An Najahah Shop
EN

পুন্যবতী

An Najahah Shop

পুন্যবতী
  • পুন্যবতী_img_0

পুন্যবতী

170 BDT245 BDTSave 75 BDT
sold_units 1
1

বই – পুণ্যবতী – মহীয়সী নারীর জীবনের গল্প
লেখক – আরিফুল ইসলাম
সম্পাদনা – মাওলানা হাসান শুয়াইব



আরবের শ্রেষ্ঠ মহিলা কবি হিসেবে খ্যাত ছিলেন খানসা বিনতে আমর ইবনু শারীদ। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদিনায় হিজরত করলে খানসা তাঁর কাছে গিয়ে ইসলাম গ্রহণ করেন।
`

একবার তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করে শোনান। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার কবিতা শুনে মুগ্ধ হন এবং আরো শোনার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
`
খানসা রাদিয়াল্লাহু আনহা তার আপন ভাই মুআবিয়া ও তার সৎভাই সাখরকে অনেক ভালোবাসতেন। ভাই-বোনের মধ্যে বেশ সুম্পর্ক ছিল। আরবের বিখ্যাত আসাদ গোত্রের সাথে তার গোত্রের যুদ্ধ হলে তার এই দুই ভাই নিহত হয়। তারা দুজন ইসলাম গ্রহণ করেনি।
`
ভাইদেরকে হারিয়ে খানসা রাদিয়াল্লাহু আনহা ব্যাকুল হয়ে পড়েছিলেন। তিনি ভাইদের শোকে, বিশেষ করে সাখরের শোকে কবিতা রচনা করেছেন। মাথায় বেঁধেছিলেন কালো পট্টি। ইসলামী যুগ আসার আগের কথা। খানসা রাদিয়াল্লাহু আনহার বিয়ে হয় বেহিসাবি খরচ করে এমন একজনের সাথে। তিনি ইচ্ছেমতো টাকা ওড়াতেন। এক পর্যায়ে নিঃস্ব হয়ে যান।
`
স্বামীর এই করুণ অবস্থা দেখে খানসা রাদিয়াল্লাহু আনহা তার ভাই সাখরকে অবহিত করেন। সাখর তখন তার সম্পদ দুইভাগ করে বোনকে একভাগ দিয়ে দেন। খানসার বেহিসাবী স্বামী সেই সম্পদও অল্পদিনে শেষ করে ফেলেন। আবারো খানসা রাদিয়াল্লাহু আনহার ভাইয়ের কাছে যান। আবারো সাখর তার সম্পদ দুই ভাগ করে এক ভাগ বোনকে দেন।
`
যে ভাই তার জীবনের এমন কঠিন সময়ে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন, তার প্রতি তো এমনিতেই টান অনুভব করবেন। ফলশ্রুতিতে ভাইয়ের শোক ভুলতে তার বেশ কষ্ট হয়েছে। ইসলাম আসার পর আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহা খানসা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে এভাবে শোক পালন করতে নিষেধ করেন।
`
ভাইয়ের শোকে তিনি যেসব শোকগাথা কবিতা লিখেন, সেগুলো আরবি সাহিত্যের সেরা মর্সিয়া হিসেবে বিবেচিত হয়।
`
ইসলাম গ্রহণের পরও খানসা রাদিয়াল্লাহু আনহা ভাইয়ের জন্য তার কান্না অব্যাহত রেখেছিলেন। একবার খলীফা উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু তাকে কান্না করতে দেখে জিজ্ঞেস করলেন, “কেন কাঁদছো?” তিনি জানালেন, তার ভাইয়ের জন্য। তাকে বলা হলো, তারা তো জাহান্নামে যাবে। এটা শুনে তিনি বললেন,

‘আগে আমি কাঁদতাম তাদের রক্তের বদলা নেবার জন্য। এখন আমি কাঁদি এই কারণে যে, তারা জাহান্নামে যাবে।’
`
কাদেসিয়ার যুদ্ধে খানসা রাদিয়াল্লাহু আনহা তার চার ছেলেকে সাথে নিয়ে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। যুদ্ধের আগের রাতে তিনি ছেলেদেরকে একত্র করে এক জ্বালাময়ী ভাষণ দেন এবং তাদেরকে শাহাদাতের জন্য উৎসাহিত করেন।
`
সকালে তার চার ছেলে কবিতা আবৃত্তি করতে করতে যুদ্ধে অংশ নিয়ে চারজনই শহীদ হন। খানসা রাদিয়াল্লাহু আনহা চার শহীদের মা হবার সৌভাগ্য অর্জন করেন। যে খানসা রাদিয়াল্লাহু আনহা ভাইয়ের মৃত্যুশোকে মাথায় কালো পট্টি বেঁধেছিলেন একসময়, সেই খানসা রাদিয়াল্লাহু আনহা এবার পুত্রশোকে তেমন প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে শুধু বলেন,

‘সকল প্রশংসা আল্লাহর, যিনি তাদেরকে শাহাদাত দান করে আমাকে সম্মানিত করেছেন। আর আমি আমার রবের নিকট আশা করি যে, তিনি আখিরাতে তার রহমতের অনন্ত ছায়াতলে আমাদেরকে একত্র করবেন।’
`
আল্লামা ইবনু আছির রহিমাহুল্লাহ বলেন,

“আরবি কাব্যশাস্ত্রের পণ্ডিতরা একমত যে, খানসা রাদিয়াল্লাহু আনহার পূর্বে ও পরে তার চেয়ে বড় কোনো মহিলা কবির জন্ম হয়নি।”
`
`