An Najahah Shop

An Najahah Shop

EN

যে জীবন মরীচিকা

An Najahah Shop

যে জীবন মরীচিকা
  • যে জীবন মরীচিকা_img_0

যে জীবন মরীচিকা

120 BDT175 BDTSave 55 BDT

বই: যে জীবন মরীচিকা।
লেখক : শাইখ আব্দুল মালিক আল কাসিম।
প্রকাশনী:সমকালীন
অনুবাদক:আরিফ আবদাল চৌধুরী

আমাদের সমাজে নানা রকমের মানুষ আছে এদের মধ্যে একদল যারা দুনিয়ার চাকচিক্য তে বিভোর,দুনিয়াবি সবকিছুই তাদের কাছে মূল্যবান।তাদের সারাজীবন আবর্তিত হয় ভোগ ,বিলাশ ,আর অহেতুক ফুর্তিতে।দুনিয়াবি জীবন তাদের কাছে আনন্দ ফুর্তি ছাড়া আর যেনো কিছুই নয়।অথচ এই ক্ষণিকের দুনিয়ায় আমাদের স্থায়িত্বকাল যে সবসময়ের জন্য এই বিষয় নিয়ে তারা গাফেল।আরেকদল আছে যারা দুনিয়ার জীবনকে করে তুচ্ছতাচ্ছিল্য ,আখিরাত ই তাদের কাছে সবকিছু তাই দুনিয়ার যাবতীয় দায়িত্ব কর্তব্য থেকে তারা বিচ্ছিন্ন ,রবের হক পালন করতে গিয়ে তারা বান্দার হক এর কথা যেনো একেবারেই ভুলে যায়। ফলে সমাজে সমাজের মানুষ হিসেবে তার যে দায়িত্ব তা থেকে সে নিজেকে সরিয়ে রাখে

আমাদের বুঝতে হবে যে এই দুনিয়ার জীবনের অবশ্যই মূল্য আছে। এ দুনিয়াতেই আমাদের আখিরাতের সম্বল গোছাতে হবে। বলা হয় দুনিয়া হচ্ছে আখিরাতের পুঁজি,আখিরাতের ফসল লাগানোর সময় এই দুনিয়েতেই। কৃষক যেমন যত ভালো ভাবে জমিতে বীজ বপন করবে ফলশ্রুতিতে ঠিক তেমনি ফসল পাবে ,তদ্রুপ দুনিয়াতে যে ব্যাক্তি যত ভালো কাজ করে যেতে পারবে ,আখিরাত জীবন তার জন্য তত কল্যাণময় হবে।। দুনিয়াটা যদি এতোই মূল্যহীন হতো আল্লাহ তা'আলা সোলায়মান আলাইহি স সালামকে রাজত্ব করাতেন না ইউসুফ আলাইহি স সালামকে মিশরের ক্ষমতায় বসাতেন না। দুনিয়ার মধ্যে যা কিছু কল্যাণকর,সেসব আমাদের অবশ্যই গ্রহণ করতে হবে।

"'আল্লাহ চান, দুনিয়ার কল্যাণকর জিনিসগুলো বান্দা যেন তার(আল্লাহর) কাছ থেকে চেয়ে নেয়"।

তবে এটাও ঠিক দুনিয়াকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে কেউ যদি তার আখিরাতকে ভুলে যায় তাহলে তা হবে চূড়ান্ত বোকামি।

সমকাল প্রকাশনীর "যে জীবন মরীচিকা" ঠিক এমনই একটি বই।এই বইয়ে দুনিয়ার জীবনকে ভুলে যেমন কেবল আখিরাতকে প্রধান্য দেওয়া হয়নি সেই সাথে আখিরাতকে ভুলে প্রাধান্য দেওয়া হয় নি ক্ষয়ে যাওয়া দুনিয়াকে । উভয়ের জীবনের মাঝে সমন্বয় করে একজন মুমিনের জীবনপদ্ধতি কেমন হওয়া উচিত সেই কথাগুলােই খুব যত্ন আর ভালােবাসার সুরে বলে গেছেন অারবের প্রখ্যাত দাঈ শাইখ আব্দুল মালিক আল – কাসিম হাফিযাহুল্লাহ । আমাদের সােনালী যুগের মানুষগুলাের জীবন কেমন ছিল ? , তাদের মুখনিঃসৃত বাণী , আল্লাহর বিধান অনুযায়ী তাদের জীবনপদ্ধতিকে মানদণ্ড ধরে লেখক এমনভাবে বইটিকে সাজিয়েছেন — যা যেকোনাে পাঠককে খুব সহজে বােঝাতে সক্ষম হবে যে তার জীবন চলার পথে কেমন হওয়া উচিত।

একজন পাঠক হিসেবে আমি বইটি পড়ে দারুন উপকৃত হয়েছি। আমি জেনেছি আমার জীবনের কিছু ব্যার্থতা , অসফলতা এসব কোনো কিছুই স্থায়ী নয়।আমার ক্ষণিকের ক্লান্তি, দুর্দশা,হতাশা কোনো কিছুই স্থায়ী নয়। বরং এই জীবন তো মুসাফির খানার মত।আমরা যেনো এসেছি কিছুকাল কাটানোর উদ্দেশ্যে সেই সাথে আল্লাহর সন্তুষ্টি আদায়ের লক্ষ্যে। নিশ্চয়ই এই দুনিয়ার জীবন হচ্ছে আমল সংগ্রহের জায়গা।যখন শেষবারের মত সূর্য অস্ত যাবে অতঃপর বিচার দিবসে সূর্য উদিত হবে তখন আর কিছুই করার থাকবে না।তখন শুধুই হিসাব গ্রহণ করা হবে।ইয়াহিয়া ইবনু মুয়াজ রাহিমাহুল্লাহ একটা সুন্দর ওসীয়ত করে গেছেন যে "রাত দীর্ঘ,তাই স্বপ্ন দেখে একে সংক্ষিপ্ত করে ফেলো না।দিন পবিত্র,তাই তোমরা গুনাহ্ দিয়ে একে কলংকিত করে ফেলো না।দুনিয়ার জীবনে তুমি একজন পথচারীর মত হও।উপলব্ধি করো যে,ক্ষণিকের বিশ্রামের পরেই চলে যেতে হবে এই চলে যাওয়ার পালা অবসরের অনেক দ্রুতই চলে আসে।

বর্তমানে আমাদের এমন অবস্থা হয়েছে যে আমরা সামান্য পরিমাণ টাকা পয়সা কিংবা সম্পদের ক্ষতি হলে ই দুশ্চিন্তায় ভেঙে পড়ি,কিন্তু আমাদের মাঝে কতজন জামাতে সালাত আদায় করতে না পারলে আফসোস করি?বরং দ্বিতীয় প্রকার ক্ষতির কথা আমরা খুব দ্রুতই ভুলে যাই।কিংবা অগ্রাহ্য করি। অর্থাৎ যখনই আমি দুনিয়াকে প্রাধান্য দিতে যাবো ততই আমি আল্লাহর কাছ থেকে সরে যেতে থাকবো দুনিয়ার মোহ চাকচিক্য আমাকে এক চোরাবালিতে নিয়ে যাবে যার আমি হয়ত ভাববো এই সম্পদ এই ঐশ্বর্য আমাকে মুক্তি দান করবে অথচ টা মরীচিকার ছাড়া কিছুই না।বস্তুত এই দুনিয়ার জীবন প্রতারণায় পূর্ণ এক সুখের ঘর।আল্লাহ আখিরাতকে বানিয়েছেন দুনিয়ার আমলের প্রতিদানে শান্তি ও শাস্তির আবাস্থল হিসেবে ।তিনি আদেশ করেছেন যে,এই দুনিয়া জীবন হচ্ছে পরিশ্রম ,আপ্রাণ চেষ্টা আর নেক আমলের জায়গা।আমাদের মনে রাখা উচিত এই জীবনের পরিশ্রম যাবতীয় কিছু কেবল আখিরাতের প্রতি নিবেদিত হবার জন্যই।

বইটি আমাদের শেখাবে , কোনোরকম এক পাক্ষিক চিন্তা না করে দুই জীবনের মাঝে কিভাবে ভারসাম্য রাখা সম্ভব। বইটিতে যেমন চিরস্থায়ী জীবনের পরিনতির কথা স্মরন করিয়ে দেওয়া হয়েছে, তেমনই দুনিয়ার জীবনকে কীভাবে উত্তমরূপে কাজে লাগানো যায় – তার দিক – নির্দেশনাও রয়েছে। চাকচিক্য হীন অনাড়ম্বর জীবনজাপনের প্রেরণা আছে।কিন্তু সব ছেড়ে একাকী জীবনের আহ্বান নেই। সব মিলিয়ে এই বইটি মুসলিম ভাই- বোনদেরকে পথ দেখাবে, জীবন নিয়ে নতুন করে ভাবতে শেখাবে।জীবনের আসল মানে শিখাবে ।