বৃহন্নলা
বই : বৃহন্নলা- এক বিবর্ণ স্বপ্নের গল্পলেখিকা : মোরশেদা কাইয়ুমী প্রকাশনার : ইজরা পাবলিকেশন্সবৃহন্নলা! আমার কাছে একেবারে নতুন একটা শব্দ। ক'দিন আগেও আমি জানতাম না বৃহন্নলা মানে কী। জানতে পারি একটা ভিন্ন টপিকের বই পড়ার মাধ্যমে। বৃহন্নলা মানে আমাদের সমাজের বিশেষ মানুষগুলো যাদের আমরা 'হিজড়া' বা 'তৃতীয় লিঙ্গ' বলে সম্বোধন করি। বাস্তব জীবনে যাদের আমরা মানুষের কাতারে ফেলি না। তাদের আমরা মনে করি অপবিত্র এক অভিশাপ! যার দরুন ছোটবেলা থেকেই আমরা তাদের তাড়িয়ে দিই। তারপর তারা পথেঘাটে বড় হয়। তাদের আমরা রাস্তাঘাটে বিশৃঙ্খলা করতে দেখি। বিভিন্ন অমানবিক কাজ করতে দেখি। কিন্তু আমরা কি কখনো তাদের সাথে মানবিক হই? আমরা কি আমাদের মতো তাদেরও আল্লাহর সৃষ্টি বলে মনে করি? আমরা কি তাদের তুচ্ছ- তাচ্ছিল্য করে সমাজ থেকে তাড়িয়ে দিই না? তাদের এই অবস্থার জন্য কি আমাদের মতো সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষগুলোই দায়ী নয়? অথচ আমরা একটিবারও ভাবি না তাদের কথা। লেখিকা মোরশেদা কাইয়ুমীর লেখা "বৃহন্নলা- এক বিবর্ণ স্বপ্নের গল্প" আপনাকে তাদের নিয়ে ভাবতে বাধ্য করবে। বদলে দিবে তাদের নিয়ে আপনার গতানুগতিক সকল চিন্তাভাবনা।▪️বই কথা:__________________"বৃহন্নলা- এক বিবর্ণ স্বপ্নের গল্প" একটি ইসলামিক উপন্যাস। উপন্যাসটি আপনাকে একটি ঝরে পড়া ফুলের নির্মম জীবনের পাঠ দিবে। যেখানে একজন নিষ্পাপ শিশুর শারীরিক ও মানসিক বৈশিষ্ট্য অন্যান্য নারী-পুরুষ থেকে ভিন্ন হওয়ায় অর্থাৎ সে আল্লাহর বিশেষ সৃষ্টি বলে তাকে ছোট থেকেই সমাজের বিভিন্ন মানুষের হেয়, অপমান, হাসি-ঠাট্টা ও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। একটা সময় পর বের করে দেওয়া হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে। বিচ্ছিন্ন করা হয় সমাজ থেকে এমনকি নিজের পরিবার থেকেও। নিজ জন্মদাতা পিতাও তাড়িয়ে দেয় তার আপন সন্তানকে। এরপর শুরু হয় তার জীবনের এক নতুন যাত্রা। রচিত হয় জীবনের প্রতি পদে পদে লাঞ্ছিত, অপমানিত ও নির্যাতিত হওয়ার গল্প। জীবনের এতো ঝড়- ঝাপটার পরও হার না মেনে জীবন যুদ্ধে এগিয়ে যাওয়ার এক অনন্য- অসাধারণ গল্প!▪️গল্প কথা:__________________গল্পটা শুরু হয় টুসিকে দিয়ে। টুসি দূরন্ত ও চাঞ্চল্যময় এক কিশোরী। বয়ঃসন্ধির শুরুতেই টুসির বিয়ে হয় ফরিদের সাথে। কিছুদিন পরেই টুসির কোলজুড়ে জন্ম নেয় সুহান। সুহান- গল্পের এক ভিন্ন চরিত্র। গল্পটা মূলত তাকে ঘিরেই। ধীরে ধীরে বড় হয় সুহান। টুসি আদর করে তাকে জীবন্ত পুতুল বলে ডাকত। কিন্তু বড় হওয়ার সাথে সাথেই সুহানের জীবনে শুরু হয় এক অন্যরকম ঝড়। যে ঝড়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারে না সুহানের মা টুসি এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও। সুহান ছেলে হলেও বড় হওয়ার সাথে সাথে লক্ষ্য করা যায় তার স্বভাব চরিত্র মেয়েলি এবং তার শারীরিক বৈশিষ্ট্যও ধীরে ধীরে মেয়েদের মতো হয়ে যাচ্ছে। শুরু হয় সমাজের মানুষের হাসি-ঠাট্টা, অপমান। নিজের জন্মদাতা পিতার অবহেলা, অনাদর। একসময় সমাজের মানুষের অপমান আর সহ্য করতে না পেরে জন্মদাতা পিতা নিজ সন্তানকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। অকালে ঝরে পড়ে বাবা মায়ের ভালোবাসার ফুল। সেই ফুল হারিয়ে যায় পৃথিবীর হাজারো মানুষের ভিড়ে। কেউ কি নেই এই ফুলকে যত্ন করে কুড়িয়ে নিবে? যে তাকে আশ্রয় দিবে? যে তাকে নিরাপত্তা দিবে? এই সমাজের ঘৃণিত সকল মানুষের আঘাত প্রতিঘাত থেকে তাকে রক্ষা করবে?-- এসকল প্রশ্নেরই উত্তর জানতে পারবেন সম্পূর্ণ বইটি পড়লে।▪️বাস্তবিকা: ___________________বাস্তব জীবনে চলাফেরা করতে গিয়ে রাস্তাঘাটে অনেক বৃহন্নলাদের দেখেছি। যেই দৃশ্যটা সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ে সেটা হচ্ছে-- যানবাহন চালক কিংবা দোকানদারদের কাছে বৃহন্নলাদের টাকা চাওয়া। আর তারা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের সাথে বাজে ব্যবহার করা। গালি-গালাজ কিংবা অশ্লীল সব কথাবার্তা বলে একটা বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করা। এছাড়াও আত্নীয়স্বজন অনেকের বিয়েতে এসে মোটা অংকের একটা টাকা দাবি করা এবং সেটা দিতে তারা অপারগ হলে বিশৃঙ্খলা করতেও শুনেছি। পাড়া বা মহল্লায় বৃহন্নলাদের অনেক কুচক্রের সঙ্গে জড়িত থাকতেও দেখেছি। এছাড়া কোনো বৃহন্নলাকেই কোনোদিন ধর্ম পালন করতে দেখিনি। বরং খুব কাছ থেকেই সকল অনৈতিক কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকতে দেখেছি। এসব দেখতে দেখতে আমি মোটামুটি এই নীতিতে বিশ্বাসী ছিলাম যে, বৃহন্নলা মানেই খারাপ। তাদের কাজ হচ্ছে চাঁদাবাজি করা। রাস্তাঘাটে অস্বস্থিকর পরিবেশের সৃষ্টি করা। সকল কুকাজের সঙ্গে জড়িত থাকা। আমার মনে কখনো এই চিন্তা আসেনি যে আসলে তাদের এমনটা হওয়ার পেছনের কারণটা কী? তারাও তো আল্লাহর সৃষ্টি ঠিক আমাদের মতোই। আলহামদুলিল্লাহ বইটি পড়ার পর সেই ভাবনাটা আমি ভাবতে বাধ্য হয়েছি। পরিবর্তন হয়েছে আমার সেই সকল স্বার্থপর চিন্তা-ভাবনার। অন্তরে জেগেছে সেই বিশেষ মানুষগুলোর প্রতি বিশেষ শ্রদ্ধা।▪️পাঠ প্রতিক্রিয়া:________________________অনেক ইন্টারেস্টিং একটি বই! একেবারে এক বসায় পড়ে ফেলার মতো। একদম ভিন্ন টপিকের হওয়ায় বইটি পড়াকালীন অত্যন্ত মনোযোগী পাঠিকা ছিলাম। গল্পের একেকটা প্লট পড়ার সময় পরবর্তী প্লটে কি আছে সেটা জানার জন্য মনের মধ্যে অস্থিরতা কাজ করতো। সবমিলিয়ে এক টানটান উত্তেজনা নিয়ে বইটি শেষ করি। বইটি পড়ার মাধ্যমে বৃহন্নলাদের নিয়ে অনেক তথ্য জানতে পারি। ইসলাম ধর্মে তাদের নিয়ে কি বিধান দেওয়া হয়েছে সেটাও জানতে পারি। গল্পটির সমাজসেবামূলক সংস্থার নামগুলো খুব বেশি সুন্দর ছিলো, যেমন- মায়া কানন, স্বপ্নের আঙিনা। সম্পূর্ণ গল্পটিই আমার খুব ভালো লেগেছে। গল্পের শেষটা আমাকে ভীষণভাবে কাঁদিয়েছে। আচ্ছা লেখিকা আপা গল্পের শেষটা কি এমন না হলে হতো না!? ▪️আলোচনা ও সমালোচনা:________________________________এরকম ভিন্ন টপিকের একটি বই পাঠকমহলে উপহার দেওয়ার জন্য লেখিকা ও প্রকাশনী নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। বইটির মূল ম্যাসেজটি আমাদের বৃহন্নলাদের প্রতি সহনশীল হতে শেখাবে ইনশাআল্লাহ। এছাড়াও বইটির বাহ্যিক বৈশিষ্ট্যগুলোও যেমন প্রচ্ছদ, বাইন্ডিং, ফন্ট সাইজ সবগুলোই পারফেক্ট ছিলো আলহামদুলিল্লাহ।স্বাভাবিকভাবেই বইটির ত্রুটি বলতে কয়েকটি বানান বিভ্রাট আর বাক্যের অসংগতি চোখে পড়েছে। এছাড়া বইটির কোনো বিষয় নিয়ে সমালোচনা করার দুঃসাহস আমার নেই। বরং আমি লেখিকার এমন চিন্তা-ভাবনাকে সাধুবাদ জানাই। আল্লাহ লেখিকার লিখায় অঢেল বারাকাহ দিক।▪️কাদের জন্য বইটি?:___________________________আল্লাহ যদি আমাকে সামর্থ্য ও সুযোগ দিতেন তাহলে আমি রাস্তাঘাটে দেখা সকল বৃহন্নলাদের বইটি পড়তে দিতাম। আমি মনে করি, তাদের নিয়ে রচিত বইটি সবার আগে তাদেরই পড়া উচিত। তাদেরও জানা উচিত আল্লাহর বিধান ও নিজেদের অধিকার সম্বন্ধে। এছাড়াও সমাজের সর্বস্তরের মানুষেরও বইটি পড়া উচিত। যাতে তারা তাদের চিন্তা-ভাবনার পরিবর্তন ঘটাতে পারে এবং চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা হাজারো বৃহন্নলাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে পারে। সর্বোপরি, বইটি ছড়িয়ে পড়ুক পৃথিবীর সকল প্রান্তে। একটু একটু করে হলেও বদলে যাক এই কলুষিত সমাজ, পরিবার এবং পৃথিবী। ▪️
An Najahah Shop
Category List
All products

বই : বৃহন্নলা- এক বিবর্ণ স্বপ্নের গল্প
লেখিকা : মোরশেদা কাইয়ুমী
প্রকাশনার : ইজরা পাবলিকেশন্স
বৃহন্নলা! আমার কাছে একেবারে নতুন একটা শব্দ। ক'দিন আগেও আমি জানতাম না বৃহন্নলা মানে কী। জানতে পারি একটা ভিন্ন টপিকের বই পড়ার মাধ্যমে। বৃহন্নলা মানে আমাদের সমাজের বিশেষ মানুষগুলো যাদের আমরা 'হিজড়া' বা 'তৃতীয় লিঙ্গ' বলে সম্বোধন করি। বাস্তব জীবনে যাদের আমরা মানুষের কাতারে ফেলি না। তাদের আমরা মনে করি অপবিত্র এক অভিশাপ! যার দরুন ছোটবেলা থেকেই আমরা তাদের তাড়িয়ে দিই। তারপর তারা পথেঘাটে বড় হয়। তাদের আমরা রাস্তাঘাটে বিশৃঙ্খলা করতে দেখি। বিভিন্ন অমানবিক কাজ করতে দেখি। কিন্তু আমরা কি কখনো তাদের সাথে মানবিক হই? আমরা কি আমাদের মতো তাদেরও আল্লাহর সৃষ্টি বলে মনে করি? আমরা কি তাদের তুচ্ছ- তাচ্ছিল্য করে সমাজ থেকে তাড়িয়ে দিই না? তাদের এই অবস্থার জন্য কি আমাদের মতো সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষগুলোই দায়ী নয়? অথচ আমরা একটিবারও ভাবি না তাদের কথা। লেখিকা মোরশেদা কাইয়ুমীর লেখা "বৃহন্নলা- এক বিবর্ণ স্বপ্নের গল্প" আপনাকে তাদের নিয়ে ভাবতে বাধ্য করবে। বদলে দিবে তাদের নিয়ে আপনার গতানুগতিক সকল চিন্তাভাবনা।
▪️বই কথা:
__________________
"বৃহন্নলা- এক বিবর্ণ স্বপ্নের গল্প" একটি ইসলামিক উপন্যাস। উপন্যাসটি আপনাকে একটি ঝরে পড়া ফুলের নির্মম জীবনের পাঠ দিবে। যেখানে একজন নিষ্পাপ শিশুর শারীরিক ও মানসিক বৈশিষ্ট্য অন্যান্য নারী-পুরুষ থেকে ভিন্ন হওয়ায় অর্থাৎ সে আল্লাহর বিশেষ সৃষ্টি বলে তাকে ছোট থেকেই সমাজের বিভিন্ন মানুষের হেয়, অপমান, হাসি-ঠাট্টা ও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। একটা সময় পর বের করে দেওয়া হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে। বিচ্ছিন্ন করা হয় সমাজ থেকে এমনকি নিজের পরিবার থেকেও। নিজ জন্মদাতা পিতাও তাড়িয়ে দেয় তার আপন সন্তানকে। এরপর শুরু হয় তার জীবনের এক নতুন যাত্রা। রচিত হয় জীবনের প্রতি পদে পদে লাঞ্ছিত, অপমানিত ও নির্যাতিত হওয়ার গল্প। জীবনের এতো ঝড়- ঝাপটার পরও হার না মেনে জীবন যুদ্ধে এগিয়ে যাওয়ার এক অনন্য- অসাধারণ গল্প!
▪️গল্প কথা:
__________________
গল্পটা শুরু হয় টুসিকে দিয়ে। টুসি দূরন্ত ও চাঞ্চল্যময় এক কিশোরী। বয়ঃসন্ধির শুরুতেই টুসির বিয়ে হয় ফরিদের সাথে। কিছুদিন পরেই টুসির কোলজুড়ে জন্ম নেয় সুহান। সুহান- গল্পের এক ভিন্ন চরিত্র। গল্পটা মূলত তাকে ঘিরেই। ধীরে ধীরে বড় হয় সুহান। টুসি আদর করে তাকে জীবন্ত পুতুল বলে ডাকত। কিন্তু বড় হওয়ার সাথে সাথেই সুহানের জীবনে শুরু হয় এক অন্যরকম ঝড়। যে ঝড়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারে না সুহানের মা টুসি এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও। সুহান ছেলে হলেও বড় হওয়ার সাথে সাথে লক্ষ্য করা যায় তার স্বভাব চরিত্র মেয়েলি এবং তার শারীরিক বৈশিষ্ট্যও ধীরে ধীরে মেয়েদের মতো হয়ে যাচ্ছে। শুরু হয় সমাজের মানুষের হাসি-ঠাট্টা, অপমান। নিজের জন্মদাতা পিতার অবহেলা, অনাদর। একসময় সমাজের মানুষের অপমান আর সহ্য করতে না পেরে জন্মদাতা পিতা নিজ সন্তানকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। অকালে ঝরে পড়ে বাবা মায়ের ভালোবাসার ফুল। সেই ফুল হারিয়ে যায় পৃথিবীর হাজারো মানুষের ভিড়ে। কেউ কি নেই এই ফুলকে যত্ন করে কুড়িয়ে নিবে? যে তাকে আশ্রয় দিবে? যে তাকে নিরাপত্তা দিবে? এই সমাজের ঘৃণিত সকল মানুষের আঘাত প্রতিঘাত থেকে তাকে রক্ষা করবে?-- এসকল প্রশ্নেরই উত্তর জানতে পারবেন সম্পূর্ণ বইটি পড়লে।
▪️বাস্তবিকা:
___________________
বাস্তব জীবনে চলাফেরা করতে গিয়ে রাস্তাঘাটে অনেক বৃহন্নলাদের দেখেছি। যেই দৃশ্যটা সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ে সেটা হচ্ছে-- যানবাহন চালক কিংবা দোকানদারদের কাছে বৃহন্নলাদের টাকা চাওয়া। আর তারা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের সাথে বাজে ব্যবহার করা। গালি-গালাজ কিংবা অশ্লীল সব কথাবার্তা বলে একটা বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করা। এছাড়াও আত্নীয়স্বজন অনেকের বিয়েতে এসে মোটা অংকের একটা টাকা দাবি করা এবং সেটা দিতে তারা অপারগ হলে বিশৃঙ্খলা করতেও শুনেছি। পাড়া বা মহল্লায় বৃহন্নলাদের অনেক কুচক্রের সঙ্গে জড়িত থাকতেও দেখেছি। এছাড়া কোনো বৃহন্নলাকেই কোনোদিন ধর্ম পালন করতে দেখিনি। বরং খুব কাছ থেকেই সকল অনৈতিক কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকতে দেখেছি। এসব দেখতে দেখতে আমি মোটামুটি এই নীতিতে বিশ্বাসী ছিলাম যে, বৃহন্নলা মানেই খারাপ। তাদের কাজ হচ্ছে চাঁদাবাজি করা। রাস্তাঘাটে অস্বস্থিকর পরিবেশের সৃষ্টি করা। সকল কুকাজের সঙ্গে জড়িত থাকা। আমার মনে কখনো এই চিন্তা আসেনি যে আসলে তাদের এমনটা হওয়ার পেছনের কারণটা কী? তারাও তো আল্লাহর সৃষ্টি ঠিক আমাদের মতোই। আলহামদুলিল্লাহ বইটি পড়ার পর সেই ভাবনাটা আমি ভাবতে বাধ্য হয়েছি। পরিবর্তন হয়েছে আমার সেই সকল স্বার্থপর চিন্তা-ভাবনার। অন্তরে জেগেছে সেই বিশেষ মানুষগুলোর প্রতি বিশেষ শ্রদ্ধা।
▪️পাঠ প্রতিক্রিয়া:
________________________
অনেক ইন্টারেস্টিং একটি বই! একেবারে এক বসায় পড়ে ফেলার মতো। একদম ভিন্ন টপিকের হওয়ায় বইটি পড়াকালীন অত্যন্ত মনোযোগী পাঠিকা ছিলাম। গল্পের একেকটা প্লট পড়ার সময় পরবর্তী প্লটে কি আছে সেটা জানার জন্য মনের মধ্যে অস্থিরতা কাজ করতো। সবমিলিয়ে এক টানটান উত্তেজনা নিয়ে বইটি শেষ করি। বইটি পড়ার মাধ্যমে বৃহন্নলাদের নিয়ে অনেক তথ্য জানতে পারি। ইসলাম ধর্মে তাদের নিয়ে কি বিধান দেওয়া হয়েছে সেটাও জানতে পারি। গল্পটির সমাজসেবামূলক সংস্থার নামগুলো খুব বেশি সুন্দর ছিলো, যেমন- মায়া কানন, স্বপ্নের আঙিনা।
সম্পূর্ণ গল্পটিই আমার খুব ভালো লেগেছে। গল্পের শেষটা আমাকে ভীষণভাবে কাঁদিয়েছে। আচ্ছা লেখিকা আপা গল্পের শেষটা কি এমন না হলে হতো না!?
▪️আলোচনা ও সমালোচনা:
________________________________
এরকম ভিন্ন টপিকের একটি বই পাঠকমহলে উপহার দেওয়ার জন্য লেখিকা ও প্রকাশনী নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। বইটির মূল ম্যাসেজটি আমাদের বৃহন্নলাদের প্রতি সহনশীল হতে শেখাবে ইনশাআল্লাহ। এছাড়াও বইটির বাহ্যিক বৈশিষ্ট্যগুলোও যেমন প্রচ্ছদ, বাইন্ডিং, ফন্ট সাইজ সবগুলোই পারফেক্ট ছিলো আলহামদুলিল্লাহ।
স্বাভাবিকভাবেই বইটির ত্রুটি বলতে কয়েকটি বানান বিভ্রাট আর বাক্যের অসংগতি চোখে পড়েছে। এছাড়া বইটির কোনো বিষয় নিয়ে সমালোচনা করার দুঃসাহস আমার নেই। বরং আমি লেখিকার এমন চিন্তা-ভাবনাকে সাধুবাদ জানাই। আল্লাহ লেখিকার লিখায় অঢেল বারাকাহ দিক।
▪️কাদের জন্য বইটি?:
___________________________
আল্লাহ যদি আমাকে সামর্থ্য ও সুযোগ দিতেন তাহলে আমি রাস্তাঘাটে দেখা সকল বৃহন্নলাদের বইটি পড়তে দিতাম। আমি মনে করি, তাদের নিয়ে রচিত বইটি সবার আগে তাদেরই পড়া উচিত। তাদেরও জানা উচিত আল্লাহর বিধান ও নিজেদের অধিকার সম্বন্ধে। এছাড়াও সমাজের সর্বস্তরের মানুষেরও বইটি পড়া উচিত। যাতে তারা তাদের চিন্তা-ভাবনার পরিবর্তন ঘটাতে পারে এবং চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা হাজারো বৃহন্নলাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে পারে। সর্বোপরি, বইটি ছড়িয়ে পড়ুক পৃথিবীর সকল প্রান্তে। একটু একটু করে হলেও বদলে যাক এই কলুষিত সমাজ, পরিবার এবং পৃথিবী।
▪️
লেখিকা : মোরশেদা কাইয়ুমী
প্রকাশনার : ইজরা পাবলিকেশন্স
বৃহন্নলা! আমার কাছে একেবারে নতুন একটা শব্দ। ক'দিন আগেও আমি জানতাম না বৃহন্নলা মানে কী। জানতে পারি একটা ভিন্ন টপিকের বই পড়ার মাধ্যমে। বৃহন্নলা মানে আমাদের সমাজের বিশেষ মানুষগুলো যাদের আমরা 'হিজড়া' বা 'তৃতীয় লিঙ্গ' বলে সম্বোধন করি। বাস্তব জীবনে যাদের আমরা মানুষের কাতারে ফেলি না। তাদের আমরা মনে করি অপবিত্র এক অভিশাপ! যার দরুন ছোটবেলা থেকেই আমরা তাদের তাড়িয়ে দিই। তারপর তারা পথেঘাটে বড় হয়। তাদের আমরা রাস্তাঘাটে বিশৃঙ্খলা করতে দেখি। বিভিন্ন অমানবিক কাজ করতে দেখি। কিন্তু আমরা কি কখনো তাদের সাথে মানবিক হই? আমরা কি আমাদের মতো তাদেরও আল্লাহর সৃষ্টি বলে মনে করি? আমরা কি তাদের তুচ্ছ- তাচ্ছিল্য করে সমাজ থেকে তাড়িয়ে দিই না? তাদের এই অবস্থার জন্য কি আমাদের মতো সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষগুলোই দায়ী নয়? অথচ আমরা একটিবারও ভাবি না তাদের কথা। লেখিকা মোরশেদা কাইয়ুমীর লেখা "বৃহন্নলা- এক বিবর্ণ স্বপ্নের গল্প" আপনাকে তাদের নিয়ে ভাবতে বাধ্য করবে। বদলে দিবে তাদের নিয়ে আপনার গতানুগতিক সকল চিন্তাভাবনা।
▪️বই কথা:
__________________
"বৃহন্নলা- এক বিবর্ণ স্বপ্নের গল্প" একটি ইসলামিক উপন্যাস। উপন্যাসটি আপনাকে একটি ঝরে পড়া ফুলের নির্মম জীবনের পাঠ দিবে। যেখানে একজন নিষ্পাপ শিশুর শারীরিক ও মানসিক বৈশিষ্ট্য অন্যান্য নারী-পুরুষ থেকে ভিন্ন হওয়ায় অর্থাৎ সে আল্লাহর বিশেষ সৃষ্টি বলে তাকে ছোট থেকেই সমাজের বিভিন্ন মানুষের হেয়, অপমান, হাসি-ঠাট্টা ও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। একটা সময় পর বের করে দেওয়া হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে। বিচ্ছিন্ন করা হয় সমাজ থেকে এমনকি নিজের পরিবার থেকেও। নিজ জন্মদাতা পিতাও তাড়িয়ে দেয় তার আপন সন্তানকে। এরপর শুরু হয় তার জীবনের এক নতুন যাত্রা। রচিত হয় জীবনের প্রতি পদে পদে লাঞ্ছিত, অপমানিত ও নির্যাতিত হওয়ার গল্প। জীবনের এতো ঝড়- ঝাপটার পরও হার না মেনে জীবন যুদ্ধে এগিয়ে যাওয়ার এক অনন্য- অসাধারণ গল্প!
▪️গল্প কথা:
__________________
গল্পটা শুরু হয় টুসিকে দিয়ে। টুসি দূরন্ত ও চাঞ্চল্যময় এক কিশোরী। বয়ঃসন্ধির শুরুতেই টুসির বিয়ে হয় ফরিদের সাথে। কিছুদিন পরেই টুসির কোলজুড়ে জন্ম নেয় সুহান। সুহান- গল্পের এক ভিন্ন চরিত্র। গল্পটা মূলত তাকে ঘিরেই। ধীরে ধীরে বড় হয় সুহান। টুসি আদর করে তাকে জীবন্ত পুতুল বলে ডাকত। কিন্তু বড় হওয়ার সাথে সাথেই সুহানের জীবনে শুরু হয় এক অন্যরকম ঝড়। যে ঝড়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারে না সুহানের মা টুসি এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও। সুহান ছেলে হলেও বড় হওয়ার সাথে সাথে লক্ষ্য করা যায় তার স্বভাব চরিত্র মেয়েলি এবং তার শারীরিক বৈশিষ্ট্যও ধীরে ধীরে মেয়েদের মতো হয়ে যাচ্ছে। শুরু হয় সমাজের মানুষের হাসি-ঠাট্টা, অপমান। নিজের জন্মদাতা পিতার অবহেলা, অনাদর। একসময় সমাজের মানুষের অপমান আর সহ্য করতে না পেরে জন্মদাতা পিতা নিজ সন্তানকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। অকালে ঝরে পড়ে বাবা মায়ের ভালোবাসার ফুল। সেই ফুল হারিয়ে যায় পৃথিবীর হাজারো মানুষের ভিড়ে। কেউ কি নেই এই ফুলকে যত্ন করে কুড়িয়ে নিবে? যে তাকে আশ্রয় দিবে? যে তাকে নিরাপত্তা দিবে? এই সমাজের ঘৃণিত সকল মানুষের আঘাত প্রতিঘাত থেকে তাকে রক্ষা করবে?-- এসকল প্রশ্নেরই উত্তর জানতে পারবেন সম্পূর্ণ বইটি পড়লে।
▪️বাস্তবিকা:
___________________
বাস্তব জীবনে চলাফেরা করতে গিয়ে রাস্তাঘাটে অনেক বৃহন্নলাদের দেখেছি। যেই দৃশ্যটা সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ে সেটা হচ্ছে-- যানবাহন চালক কিংবা দোকানদারদের কাছে বৃহন্নলাদের টাকা চাওয়া। আর তারা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের সাথে বাজে ব্যবহার করা। গালি-গালাজ কিংবা অশ্লীল সব কথাবার্তা বলে একটা বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করা। এছাড়াও আত্নীয়স্বজন অনেকের বিয়েতে এসে মোটা অংকের একটা টাকা দাবি করা এবং সেটা দিতে তারা অপারগ হলে বিশৃঙ্খলা করতেও শুনেছি। পাড়া বা মহল্লায় বৃহন্নলাদের অনেক কুচক্রের সঙ্গে জড়িত থাকতেও দেখেছি। এছাড়া কোনো বৃহন্নলাকেই কোনোদিন ধর্ম পালন করতে দেখিনি। বরং খুব কাছ থেকেই সকল অনৈতিক কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকতে দেখেছি। এসব দেখতে দেখতে আমি মোটামুটি এই নীতিতে বিশ্বাসী ছিলাম যে, বৃহন্নলা মানেই খারাপ। তাদের কাজ হচ্ছে চাঁদাবাজি করা। রাস্তাঘাটে অস্বস্থিকর পরিবেশের সৃষ্টি করা। সকল কুকাজের সঙ্গে জড়িত থাকা। আমার মনে কখনো এই চিন্তা আসেনি যে আসলে তাদের এমনটা হওয়ার পেছনের কারণটা কী? তারাও তো আল্লাহর সৃষ্টি ঠিক আমাদের মতোই। আলহামদুলিল্লাহ বইটি পড়ার পর সেই ভাবনাটা আমি ভাবতে বাধ্য হয়েছি। পরিবর্তন হয়েছে আমার সেই সকল স্বার্থপর চিন্তা-ভাবনার। অন্তরে জেগেছে সেই বিশেষ মানুষগুলোর প্রতি বিশেষ শ্রদ্ধা।
▪️পাঠ প্রতিক্রিয়া:
________________________
অনেক ইন্টারেস্টিং একটি বই! একেবারে এক বসায় পড়ে ফেলার মতো। একদম ভিন্ন টপিকের হওয়ায় বইটি পড়াকালীন অত্যন্ত মনোযোগী পাঠিকা ছিলাম। গল্পের একেকটা প্লট পড়ার সময় পরবর্তী প্লটে কি আছে সেটা জানার জন্য মনের মধ্যে অস্থিরতা কাজ করতো। সবমিলিয়ে এক টানটান উত্তেজনা নিয়ে বইটি শেষ করি। বইটি পড়ার মাধ্যমে বৃহন্নলাদের নিয়ে অনেক তথ্য জানতে পারি। ইসলাম ধর্মে তাদের নিয়ে কি বিধান দেওয়া হয়েছে সেটাও জানতে পারি। গল্পটির সমাজসেবামূলক সংস্থার নামগুলো খুব বেশি সুন্দর ছিলো, যেমন- মায়া কানন, স্বপ্নের আঙিনা।
সম্পূর্ণ গল্পটিই আমার খুব ভালো লেগেছে। গল্পের শেষটা আমাকে ভীষণভাবে কাঁদিয়েছে। আচ্ছা লেখিকা আপা গল্পের শেষটা কি এমন না হলে হতো না!?
▪️আলোচনা ও সমালোচনা:
________________________________
এরকম ভিন্ন টপিকের একটি বই পাঠকমহলে উপহার দেওয়ার জন্য লেখিকা ও প্রকাশনী নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। বইটির মূল ম্যাসেজটি আমাদের বৃহন্নলাদের প্রতি সহনশীল হতে শেখাবে ইনশাআল্লাহ। এছাড়াও বইটির বাহ্যিক বৈশিষ্ট্যগুলোও যেমন প্রচ্ছদ, বাইন্ডিং, ফন্ট সাইজ সবগুলোই পারফেক্ট ছিলো আলহামদুলিল্লাহ।
স্বাভাবিকভাবেই বইটির ত্রুটি বলতে কয়েকটি বানান বিভ্রাট আর বাক্যের অসংগতি চোখে পড়েছে। এছাড়া বইটির কোনো বিষয় নিয়ে সমালোচনা করার দুঃসাহস আমার নেই। বরং আমি লেখিকার এমন চিন্তা-ভাবনাকে সাধুবাদ জানাই। আল্লাহ লেখিকার লিখায় অঢেল বারাকাহ দিক।
▪️কাদের জন্য বইটি?:
___________________________
আল্লাহ যদি আমাকে সামর্থ্য ও সুযোগ দিতেন তাহলে আমি রাস্তাঘাটে দেখা সকল বৃহন্নলাদের বইটি পড়তে দিতাম। আমি মনে করি, তাদের নিয়ে রচিত বইটি সবার আগে তাদেরই পড়া উচিত। তাদেরও জানা উচিত আল্লাহর বিধান ও নিজেদের অধিকার সম্বন্ধে। এছাড়াও সমাজের সর্বস্তরের মানুষেরও বইটি পড়া উচিত। যাতে তারা তাদের চিন্তা-ভাবনার পরিবর্তন ঘটাতে পারে এবং চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা হাজারো বৃহন্নলাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে পারে। সর্বোপরি, বইটি ছড়িয়ে পড়ুক পৃথিবীর সকল প্রান্তে। একটু একটু করে হলেও বদলে যাক এই কলুষিত সমাজ, পরিবার এবং পৃথিবী।
▪️
বৃহন্নলা
185 BDT250 BDTSave 65 BDT
1
বই : বৃহন্নলা- এক বিবর্ণ স্বপ্নের গল্প
লেখিকা : মোরশেদা কাইয়ুমী
প্রকাশনার : ইজরা পাবলিকেশন্স
বৃহন্নলা! আমার কাছে একেবারে নতুন একটা শব্দ। ক'দিন আগেও আমি জানতাম না বৃহন্নলা মানে কী। জানতে পারি একটা ভিন্ন টপিকের বই পড়ার মাধ্যমে। বৃহন্নলা মানে আমাদের সমাজের বিশেষ মানুষগুলো যাদের আমরা 'হিজড়া' বা 'তৃতীয় লিঙ্গ' বলে সম্বোধন করি। বাস্তব জীবনে যাদের আমরা মানুষের কাতারে ফেলি না। তাদের আমরা মনে করি অপবিত্র এক অভিশাপ! যার দরুন ছোটবেলা থেকেই আমরা তাদের তাড়িয়ে দিই। তারপর তারা পথেঘাটে বড় হয়। তাদের আমরা রাস্তাঘাটে বিশৃঙ্খলা করতে দেখি। বিভিন্ন অমানবিক কাজ করতে দেখি। কিন্তু আমরা কি কখনো তাদের সাথে মানবিক হই? আমরা কি আমাদের মতো তাদেরও আল্লাহর সৃষ্টি বলে মনে করি? আমরা কি তাদের তুচ্ছ- তাচ্ছিল্য করে সমাজ থেকে তাড়িয়ে দিই না? তাদের এই অবস্থার জন্য কি আমাদের মতো সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষগুলোই দায়ী নয়? অথচ আমরা একটিবারও ভাবি না তাদের কথা। লেখিকা মোরশেদা কাইয়ুমীর লেখা "বৃহন্নলা- এক বিবর্ণ স্বপ্নের গল্প" আপনাকে তাদের নিয়ে ভাবতে বাধ্য করবে। বদলে দিবে তাদের নিয়ে আপনার গতানুগতিক সকল চিন্তাভাবনা।
▪️বই কথা:
__________________
"বৃহন্নলা- এক বিবর্ণ স্বপ্নের গল্প" একটি ইসলামিক উপন্যাস। উপন্যাসটি আপনাকে একটি ঝরে পড়া ফুলের নির্মম জীবনের পাঠ দিবে। যেখানে একজন নিষ্পাপ শিশুর শারীরিক ও মানসিক বৈশিষ্ট্য অন্যান্য নারী-পুরুষ থেকে ভিন্ন হওয়ায় অর্থাৎ সে আল্লাহর বিশেষ সৃষ্টি বলে তাকে ছোট থেকেই সমাজের বিভিন্ন মানুষের হেয়, অপমান, হাসি-ঠাট্টা ও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। একটা সময় পর বের করে দেওয়া হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে। বিচ্ছিন্ন করা হয় সমাজ থেকে এমনকি নিজের পরিবার থেকেও। নিজ জন্মদাতা পিতাও তাড়িয়ে দেয় তার আপন সন্তানকে। এরপর শুরু হয় তার জীবনের এক নতুন যাত্রা। রচিত হয় জীবনের প্রতি পদে পদে লাঞ্ছিত, অপমানিত ও নির্যাতিত হওয়ার গল্প। জীবনের এতো ঝড়- ঝাপটার পরও হার না মেনে জীবন যুদ্ধে এগিয়ে যাওয়ার এক অনন্য- অসাধারণ গল্প!
▪️গল্প কথা:
__________________
গল্পটা শুরু হয় টুসিকে দিয়ে। টুসি দূরন্ত ও চাঞ্চল্যময় এক কিশোরী। বয়ঃসন্ধির শুরুতেই টুসির বিয়ে হয় ফরিদের সাথে। কিছুদিন পরেই টুসির কোলজুড়ে জন্ম নেয় সুহান। সুহান- গল্পের এক ভিন্ন চরিত্র। গল্পটা মূলত তাকে ঘিরেই। ধীরে ধীরে বড় হয় সুহান। টুসি আদর করে তাকে জীবন্ত পুতুল বলে ডাকত। কিন্তু বড় হওয়ার সাথে সাথেই সুহানের জীবনে শুরু হয় এক অন্যরকম ঝড়। যে ঝড়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারে না সুহানের মা টুসি এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও। সুহান ছেলে হলেও বড় হওয়ার সাথে সাথে লক্ষ্য করা যায় তার স্বভাব চরিত্র মেয়েলি এবং তার শারীরিক বৈশিষ্ট্যও ধীরে ধীরে মেয়েদের মতো হয়ে যাচ্ছে। শুরু হয় সমাজের মানুষের হাসি-ঠাট্টা, অপমান। নিজের জন্মদাতা পিতার অবহেলা, অনাদর। একসময় সমাজের মানুষের অপমান আর সহ্য করতে না পেরে জন্মদাতা পিতা নিজ সন্তানকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। অকালে ঝরে পড়ে বাবা মায়ের ভালোবাসার ফুল। সেই ফুল হারিয়ে যায় পৃথিবীর হাজারো মানুষের ভিড়ে। কেউ কি নেই এই ফুলকে যত্ন করে কুড়িয়ে নিবে? যে তাকে আশ্রয় দিবে? যে তাকে নিরাপত্তা দিবে? এই সমাজের ঘৃণিত সকল মানুষের আঘাত প্রতিঘাত থেকে তাকে রক্ষা করবে?-- এসকল প্রশ্নেরই উত্তর জানতে পারবেন সম্পূর্ণ বইটি পড়লে।
▪️বাস্তবিকা:
___________________
বাস্তব জীবনে চলাফেরা করতে গিয়ে রাস্তাঘাটে অনেক বৃহন্নলাদের দেখেছি। যেই দৃশ্যটা সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ে সেটা হচ্ছে-- যানবাহন চালক কিংবা দোকানদারদের কাছে বৃহন্নলাদের টাকা চাওয়া। আর তারা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের সাথে বাজে ব্যবহার করা। গালি-গালাজ কিংবা অশ্লীল সব কথাবার্তা বলে একটা বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করা। এছাড়াও আত্নীয়স্বজন অনেকের বিয়েতে এসে মোটা অংকের একটা টাকা দাবি করা এবং সেটা দিতে তারা অপারগ হলে বিশৃঙ্খলা করতেও শুনেছি। পাড়া বা মহল্লায় বৃহন্নলাদের অনেক কুচক্রের সঙ্গে জড়িত থাকতেও দেখেছি। এছাড়া কোনো বৃহন্নলাকেই কোনোদিন ধর্ম পালন করতে দেখিনি। বরং খুব কাছ থেকেই সকল অনৈতিক কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকতে দেখেছি। এসব দেখতে দেখতে আমি মোটামুটি এই নীতিতে বিশ্বাসী ছিলাম যে, বৃহন্নলা মানেই খারাপ। তাদের কাজ হচ্ছে চাঁদাবাজি করা। রাস্তাঘাটে অস্বস্থিকর পরিবেশের সৃষ্টি করা। সকল কুকাজের সঙ্গে জড়িত থাকা। আমার মনে কখনো এই চিন্তা আসেনি যে আসলে তাদের এমনটা হওয়ার পেছনের কারণটা কী? তারাও তো আল্লাহর সৃষ্টি ঠিক আমাদের মতোই। আলহামদুলিল্লাহ বইটি পড়ার পর সেই ভাবনাটা আমি ভাবতে বাধ্য হয়েছি। পরিবর্তন হয়েছে আমার সেই সকল স্বার্থপর চিন্তা-ভাবনার। অন্তরে জেগেছে সেই বিশেষ মানুষগুলোর প্রতি বিশেষ শ্রদ্ধা।
▪️পাঠ প্রতিক্রিয়া:
________________________
অনেক ইন্টারেস্টিং একটি বই! একেবারে এক বসায় পড়ে ফেলার মতো। একদম ভিন্ন টপিকের হওয়ায় বইটি পড়াকালীন অত্যন্ত মনোযোগী পাঠিকা ছিলাম। গল্পের একেকটা প্লট পড়ার সময় পরবর্তী প্লটে কি আছে সেটা জানার জন্য মনের মধ্যে অস্থিরতা কাজ করতো। সবমিলিয়ে এক টানটান উত্তেজনা নিয়ে বইটি শেষ করি। বইটি পড়ার মাধ্যমে বৃহন্নলাদের নিয়ে অনেক তথ্য জানতে পারি। ইসলাম ধর্মে তাদের নিয়ে কি বিধান দেওয়া হয়েছে সেটাও জানতে পারি। গল্পটির সমাজসেবামূলক সংস্থার নামগুলো খুব বেশি সুন্দর ছিলো, যেমন- মায়া কানন, স্বপ্নের আঙিনা।
সম্পূর্ণ গল্পটিই আমার খুব ভালো লেগেছে। গল্পের শেষটা আমাকে ভীষণভাবে কাঁদিয়েছে। আচ্ছা লেখিকা আপা গল্পের শেষটা কি এমন না হলে হতো না!?
▪️আলোচনা ও সমালোচনা:
________________________________
এরকম ভিন্ন টপিকের একটি বই পাঠকমহলে উপহার দেওয়ার জন্য লেখিকা ও প্রকাশনী নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। বইটির মূল ম্যাসেজটি আমাদের বৃহন্নলাদের প্রতি সহনশীল হতে শেখাবে ইনশাআল্লাহ। এছাড়াও বইটির বাহ্যিক বৈশিষ্ট্যগুলোও যেমন প্রচ্ছদ, বাইন্ডিং, ফন্ট সাইজ সবগুলোই পারফেক্ট ছিলো আলহামদুলিল্লাহ।
স্বাভাবিকভাবেই বইটির ত্রুটি বলতে কয়েকটি বানান বিভ্রাট আর বাক্যের অসংগতি চোখে পড়েছে। এছাড়া বইটির কোনো বিষয় নিয়ে সমালোচনা করার দুঃসাহস আমার নেই। বরং আমি লেখিকার এমন চিন্তা-ভাবনাকে সাধুবাদ জানাই। আল্লাহ লেখিকার লিখায় অঢেল বারাকাহ দিক।
▪️কাদের জন্য বইটি?:
___________________________
আল্লাহ যদি আমাকে সামর্থ্য ও সুযোগ দিতেন তাহলে আমি রাস্তাঘাটে দেখা সকল বৃহন্নলাদের বইটি পড়তে দিতাম। আমি মনে করি, তাদের নিয়ে রচিত বইটি সবার আগে তাদেরই পড়া উচিত। তাদেরও জানা উচিত আল্লাহর বিধান ও নিজেদের অধিকার সম্বন্ধে। এছাড়াও সমাজের সর্বস্তরের মানুষেরও বইটি পড়া উচিত। যাতে তারা তাদের চিন্তা-ভাবনার পরিবর্তন ঘটাতে পারে এবং চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা হাজারো বৃহন্নলাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে পারে। সর্বোপরি, বইটি ছড়িয়ে পড়ুক পৃথিবীর সকল প্রান্তে। একটু একটু করে হলেও বদলে যাক এই কলুষিত সমাজ, পরিবার এবং পৃথিবী।
▪️
লেখিকা : মোরশেদা কাইয়ুমী
প্রকাশনার : ইজরা পাবলিকেশন্স
বৃহন্নলা! আমার কাছে একেবারে নতুন একটা শব্দ। ক'দিন আগেও আমি জানতাম না বৃহন্নলা মানে কী। জানতে পারি একটা ভিন্ন টপিকের বই পড়ার মাধ্যমে। বৃহন্নলা মানে আমাদের সমাজের বিশেষ মানুষগুলো যাদের আমরা 'হিজড়া' বা 'তৃতীয় লিঙ্গ' বলে সম্বোধন করি। বাস্তব জীবনে যাদের আমরা মানুষের কাতারে ফেলি না। তাদের আমরা মনে করি অপবিত্র এক অভিশাপ! যার দরুন ছোটবেলা থেকেই আমরা তাদের তাড়িয়ে দিই। তারপর তারা পথেঘাটে বড় হয়। তাদের আমরা রাস্তাঘাটে বিশৃঙ্খলা করতে দেখি। বিভিন্ন অমানবিক কাজ করতে দেখি। কিন্তু আমরা কি কখনো তাদের সাথে মানবিক হই? আমরা কি আমাদের মতো তাদেরও আল্লাহর সৃষ্টি বলে মনে করি? আমরা কি তাদের তুচ্ছ- তাচ্ছিল্য করে সমাজ থেকে তাড়িয়ে দিই না? তাদের এই অবস্থার জন্য কি আমাদের মতো সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষগুলোই দায়ী নয়? অথচ আমরা একটিবারও ভাবি না তাদের কথা। লেখিকা মোরশেদা কাইয়ুমীর লেখা "বৃহন্নলা- এক বিবর্ণ স্বপ্নের গল্প" আপনাকে তাদের নিয়ে ভাবতে বাধ্য করবে। বদলে দিবে তাদের নিয়ে আপনার গতানুগতিক সকল চিন্তাভাবনা।
▪️বই কথা:
__________________
"বৃহন্নলা- এক বিবর্ণ স্বপ্নের গল্প" একটি ইসলামিক উপন্যাস। উপন্যাসটি আপনাকে একটি ঝরে পড়া ফুলের নির্মম জীবনের পাঠ দিবে। যেখানে একজন নিষ্পাপ শিশুর শারীরিক ও মানসিক বৈশিষ্ট্য অন্যান্য নারী-পুরুষ থেকে ভিন্ন হওয়ায় অর্থাৎ সে আল্লাহর বিশেষ সৃষ্টি বলে তাকে ছোট থেকেই সমাজের বিভিন্ন মানুষের হেয়, অপমান, হাসি-ঠাট্টা ও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। একটা সময় পর বের করে দেওয়া হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে। বিচ্ছিন্ন করা হয় সমাজ থেকে এমনকি নিজের পরিবার থেকেও। নিজ জন্মদাতা পিতাও তাড়িয়ে দেয় তার আপন সন্তানকে। এরপর শুরু হয় তার জীবনের এক নতুন যাত্রা। রচিত হয় জীবনের প্রতি পদে পদে লাঞ্ছিত, অপমানিত ও নির্যাতিত হওয়ার গল্প। জীবনের এতো ঝড়- ঝাপটার পরও হার না মেনে জীবন যুদ্ধে এগিয়ে যাওয়ার এক অনন্য- অসাধারণ গল্প!
▪️গল্প কথা:
__________________
গল্পটা শুরু হয় টুসিকে দিয়ে। টুসি দূরন্ত ও চাঞ্চল্যময় এক কিশোরী। বয়ঃসন্ধির শুরুতেই টুসির বিয়ে হয় ফরিদের সাথে। কিছুদিন পরেই টুসির কোলজুড়ে জন্ম নেয় সুহান। সুহান- গল্পের এক ভিন্ন চরিত্র। গল্পটা মূলত তাকে ঘিরেই। ধীরে ধীরে বড় হয় সুহান। টুসি আদর করে তাকে জীবন্ত পুতুল বলে ডাকত। কিন্তু বড় হওয়ার সাথে সাথেই সুহানের জীবনে শুরু হয় এক অন্যরকম ঝড়। যে ঝড়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারে না সুহানের মা টুসি এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও। সুহান ছেলে হলেও বড় হওয়ার সাথে সাথে লক্ষ্য করা যায় তার স্বভাব চরিত্র মেয়েলি এবং তার শারীরিক বৈশিষ্ট্যও ধীরে ধীরে মেয়েদের মতো হয়ে যাচ্ছে। শুরু হয় সমাজের মানুষের হাসি-ঠাট্টা, অপমান। নিজের জন্মদাতা পিতার অবহেলা, অনাদর। একসময় সমাজের মানুষের অপমান আর সহ্য করতে না পেরে জন্মদাতা পিতা নিজ সন্তানকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। অকালে ঝরে পড়ে বাবা মায়ের ভালোবাসার ফুল। সেই ফুল হারিয়ে যায় পৃথিবীর হাজারো মানুষের ভিড়ে। কেউ কি নেই এই ফুলকে যত্ন করে কুড়িয়ে নিবে? যে তাকে আশ্রয় দিবে? যে তাকে নিরাপত্তা দিবে? এই সমাজের ঘৃণিত সকল মানুষের আঘাত প্রতিঘাত থেকে তাকে রক্ষা করবে?-- এসকল প্রশ্নেরই উত্তর জানতে পারবেন সম্পূর্ণ বইটি পড়লে।
▪️বাস্তবিকা:
___________________
বাস্তব জীবনে চলাফেরা করতে গিয়ে রাস্তাঘাটে অনেক বৃহন্নলাদের দেখেছি। যেই দৃশ্যটা সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ে সেটা হচ্ছে-- যানবাহন চালক কিংবা দোকানদারদের কাছে বৃহন্নলাদের টাকা চাওয়া। আর তারা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের সাথে বাজে ব্যবহার করা। গালি-গালাজ কিংবা অশ্লীল সব কথাবার্তা বলে একটা বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করা। এছাড়াও আত্নীয়স্বজন অনেকের বিয়েতে এসে মোটা অংকের একটা টাকা দাবি করা এবং সেটা দিতে তারা অপারগ হলে বিশৃঙ্খলা করতেও শুনেছি। পাড়া বা মহল্লায় বৃহন্নলাদের অনেক কুচক্রের সঙ্গে জড়িত থাকতেও দেখেছি। এছাড়া কোনো বৃহন্নলাকেই কোনোদিন ধর্ম পালন করতে দেখিনি। বরং খুব কাছ থেকেই সকল অনৈতিক কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকতে দেখেছি। এসব দেখতে দেখতে আমি মোটামুটি এই নীতিতে বিশ্বাসী ছিলাম যে, বৃহন্নলা মানেই খারাপ। তাদের কাজ হচ্ছে চাঁদাবাজি করা। রাস্তাঘাটে অস্বস্থিকর পরিবেশের সৃষ্টি করা। সকল কুকাজের সঙ্গে জড়িত থাকা। আমার মনে কখনো এই চিন্তা আসেনি যে আসলে তাদের এমনটা হওয়ার পেছনের কারণটা কী? তারাও তো আল্লাহর সৃষ্টি ঠিক আমাদের মতোই। আলহামদুলিল্লাহ বইটি পড়ার পর সেই ভাবনাটা আমি ভাবতে বাধ্য হয়েছি। পরিবর্তন হয়েছে আমার সেই সকল স্বার্থপর চিন্তা-ভাবনার। অন্তরে জেগেছে সেই বিশেষ মানুষগুলোর প্রতি বিশেষ শ্রদ্ধা।
▪️পাঠ প্রতিক্রিয়া:
________________________
অনেক ইন্টারেস্টিং একটি বই! একেবারে এক বসায় পড়ে ফেলার মতো। একদম ভিন্ন টপিকের হওয়ায় বইটি পড়াকালীন অত্যন্ত মনোযোগী পাঠিকা ছিলাম। গল্পের একেকটা প্লট পড়ার সময় পরবর্তী প্লটে কি আছে সেটা জানার জন্য মনের মধ্যে অস্থিরতা কাজ করতো। সবমিলিয়ে এক টানটান উত্তেজনা নিয়ে বইটি শেষ করি। বইটি পড়ার মাধ্যমে বৃহন্নলাদের নিয়ে অনেক তথ্য জানতে পারি। ইসলাম ধর্মে তাদের নিয়ে কি বিধান দেওয়া হয়েছে সেটাও জানতে পারি। গল্পটির সমাজসেবামূলক সংস্থার নামগুলো খুব বেশি সুন্দর ছিলো, যেমন- মায়া কানন, স্বপ্নের আঙিনা।
সম্পূর্ণ গল্পটিই আমার খুব ভালো লেগেছে। গল্পের শেষটা আমাকে ভীষণভাবে কাঁদিয়েছে। আচ্ছা লেখিকা আপা গল্পের শেষটা কি এমন না হলে হতো না!?
▪️আলোচনা ও সমালোচনা:
________________________________
এরকম ভিন্ন টপিকের একটি বই পাঠকমহলে উপহার দেওয়ার জন্য লেখিকা ও প্রকাশনী নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। বইটির মূল ম্যাসেজটি আমাদের বৃহন্নলাদের প্রতি সহনশীল হতে শেখাবে ইনশাআল্লাহ। এছাড়াও বইটির বাহ্যিক বৈশিষ্ট্যগুলোও যেমন প্রচ্ছদ, বাইন্ডিং, ফন্ট সাইজ সবগুলোই পারফেক্ট ছিলো আলহামদুলিল্লাহ।
স্বাভাবিকভাবেই বইটির ত্রুটি বলতে কয়েকটি বানান বিভ্রাট আর বাক্যের অসংগতি চোখে পড়েছে। এছাড়া বইটির কোনো বিষয় নিয়ে সমালোচনা করার দুঃসাহস আমার নেই। বরং আমি লেখিকার এমন চিন্তা-ভাবনাকে সাধুবাদ জানাই। আল্লাহ লেখিকার লিখায় অঢেল বারাকাহ দিক।
▪️কাদের জন্য বইটি?:
___________________________
আল্লাহ যদি আমাকে সামর্থ্য ও সুযোগ দিতেন তাহলে আমি রাস্তাঘাটে দেখা সকল বৃহন্নলাদের বইটি পড়তে দিতাম। আমি মনে করি, তাদের নিয়ে রচিত বইটি সবার আগে তাদেরই পড়া উচিত। তাদেরও জানা উচিত আল্লাহর বিধান ও নিজেদের অধিকার সম্বন্ধে। এছাড়াও সমাজের সর্বস্তরের মানুষেরও বইটি পড়া উচিত। যাতে তারা তাদের চিন্তা-ভাবনার পরিবর্তন ঘটাতে পারে এবং চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা হাজারো বৃহন্নলাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে পারে। সর্বোপরি, বইটি ছড়িয়ে পড়ুক পৃথিবীর সকল প্রান্তে। একটু একটু করে হলেও বদলে যাক এই কলুষিত সমাজ, পরিবার এবং পৃথিবী।
▪️