An Najahah Shop
EN

হামাস

An Najahah Shop

হামাস
  • হামাস_img_0

হামাস

380 BDT
1

বই- হামাস
লেখক- আলি আহমদ মাবরুর
প্রকাশনী- গার্ডিয়ান পাবলিকেশন্স



১৯৮৭ সালের ৯ ই ডিসেম্বর। এক সড়ক দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠে ফিলিস্তিন ভূখণ্ড। মূলত সেটি দূর্ঘটনা ছিলো না,ফিলিস্তিনিদের ভাষায় এটি ছিলো পরিকল্পিত একটি হত্যাকান্ড!
রাতে আলোচনায় বসে ইখওয়ানুল মুসলিমিনের ৭ জন নেতা।ইখওয়ানের ফিলিস্তিন শাখাকে প্রতিরোধ আন্দোলনে পরিনত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।নতুন দলটির নাম দেয়া হয়, হারাকাতুল মুকাওয়ামাতিল ইসলামিয়াহ।যা বর্তমান পৃথিবীতে 'হামাস' নামে পরিচিত।

আজকে যে বইটি নিয়ে আলোচনা করবো তার শিরোনাম দলের নাম দিয়েই দেয়া অর্থাৎ হামাস।
ফিলিস্তিন মুক্তি আন্দোলনের ভেতর-বাহির।লিখেছেন আলি আহমদ মাবরুর।এবং সৃজনশীল প্রকাশনী 'গার্ডিয়ান পাবলিকেশন' এর ব্যনারে প্রকাশিত হয়েছে বইটি। ১৪ টি অধ্যায়ে লেখক অসাধারণ ভাবে দলটির উত্থান থেকে এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য তথ্য তুলে এনেছেন।

প্রথম অধ্যায়ে লেখক, ইন্তিফাদা থেকে হামাসের জন্ম।ফিলিস্তিনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস। ফিলিস্তিনের ইখওয়ান শাখা এবং আহমদ ইয়াসিনের কর্মতৎপরতা গুলো উল্লেখ করা হয়েছে।
২য় অধ্যায়ে দেখা যায় ইখওয়ানী ধারায় কিভাবে প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে উঠেছে।হামাসের জন্মলগ্নের কিছু আলাপ এখানে উল্লেখিত হয়েছে।

ইন্তিফাদা শব্দের অর্থ জাগরণ,প্রকম্পিত করা বা জেগে উঠা।তবে ইন্তিফাদা ইসরাইলী দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ আন্দোলনকে বুঝানো হয়ে থাকে।দুটি ইন্তিফাদার কারন,কর্মতৎপরতা,এবং সংক্ষিপ্ত ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে। এখানে সবচেয়ে আকর্ষণীয় একটি বিষয় হলো তৎকালীন সময়ে একটি ইসরাইলী টিভিতে দেয়া আহমদ ইয়াসিনের সাক্ষাৎকার।সেখানে তিনি দুটি কথা জোর দিয়ে বলেছেন, 'কোনো মানুষই স্বাধীনতা হারাতে চায় না। কোনো মানুষই পরাধীন থাকতে চায় না।

৪র্থ অধ্যায়ে হামাসের কর্মকৌশল, ইয়াসির আরাফাতের পিএলও সম্পর্কে হামাসের তৎকালীন দৃষ্টিভঙ্গি।আত্মঘাতী বোমা হামলার সিলসিলার অবসান,প্রতিরোধ আন্দোলনের পাশাপশি হামাসের সামাজিক,শিক্ষা, স্বাস্থ্য সেবা এবং মিডিয়া সেক্টরে যে সকল কাজ করে তার একটি সংক্ষিপ্ত চিত্র এখানে ফুটে উঠেছে।

কুয়েত, জর্ডান কিংবা অন্যান্য দেশের সাথে হামাসের সম্পর্ক কেমন তা ৫ম অধ্যায়ে বর্ণিত হয়েছে।

ইসরায়েলের বিরুদ্ধাচারণ করার অভিযোগে যখন আহমদ ইয়াসিনকে জেলে নেয়া হলো।তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং অতিরিক্ত আরও ১৫ বছর কারাদণ্ড দেয়া হলো।তখন তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন কুরআন হিফয করার।১৯৯০ সালে তিনি হিফজ শেষ করেন।তিনি এই সময়ে ইসলামি শরিয়াহ, ইসলামের ইতিহাস এবং আরবী ব্যকরণের বিস্তর পড়াশোনা করেন।তার পরিবার ছয় মাসে একবার তার সাথে দেখা করার সুযোগ পেতো।তার স্বাস্থ্য ক্রমাগত খারাপ হতে থাকে।অবশেষে তাকে মুক্তি দেয়া হয়।তিনি কিছুটা সুস্থ অনুভব করলে বেরিয়ে পড়েন মুসলিম বিশ্ব সফরে।এর বর্ননা আছে ৬ষ্ঠ অধ্যায়ে।

খালিদ মিশালকে হত্যার জন্য অভিযান ও তার পরবর্তী ঘটনা দিয়ে ৭ম অধ্যায় এবং শান্তি চুক্তির আলোচনা-সমালোচনা দিয়ে ৮ম অধ্যায়ের আলাপ এগিয়েছে।

৯ম অধ্যয়ে হামাস এবং পিএলও'র সম্পর্কের টানাপোড়েন এবং হামাস ও ফাতাহর সম্পর্কের বর্তমান অবস্থা নিয়ে আলোকপাত করা হয়েছে।

১০ম অধ্যায়ে ২য় ইন্তিফাদা, ইয়াসির আরাফাতের মৃত্যু এবং আহমদ ইয়াসিনের হত্যাকান্ডের বিবরণ উঠে এসেছে।

১১শ এবং ১২শ অধ্যায়ে ফিলিস্তিনের ইতিহাসে প্রথম জাতীয় নির্বাচন, হামাসের বিজয় এবং হামাসের সরকার গঠনের দিকগুলো বর্ণিত হয়েছে।
১৩শ অধ্যায়ে হামাস চ্যালেঞ্জ এবং সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা দিয়ে ১৪ তম অধ্যায় শেষ হয়েছে।
সাম্প্রতিক নির্মম নির্যাতন এবং শত শত অমানবিকতার কথা ভেবে লেখক ধারণা করেছেন, হয়তো ৩য় ইন্তিফাদা আসন্ন!এই আলাপ দিয়েই শেষ হয়েছে বইটি।
বইটিতে প্রতিরোধ আন্দোলনের স্বপ্নদ্রষ্টা আহমদ ইয়াসিন সম্পর্কে আরও তথ্য আসতে পারতো।
সর্বোপরি আমাদের এই অঞ্চলের মানুষদের ফিলিস্তিন সম্পর্কে জানার জন্য এ বইটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমি আশাবাদী।