে ড. ইয়াসির ক্বাদি 'মাদার অফ বিলিভার্স' নামের একটি ভিডিও লেকচার সিরিজ উম্মাহর সামনে উপস্থিত করেছেন। যেখানে তিনি আয়িশা রা. কে নিয়ে বিস্তারিত বক্তব্য পেশ করেছেন। গার্ডিয়ান পাবলিকেশন পুরো লেকচার সিরিজটি 'বিশ্বাসীদের মা' শিরোনামে বই আকারে প্রকাশ করেছে। সেখান থেকে মা আয়িশার অংশটুকু 'আয়িশা (রা.)' নামে প্রকাশ করা হয়।
.
উম্মুল মুমিনিন আয়িশা (রা.) ছিলেন সেই নারী যার সম্পর্কে মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে ১০ টি আয়াত নাজিল করেছেন। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে তাঁকে বলেছেন— 'মুহসানাত' ও 'গাফিলাতুল মুমিনাত'। যার অর্থ সচ্চরিত্র ও নিষ্পাপ মুমিন নারী। তিনি এমন একজন নারী ছিলেন, যিনি মন্দ কিছু শোনা, বলা এমনকি চিন্তা ও করতে পারতেন না।
মহান আল্লাহ তায়ালা যাকে এতো সম্মান ও মর্যাদা দিয়েছেন, তাঁর সম্পর্কে অপবাদ দেওয়া আর কুরআনের আয়াতকে প্রত্যাখ্যান করা একই কথা।
.
ইমাম মালেক (রা.) বলেন—
❝যে ব্যক্তি আয়েশা (রা.) কে নিয়ে বাজে কথা বলে তার শাস্তি হলো
মৃত্যুদন্ড।❞
.
কেননা আল্লাহ তায়ালা বলেছেন—
❝আল্লাহ তোমাদের সতর্ক করে দিচ্ছেন আর কখনোই এ ধরনের কিছু না বলার জন্য, যদি তোমরা মুমিন হয়ে থাকো।❞
.
সুতরাং, কোনো মুসলমান যদি আয়িশা (রা.) এর ব্যাপারে অভিযোগ ও অপবাদ দেয়, তবে আল্লাহ তাকে ইসলাম থেকে খারিজ করে দেবেন। পুরুষদের মধ্যে অনেকে পূর্ণতা অর্জন করেছেন, তবে নারীদের মধ্যে পূর্ণতা অর্জন করেছেন কেবল মারইয়াতে ইমরান ও ফেরাউনের স্ত্রী আসিয়া। আর সব খাবারের মধ্যে সারিদ যেমন, তেমনি সব নারীদের মধ্যে আয়িশা শ্রেষ্ঠ মর্যাদার অধিকারী।
.
খাদিজা রা. এরপর নবী করিম (সাঃ) যাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসতেন, তিনি বিবি আয়িশা (রা.)। নবীজি (সঃ) তাকে ভালোবেসে 'হুমায়রা' ডাকতেন। নবী করিম সাঃ এর স্ত্রীদের মধ্যে তিনি ছিলেন সবচেয়ে বেশি সম্মান ও মর্যাদার অধিকারী। তিনি নবীজির থেকে ২২০০ এর অধিক হাদিস বর্ণনা করেছেন। যা হাদিস বর্ণনাকারী হিসেবে সকল পুরুষ ও মহিলাদের মধ্যে তাকে দিয়েছে দ্বিতীয় স্থান। অসাধারণ ছিলো তার বিশ্লেষণী শক্তি।
.
ইসলামের জন্য আয়িশা (রাঃ) এঁর অবদান ছিল অতুলনীয়। আল্লাহ তাআলা তাঁকে অসাধারণ মেধা দিয়েছিলেন। রাসূল (সঃ) এঁর ইন্তেকালের পর প্রায় পঞ্চাশ বছর পর্যন্ত তিনি ছিলেন নবুওয়তের ধারক ও বাহক। ধর্মীয় ব্যাপারে কোন ভুল হলে, তিনি ছিলেন সম্মানিত সংশোধক। তিনি ছিলেন জ্ঞান দানকারী এবং ধৈর্য্যশীল।
.
মুসলিম উম্মাহ অনেক কিছুর জন্যই বিবি আয়িশার কাছে ঋণী। যেমন: সর্বপ্রথম তায়াম্মুমের বিষয়টি সামনে এসেছিলো মা আয়িশার জন্যই। আর এটিকে আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে একটি বড় নেয়ামত হিসেবেই বিবেচনা করা হয়। আর এই নিয়ামতটা সম্ভব হয়েছিল তার জন্যই। এরকম আরো কিছু ছোট বড় ঘটনার বর্ণনা এসেছে বইটিতে। যেমন :-
আয়িশা (রা.) এর পরিচয়, নবিজির সঙ্গে বিয়ে, সম্মান ও মর্যাদা, নিয়ামতপ্রাপ্ত নারী, তাকওয়া ও ঈমান, জ্ঞান ও বুদ্ধিমত্তা, সাহাবিদের ভুল সংশোধন, আরবের ডাক্তার, উষ্ট্রের যুদ্ধ ইত্যাদি।
.
সবশেষে আলোচনা করা হয়েছে আয়িশা (রা.) এর বিয়ের বয়স ও তার প্রতি বিদ্বেষ পোষণের পরিণাম নিয়ে। আয়িশা (রা.) এর বিয়ের বয়স নিয়ে আধুনিক প্রগ্রতিশীলদের মধ্যে জল্পনা কল্পনার শেষ নেই। এই নিয়ে তারা নবিজি (সঃ)
.
এর নামে আঙ্গুল তুলতে কুন্ঠাবোধ করেনি। অথচ তারা জানেনা, যুগে যুগে বিয়ের বয়স নির্ধারিত হয়েছিলো সেই সময়ের সমাজ ও সংস্কৃতির দ্বারা। অতীতের কোনো ঘটনা নিয়ে মতামত দিলে হলে সেই সময়ের প্রেক্ষাপট বিবেচনা করা দরকার। এই সত্যকে যে বা যারা অবহেলা করবে, তাদের পক্ষে এসব অপবাদ দেওয়া স্বাভাবিক।
.
বইটির মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা ১১১। অনুবাদের সহজ সরল অনুবাদ ভালো লেগেছে। এক জায়গায় আ-কার (া) জনিত বানান ভুল পেয়েছি। ভালোভাবে লক্ষ্য করলে হয়তো আরো পাওয়া যেতো। এই সামান্য ভুল ছাড়া, বইটিকে স্বল্প পৃষ্ঠার ভালো মানের একটা বই মনে হয়েছে। বিশেষ করে আয়িশা (রা.) বিয়ের বয়স জনিত যুক্তি খন্ডন চমৎকার লেগেছে। যারা আয়িশা (রা.) কে নিয়ে জানতে আগ্রহী তারা পড়তে পারেন। আশাকরি সব বিতর্কের অবসান হবে।
—ইবনে শিহাব জুহরি (রহ.)
.
উম্মুল মুমিনিন আয়িশা বিনতে আবু বকর (রা.) ছিলেন জ্ঞান ও প্রজ্ঞায় এক অনন্যসাধারণ নারী। তিনি নারী সাহাবিদের মধ্যে সর্বাধিক জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন। তার বিচক্ষণতা ও সাহসিকতা ছিলো অনন্য। অনেক বিখ্যাত সাহাবিরাও মা আয়িশা (রা.) এর ছাত্র ছিলেন। ফিকহ, চিকিৎসা, কবিতা সহ জ্ঞানের বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার ছিলো অবাধ বিচরণ।
.
অসংখ্য মানুষ তাঁর থেকে হাদিস ও দ্বীনের পাঠ গ্রহণ করতেন। বিভিন্ন সময় সাহাবিদের অনিচ্ছাকৃত যেসব ভুল তাঁর গোচরে আসত, তিনি তা হিকমার সাথে শুধরে দিতেন। যাতে উম্মতে মুহাম্মদি দ্বীনের সঠিক জ্ঞান ধারণ করতে পারে। এই তালিকায় উমর (রা.) এর মতো জ্যেষ্ঠ সাহাবি ও ছিলেন।
.
নবীজি (সঃ) এর সম্মানিত স্ত্রীদের নিয়ে ড. ইয়াসির ক্বাদি 'মাদার অফ বিলিভার্স' নামের একটি ভিডিও লেকচার সিরিজ উম্মাহর সামনে উপস্থিত করেছেন। যেখানে তিনি আয়িশা রা. কে নিয়ে বিস্তারিত বক্তব্য পেশ করেছেন। গার্ডিয়ান পাবলিকেশন পুরো লেকচার সিরিজটি 'বিশ্বাসীদের মা' শিরোনামে বই আকারে প্রকাশ করেছে। সেখান থেকে মা আয়িশার অংশটুকু 'আয়িশা (রা.)' নামে প্রকাশ করা হয়।
.
উম্মুল মুমিনিন আয়িশা (রা.) ছিলেন সেই নারী যার সম্পর্কে মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে ১০ টি আয়াত নাজিল করেছেন। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে তাঁকে বলেছেন— 'মুহসানাত' ও 'গাফিলাতুল মুমিনাত'। যার অর্থ সচ্চরিত্র ও নিষ্পাপ মুমিন নারী। তিনি এমন একজন নারী ছিলেন, যিনি মন্দ কিছু শোনা, বলা এমনকি চিন্তা ও করতে পারতেন না।
মহান আল্লাহ তায়ালা যাকে এতো সম্মান ও মর্যাদা দিয়েছেন, তাঁর সম্পর্কে অপবাদ দেওয়া আর কুরআনের আয়াতকে প্রত্যাখ্যান করা একই কথা।
.
ইমাম মালেক (রা.) বলেন—
❝যে ব্যক্তি আয়েশা (রা.) কে নিয়ে বাজে কথা বলে তার শাস্তি হলো
মৃত্যুদন্ড।❞
.
কেননা আল্লাহ তায়ালা বলেছেন—
❝আল্লাহ তোমাদের সতর্ক করে দিচ্ছেন আর কখনোই এ ধরনের কিছু না বলার জন্য, যদি তোমরা মুমিন হয়ে থাকো।❞
.
সুতরাং, কোনো মুসলমান যদি আয়িশা (রা.) এর ব্যাপারে অভিযোগ ও অপবাদ দেয়, তবে আল্লাহ তাকে ইসলাম থেকে খারিজ করে দেবেন। পুরুষদের মধ্যে অনেকে পূর্ণতা অর্জন করেছেন, তবে নারীদের মধ্যে পূর্ণতা অর্জন করেছেন কেবল মারইয়াতে ইমরান ও ফেরাউনের স্ত্রী আসিয়া। আর সব খাবারের মধ্যে সারিদ যেমন, তেমনি সব নারীদের মধ্যে আয়িশা শ্রেষ্ঠ মর্যাদার অধিকারী।
.
খাদিজা রা. এরপর নবী করিম (সাঃ) যাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসতেন, তিনি বিবি আয়িশা (রা.)। নবীজি (সঃ) তাকে ভালোবেসে 'হুমায়রা' ডাকতেন। নবী করিম সাঃ এর স্ত্রীদের মধ্যে তিনি ছিলেন সবচেয়ে বেশি সম্মান ও মর্যাদার অধিকারী। তিনি নবীজির থেকে ২২০০ এর অধিক হাদিস বর্ণনা করেছেন। যা হাদিস বর্ণনাকারী হিসেবে সকল পুরুষ ও মহিলাদের মধ্যে তাকে দিয়েছে দ্বিতীয় স্থান। অসাধারণ ছিলো তার বিশ্লেষণী শক্তি।
.
ইসলামের জন্য আয়িশা (রাঃ) এঁর অবদান ছিল অতুলনীয়। আল্লাহ তাআলা তাঁকে অসাধারণ মেধা দিয়েছিলেন। রাসূল (সঃ) এঁর ইন্তেকালের পর প্রায় পঞ্চাশ বছর পর্যন্ত তিনি ছিলেন নবুওয়তের ধারক ও বাহক। ধর্মীয় ব্যাপারে কোন ভুল হলে, তিনি ছিলেন সম্মানিত সংশোধক। তিনি ছিলেন জ্ঞান দানকারী এবং ধৈর্য্যশীল।
.
মুসলিম উম্মাহ অনেক কিছুর জন্যই বিবি আয়িশার কাছে ঋণী। যেমন: সর্বপ্রথম তায়াম্মুমের বিষয়টি সামনে এসেছিলো মা আয়িশার জন্যই। আর এটিকে আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে একটি বড় নেয়ামত হিসেবেই বিবেচনা করা হয়। আর এই নিয়ামতটা সম্ভব হয়েছিল তার জন্যই। এরকম আরো কিছু ছোট বড় ঘটনার বর্ণনা এসেছে বইটিতে। যেমন :-
আয়িশা (রা.) এর পরিচয়, নবিজির সঙ্গে বিয়ে, সম্মান ও মর্যাদা, নিয়ামতপ্রাপ্ত নারী, তাকওয়া ও ঈমান, জ্ঞান ও বুদ্ধিমত্তা, সাহাবিদের ভুল সংশোধন, আরবের ডাক্তার, উষ্ট্রের যুদ্ধ ইত্যাদি।
.
সবশেষে আলোচনা করা হয়েছে আয়িশা (রা.) এর বিয়ের বয়স ও তার প্রতি বিদ্বেষ পোষণের পরিণাম নিয়ে। আয়িশা (রা.) এর বিয়ের বয়স নিয়ে আধুনিক প্রগ্রতিশীলদের মধ্যে জল্পনা কল্পনার শেষ নেই। এই নিয়ে তারা নবিজি (সঃ)
.
এর নামে আঙ্গুল তুলতে কুন্ঠাবোধ করেনি। অথচ তারা জানেনা, যুগে যুগে বিয়ের বয়স নির্ধারিত হয়েছিলো সেই সময়ের সমাজ ও সংস্কৃতির দ্বারা। অতীতের কোনো ঘটনা নিয়ে মতামত দিলে হলে সেই সময়ের প্রেক্ষাপট বিবেচনা করা দরকার। এই সত্যকে যে বা যারা অবহেলা করবে, তাদের পক্ষে এসব অপবাদ দেওয়া স্বাভাবিক।
.
বইটির মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা ১১১। অনুবাদের সহজ সরল অনুবাদ ভালো লেগেছে। এক জায়গায় আ-কার (া) জনিত বানান ভুল পেয়েছি। ভালোভাবে লক্ষ্য করলে হয়তো আরো পাওয়া যেতো। এই সামান্য ভুল ছাড়া, বইটিকে স্বল্প পৃষ্ঠার ভালো মানের একটা বই মনে হয়েছে। বিশেষ করে আয়িশা (রা.) বিয়ের বয়স জনিত যুক্তি খন্ডন চমৎকার লেগেছে। যারা আয়িশা (রা.) কে নিয়ে জানতে আগ্রহী তারা পড়তে পারেন। আশাকরি সব বিতর্কের অবসান হবে।