An Najahah Shop
EN

উমরাহ সফরের গল্প

An Najahah Shop

উমরাহ সফরের গল্প
  • উমরাহ সফরের গল্প_img_0

উমরাহ সফরের গল্প

245 BDT330 BDTSave 85 BDT
sold_units 2
1

বইয়ের নাম: উমরাহ সফরের গল্প
লেখক: আরিফ আজাদ
ক্যাটাগরি: ভ্রমণকাহিনী
পৃষ্ঠা: ১৮৩
প্রকাশক: সুকুন পাবলিশিং

এক পাঠক জাবালে নুর অর্থাৎ হেরা পর্বতের অভ্যন্তরের কোনো একটি জায়গায় আরিফ আজাদ ভাইয়ের বইয়ের ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করেছে। এটা আরিফ আজাদ ভাইয়ের চোখে পড়ে। তিনিও তার ফেসবুকে ছবিটি পোস্ট দিয়ে লিখেন, 'আমার কখনো যাওয়ার তাওফিক হলো না, কিন্তু মহান রব আমার কাজগুলো সেখানে ঠিক ঠিক পৌঁছে দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!'
তার এই পোস্ট আবার চোখে পড়ে শাইখ আবদুল হাই মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ হাফিজাহুল্লাহ এর। যাকে আমরা শাইখ আহমাদুল্লাহর সাথে প্রায়ই উমরাহ করতে দেখি৷ সেই বিনয়ী মানুষটির ফোনকল আর অণুপ্রেরণা উৎসাহের মাধ্যমেই লেখকের শুরু হয় এক পবিত্রতম যাত্রা। আলহামদুলিল্লাহ।

১৮৩ পৃষ্ঠা সংবলিত ২৮ টি ছোট ছোট খন্ডে লেখক তুলে ধরেছেন তার উমরাহ সফরের গল্প। প্রতিটি গল্পই যেন একে অন্যকে ছাড়িয়ে যাওয়ার প্রতিযোগিতা করছে।

'তারা তবুও স্বপ্ন দেখে' এই খন্ডে লেখকের সাথে এক ফিলিস্তিন কিশোরের সাথে আলাপ হয়। তারা পারিবারিক ভ্রমণে উমরায় আসেন। আলাপের মাঝে লেখক তাকে জিজ্ঞেস করেন, 'বাইতুল্লাহ আর মাসজিদ আন নববিতে কোন জিনিসটা আল্লাহর কাছে বেশি বেশি চেয়েছ?'
কিশোর আহমাদ বলল, 'সবচেয়ে বেশি আমার আব্বার জন্যে দুয়া করেছি। আজ ছয়মাস যাবত তিনি একটা রোগে ভুগছেন। এই রোগের জন্য তার চাকরিটাও চলে গেছে। এখন তিনি বেকার। বেশ কষ্টের ভেতর দিয়ে আমাদের যেতে হচ্ছে।'
সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিটার উপার্জনের রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পরও তাদের এই উমরা সফরের মধ্যে আমাদের জন্য রিযিক, ধৈর্য ও তাওয়াক্কুলের শিক্ষা রয়েছে।

বইটির যে খন্ডটি আমার হৃদয় কেড়ে নিয়েছে সেটি হলো, 'তুমি দেখতে আবু বাকারের মতো'। আমরা আজও আমাদের প্রিয় সম্মানিত লেখক আরিফ আজাদ ভাইকে দেখিনি। তাই তার চেহারা সম্পর্কে আমরা অবগত নই। উমরা সফর চলাকালীন এক আরব লেখকের হাত ধরে বলেছেন, তুমি দেখতে ঠিক আবু বাকার রাদিয়াল্লাহু আনহুর মতো। আমি তো হাদিস শাস্ত্রের মানুষ, তোমাকে দেখে কেন জানি আবু বাকারের কথা মনে পড়ে গেল৷ তিনি দেখতে ঠিক তোমার মতো ছিলেন।'
এই কথাটি লেখকের একজীবনের প্রাপ্তি। লেখক আল্লাহর কাছে দোয়া করেছেন- 'আমাকে দেখে আপনার একজন বান্দার আবু বাকারের স্মৃতি মনে পড়েছিল, এটাকে উসিলা করে হলেও আমাকে ক্ষমা করে দিন এবং প্রিয় সাহাবি আবু বাকার রাদিয়াল্লাহু আনহুর সাথি বানিয়ে দিন।'
তার এই দোয়া আল্লাহ কবুল করুক আমিন।

পুরো উমরাহ সফরের মধ্যে যে চরিত্রটি আমার সবচেয়ে ভালো লেগেছে সেই চরিত্রটি হলো মুহাম্মদ। যিনি ছিলেন লেখকের ইতিকাফের সঙ্গী। তার সম্পর্কে লেখকের কিছু বর্ণনা তুলে ধরছি- 'ইতিকাফে বসার শুরুর দিন থেকে খেয়াল করেছি, ফযর সালাত শেষ করে মুহাম্মদ কোথায় যেন চলে যান। ফিরেন দশটা বা সাড়ে দশটার দিকে। যখন ফিরেন তখন তার হাত ভর্তি উপহারের বহর। প্রথমদিন আমার জন্য নিয়ে আসলেন খুব সুন্দর একটা জায়নামায।
আমরা যে সারিতে বসেছি সেই সারি এবং আমাদের সামনের এবং পেছনের দুই থেকে তিন সারির প্রায় সকলে তার কাছ থেকে কোনো না কোনো উপহার পেয়েছে। শুধু একবার নয়, বার কয়েক করে।
আশ্চর্য ব্যাপার, মুহাম্মদ কীভাবে যেন বুঝে গিয়েছিলেন কার কী দরকার, কার কী ভালো লাগে। সেই অনুযায়ী তিনি প্রতিদিন হাজির হতেন দরকার আর পছন্দ অনুযায়ী উপহার সামগ্রী নিয়ে।'
লেখকও তার সেই বন্ধু মুহম্মদকে একটা টেবিল ঘড়ি উপহার দেন। মুহাম্মদ উপহারটি হাতে নিয়ে বললেন, 'এই ঘড়িটা আমি সবসময় আমার টেবিলের ওপরে রাখব, যেন এটা দেখলেই তোমার কথা মনে পড়ে। আল্লাহ তোমাকে উত্তম বিনিময় দিন, আরিফ।'
এমন বন্ধু আমাদের জীবনেও আসুক।

বইটির পুরো লেখাই অনন্য অসাধারণ। সম্মানিত লেখক "আরিফ আজাদ"- এর পাঠকপ্রিয়তা টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া ছাড়িয়ে দেশের বাইরেও পৌঁছে গেছে।
এবারও তার বই উম্মাহর কল্যাণে সর্বস্তরে পৌঁছে যাক এই দোয়াই রইল। আল্লাহ লেখকের এই উমরাহ সফর কবুল করুক এবং আমাদেরকেও আল্লাহর ঘরের মেহমান হওয়ার তাওফিক দান করুক আমিন। ।